আসানসোল: বুধবার ভোর ৫টা থেকে আয়কর তল্লাশি শুরু হয়েছে আসানসোলের একাধিক ব্যবসায়ীর বাড়িতে। রাতে সোহরাব আলির বাড়ি থেকে আয়কর আধিকারিকরা বেরিয়ে গেলেও প্রায় ৩০ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে তল্লাশি চলছে আরও দুই ব্যবসায়ীর বাড়িতে। ইমতিয়াজ আহমেদ ও মহেন্দ্র শর্মার বাড়িতে আয়কর হানা অব্যাহত। সোহারাব আলি তৃণমূলের প্রাক্তন বিধায়ক। লোহার স্ক্র্যাপের বেআইনি ব্যবসায় নাম জড়িয়েছিল তাঁর। পরবর্তীতে প্রোমোটারি। এলাকায় তাঁর প্রতিপত্তির কথা অনেকেরই জানা। বাকি দুই ব্যবসায়ীর প্রভাবও নেহাত কম নয়।
ইমতিয়াজ আহমেদ খান
বুধবার ভোর থেকে এই ব্যবসায়ীর বাড়িতে তল্লাশি চালাচ্ছেন আয়কর দফতরের আধিকারিকরা। বার্নপুর এলাকায় একডাকেই ইমতিয়াজকে চেনেন সবাই। বাবার নাম ফরিদ আলম। একসময় বার্নপুরের ইসকো (IISCO) -র আধিকারিকদের গাড়ি চালাতেন বাবা ফরিদ। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, বার্নপুরের কাছে ধরমপুর এলাকায় লোহার ছাঁটের কারবারে হাত পাকান ইমতিয়াজ। তিনি এখন ঠিকাদার এবং প্রোমোটার। তাঁর প্রভাব নাকি এতটাই বেশি যে ইসকো-র কারখানার ঠিকাদারি সংক্রান্ত প্রক্রিয়া একচুলও এগোতে পারে না ইমতিয়াজের অঙ্গুলিহেলন ছাড়া।
ইমতিয়াজের শাসক দল ঘনিষ্ঠতার কথা জানেন অনেকেই। সাধারণ মানুষ তাঁকে চেনেন ‘ইমতিয়াজ বস’ নামে। ঠিকাদারি, প্রোমোটারি, লোহার ব্যবসার পাশাপাশি এলাকার শপিং মলের মালিক ইমতিয়াজ। বার্নপুরের ধরমপুরে রয়েছে তাঁর বিশাল রাজপ্রসাদের মতো বাড়ি। নতুন কেউ ঢুকতে গেলে ইমতিয়াজ বস-এর অনুমতি লাগে বলেই শোনা যায়।
মহেন্দ্র শর্মা
আয়কর নজরে থাকা মহেন্দ্র শর্মা শুধুমাত্র একজন বড় ব্যবসায়ী নন, রাজনৈতিক মহলে তাঁর ওঠাবসার কথা জানেন এলাকার বাসিন্দারা। বালির ব্যবসা থেকে হাত পাকানো একজন ব্যবসায়ী মহেন্দ্র। বাম আমলেই তাঁর উত্তরণ। আর এখন তৃণমূল ঘনিষ্ঠতার কথা শোনা যায়। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, তৃণমূল সাংসদ শত্রুঘ্ন সিনহার সঙ্গে মাঝে মধ্যে দেখা যায় তাঁকে। আবার ২০২১ সালে বিধানসভা ভোটের সময় বিজেপি সাসদ শাহনাজ হোসেনের সঙ্গেও দেখা গিয়েছিল মহেন্দ্রকে।
বালির ব্যবসা থেকে উত্থান শুরু হলেও বর্তমানে গুজরাটে রয়েছে তাঁর নুনের (অঙ্কুর নুন) কারখানা। ঝাড়খণ্ডে রয়েছে মদ ও রাসায়নিকের ফ্যাক্টরি। কিছুদিনের মধ্যেই বাঁকুড়ায় ইথানল ফ্যাক্টরি খুলতে চলেছেন তিনি, পাশাপাশি হাই রাইস বিল্ডিং-এর প্রোমোটারির সঙ্গেও যুক্ত মহেন্দ্র।
সূত্রের খবর, তল্লাশি চালিয়ে বেশ কিছু ব্যবসা কেন্দ্রিক কাগজপত্র, ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের নথি পেয়েছেন আধিকারিকরা। ইমতিয়াজ আহমেদ খানকে তল্লাশির বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে, তিনি কোনও উত্তর দেননি।