আসানসোল: সম্প্রতি কম্বল বিতরণ কাণ্ডে গ্রেফতার হন বিজেপি নেতা জিতেন্দ্র তিওয়ারি (Jitendra Tiwari)। রাজ্য় পুলিশের হাতে গ্রেফতার হন তিনি। সোমবার সেই গ্রেফতারিতে হস্তক্ষেপ করে দেশের শীর্ষ আদালত। জিতেন্দ্র সহ তিনজনের গ্রেফতারিতে স্থগিতাদেশ দেয় সুপ্রিম কোর্ট। মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টের গ্রেফতারির স্থগিতাদেশ সংক্রান্ত অর্ডার কপি আসানসোল সিজিএম আদালতে জমা করে বিজেপির লিগালসেল। বিজেপি নেতার জামিনের আবেদন করা হয়। টানটান উত্তেজনা ভরা এজলাসে এ দিনের মতো শেষ হয় জিতেন্দ্র মামলার শুনানি। তবে রায়দান না হলেও থামিয়ে রাখা যায়নি আজকের সওয়ালে বাদী-বিবাদী পক্ষের আইনজীবীদের। এক নজরে দেখে নিন কে কী বললেন-
শেখর কুণ্ডু (জিতেন্দ্র তিওয়ারির আইনজীবী): এই ধরনের দুর্ঘটনা অত্যন্ত মর্মান্তিক। তার জন্য আমরা দুঃখিত। কিন্তু দেশে এই ঘটনা প্রথম নয়। কিন্তু যেভাবে একজন প্রাক্তন মেয়র, প্রাক্তন বিধায়ক সর্বোপরি আসানসোল আদালতের আইনজীবী। তাঁকে যেভাবে আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ অতি সক্রিয়ভাবে যমুনা এক্সপ্রেসওয়ে থেকে ঘাড় ধরে নিয়ে এল তা অনৈতিক।
এই প্রসঙ্গ টানতে গিয়ে নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বোস ও দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাসের কথাও উল্লেখ করেন আইনজীবী শেখর কুন্ডু।
শেখর কুণ্ডু (জিতেন্দ্র তিওয়ারির আইনজীবী): দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাস ও নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসু মেয়র ছিলেন। ফলত এই রকম একজন পদ মর্যাদার মানুষকে যে কায়দায় গ্রেফতার করা হয়েছে তা রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত। এই ব্যক্তি আগে তৃণমূল করতেন। এখন বিজেপি করেন। তাই প্রতিহিংসার রাজনীতি করতেই অতি সক্রিয়তা।
শেখর কুণ্ডু (জিতেন্দ্র তিওয়ারির আইনজীবী): কয়েকমাস আগে এই রাজ্যে দই চিড়ে উৎসব হয়। সেখানে ৭ জন মানুষ পদপিষ্ট হয়ে মারা যান। সম্প্রতি বিখ্যাত গায়ক কে কে অনুষ্ঠানে আসন সংখ্যা কম থাকা সত্ত্বেও প্রচুর মানুষকে অনুষ্ঠানে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। বলা যায় শ্বাসকষ্ট হয়েছে গায়কের মৃত্যু হয়। এই দু’টি ঘটনাতেই রাজ্য পুলিশের এখনও পর্যন্ত সক্রিয়তা দেখা যায়নি। বা কেউ গ্রেফতার হয়নি। এমনকী বিচারপতি মান্থার বাড়ির সামনে পোস্টার কাণ্ডেও পুলিশ কাউকে গ্রেফতার করেনি।
অভিজিৎ ঘটক (বিজেপি লিগ্যাল সেলের আইনজীবী): পুলিশ ‘ওভার অ্যাকটিং করেছে’। ট্রানজিট রিমান্ড ছাড়া নিয়ে এসেছেন। এখনও পর্যন্ত এই কেসে কোনও প্রমাণ নষ্ট হয়নি। কিন্তু এইভাবে জিতেন্দ্র তিওয়ারিকে গ্রেফতার করা উচিৎ হয়নি। সব চেয়ে বড় কথা অভিযুক্ত নিজেই দু’দিনের পুলিশি হেফাজত চেয়েছেন
সোমনাথ চট্টোরাজ (সরকার পক্ষের আইনজীবী): গতকাল (সোমবার সারাদিন ধরে সাজানো খবর (ফেক নিউজ) দেখানো হয়েছে। কিছু মিডিয়া জিতেন্দ্র তিওয়ারির পক্ষে অতি সক্রিয় হয়ে উঠেছে। এই সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য-প্রমাণ বুধবার জমা দেওয়া হবে।
এই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে বৃহস্পতিবার। আগামী ২৯ মার্চ অবধি পুলিশ হেফাজতেই থাকবেন জিতেন্দ্র তিওয়ারি।