দুর্গাপুর: নির্বাচনে লড়ার টিকিট নিয়ে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব অব্যাহত বিজেপি (BJP)তে। এবার দুর্গাপুর পশ্চিম বিধানসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী (BJP Candidate) লক্ষণ ঘোড়ুইয়ের বিরোধিতা করে নির্দল প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিলেন মহিলা মোর্চার রাজ্য নেত্রী চন্দ্রমল্লিকা বন্দ্যোপাধ্যায়।
শুধু মনোনয়ন দিয়েই ক্ষান্ত হননি বিজেপি নেত্রী। লক্ষণের বিরুদ্ধে কেন তিনি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন তার কারণও দর্শান তিনি। একে রীতিমতো ধর্মযুদ্ধ বলে অবহিত করেছেন বিজেপি নেত্রী। দুর্নীতি সহ একাধিক অভিযোগে লক্ষণকে বিদ্ধ করে চন্দ্রমল্লিকা লিখেছেন, ‘আমি বিজেপি ও সঙ্ঘের আদর্শের প্রতি সমর্পিত একজন সৈনিক।’ কিন্তু তা সত্ত্বেও দলের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধাচরণ করতে হল তাঁকে। কেন দুর্গাপুর পশ্চিম বিধানসভা থেকে নির্দল প্রার্থী হিসাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, তা নিয়ে কর্মীদের উদ্দেশে তাঁর বার্তা, ‘লক্ষণ ঘোড়ুই একজন চরিত্রহীন, লম্পট ও আর্থিক দুর্নীতিতে আকন্ঠ নিমজ্জিত ব্যক্তি।’
বিজেপি নেত্রীর সরাসরি অভিযোগ, দুর্গাপুর পশ্চিম বিধানসভা কেন্দ্র থেকে বিজেপির আসানসোল জেলা (সাংগঠনিক) সভাপতি লক্ষণ ঘোড়ুই-কে প্রার্থী করার সিদ্ধান্ত নেওয়ায় কর্মীরা ক্ষুণ্ণ হয়েছেন। তৃণমূলের সঙ্গে আপসহীন লড়াই করে যারা বিজেপিকে প্রতিষ্ঠা করেছেন, একাধিক মামলার মুখোমুখি হয়েছেন এমনকি হাজতবাস পর্যন্ত করেছেন তাঁদের সরিয়ে লক্ষণকে ভোটের টিকিট দেওয়া ঠিক হয়নি বলে মনে করেন তিনি। পাশাপাশি কাঁকসা মণ্ডলের বিজেপি বুথ সভাপতির নাবালিকা কন্যাকে ধর্ষণ কাণ্ডেও ঘোড়ুই অপরাধীদের আড়াল করেছেন বলে বিস্ফোরক অভিযোগ করেছেন চন্দ্রমল্লিকা। এছাড়া এক বিজেপি নেতাকে নীল ছবির ব্যবসায় সাহায্য করেন বলেও অভিযোগ বিজেপি নেত্রীর।
তাঁর কথায়, “ইচ্ছাকৃতভাবে বিজেপির পুরনো নিষ্ঠাবান কর্মীদের দল থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে বা সরে যেতে বাধ্য করা হয়েছে। কারণ, এই নিষ্ঠাবান কর্মীরা অসময়ে হৃদয় দিয়ে বিজেপি করে এসেছে, তারা থাকলে লক্ষণ ঘোড়ুই তার অনৈতিক কাজকর্ম কখনই নিষ্কন্টকভাবে চালিয়ে যেতে পারবে না।” তিনি আরও লেখেন, “আমি আত্মস্থ করেছি সবার আগে দেশ, তারপর দল ও সবশেষে ব্যক্তি। আমি বিজেপির আদর্শের প্রতি সমর্পিত কর্মী ও সমমনস্ক পারিবারিক সংগঠনের কার্যকর্তাদের ঐকান্তিক ইচ্ছাকে মর্যাদা দিয়ে লক্ষণ ঘোড়ুই এর বিরুদ্ধে দুর্গাপুর পশ্চিম বিধানসভা কেন্দ্র থেকে নির্দল প্রার্থী হিসাবে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে অবতীর্ণ হয়েছি। এটা ধর্মযুদ্ধ, ফলাফলের পরোয়া করি না।
এদিকে বিজেপি নেত্রীর এই চিঠি ও নির্দল হিসেবে তাঁর বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার প্রেক্ষিতে কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি বিজেপি প্রার্থীর। অন্যদিকে দুর্গাপুর পশ্চিম বিধানসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী বিশ্বনাথ পারিয়াল এই ঘটনাকে বিজেপির আভ্যন্তরীণ বিষয় বলে মন্তব্য করলেও চন্দ্রমল্লিকার বক্তব্যের সঙ্গে সহমত পোষণ করেছেন।