আসানসোল: কয়েকদিন আগেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অভিযোগ করেছিলেন যে ডিভিসি-র জন্য ২০ লক্ষ মানুষ জল পাচ্ছেন না। এবার সেই একই অভিযোগ উঠল আসানসোলেও। জলই পাওয়া যাচ্ছে না। বারবার আবেদন জানিয়েও কোনও লাভ হয়নি। রীতিমতো উদ্বেগ প্রকাশ করছে পুরনিগমওষ
পুরনিগমের আবেদনে জল ছাড়ার পরিমাণ কিছুটা বাড়িয়েছিল ডিভিসি (দামোদর ভ্যালি কর্পোরেশন)। কিন্তু দু’দিন জল ছাড়ার পরই জল ছাড়া একেবারেই বন্ধ করে দিয়েছে ডিভিসি। জলবিদ্যুৎ তৈরি করতে যেটুকু জল প্রয়োজন সেটুকুই ছাড়া হচ্ছে। যার পরিমাণ দৈনিক গড়ে ১ হাজার একর ফিট অর্থাৎ ৫০০ কিউসেক। সেই
জল ছাড়ার পরিমান ডিভিসি কমিয়ে দিতেই বেড়েছে উদ্বেগ।
গত কয়েকদিনে ৭০০ কিউসেক হারে জল ছাড়ছিল ডিভিসি। পুরনিগম আবেদন করার পর ২ হাজার কিউসেক হারে জল ছাড়া হয় মাত্র তিনদিন। মেয়র বিধান উপাধ্যায় বলেন, “এতেই আমরা উদ্বিগ্ন। আগামিদিনে তীব্র পানীয় জলের সঙ্কটের আশঙ্কা করছি আমরা।”
দুর্গাপুজো ও ছটপুজোর সময় দামোদর শুকিয়ে কাঠ হয়ে গিয়েছিল। জল ছাড়ার জন্য বার বার ডিভিসি-কে আবেদন করেও বিশেষ লাভ হয়নি। এবার শুরু হয়েছে পানীয় জলের সঙ্কট। অন্যদিকে জলের অভাবের কথা জানিয়েছেন ইসকো-র শ্রমিক প্রতিনিধিরাও। দামোদর ভ্যালি রিজার্ভার রেগুলেশন কমিটির কাছে আবেদন করা হয়েছিল দামোদর নদীতে অতিরিক্ত জল ছাড়ার জন্য। ইসকো আবাসনেও মিলছে না পানীয় জল।
পুরসভার পক্ষ থেকে ডিভিসি-কে দেওয়া হয়েছে একাধিক চিঠি। ডিভিসি-কে জল ছাড়ার আবেদন জানিয়েছে পুরসভা। চিঠিতে লেখা হয় নদীতে পর্যাপ্ত জল না থাকার জেরে জল প্রকল্পগুলি ভীষণভাবে প্রভাবিত। ইস্পাত শহরকেও পুরনিগম থেকে ট্যাঙ্কারে করে জল সরবরাহ করতে হচ্ছে। মূলত দামোদর নদী থেকে একটি ফিডার ক্যানেল গিয়েছে কারখানার অভিমুখ। যেখান থেকে পানীয় জল বিভিন্ন জায়গায় সরবরাহ করা হয় যাকে ইসকো চ্যানেলও বলা হয়। সেখানে জল ঢুকছে না। আসানসোল পুরনিগমের কালাঝরিয়া, ডিহিকা জল প্রকল্প ব্যাপকভাবে প্রভাব পড়েছে।
অন্যদিকে ডিভিসি সূত্রে দাবি তাদের কাছে ইসকো ও পুরনিগমের চিঠি এসেছে। কিন্তু মাইথন পাঞ্চেত ড্যামের জলাধারে পর্যাপ্ত জল নেই। আগামী মার্চ থেকে জুন মাস পর্যন্ত এই জলকে ধরে রাখতে না পারলে ব্যাপক জল সঙ্কট তৈরি হবে।
মেয়র বিধান উপাধ্যায়ের অভিযোগ, প্রবল বৃষ্টিতে বন্যার সময় বাড়তি জল ছেড়ে বানভাসি করা হচ্ছে রাজ্যকে। আবার যখন প্রয়োজন তখন পানীয় জল না ছেড়ে ডিভিসি নতুন সঙ্কট তৈরি করছে। বিজেপি বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পাল বলেন, ‘ডিভিসিকে দোষারোপ করে লাভ নেই। রাজ্য সরকার আগে নদী সংস্কার করুক।’