তৃণমূল বিধায়কের বিরুদ্ধে খুনের চেষ্টার অভিযোগে এফআইআর দলের যুব সভাপতির! গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব তীব্র

তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে উত্তাল মালদহ, একে অপরের বিরুদ্ধে থানায় এফআইআর করছেন জেলা শীর্ষ নেতৃত্ব

তৃণমূল বিধায়কের বিরুদ্ধে খুনের চেষ্টার অভিযোগে এফআইআর দলের যুব সভাপতির! গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব তীব্র
নিজস্ব চিত্র
Follow Us:
| Updated on: Feb 17, 2021 | 2:51 PM

মালদহ: একুশের ভোটেও কি খালি হাতে ফেরাবে মালদহ? সপ্তাহ খানেক আগে জেলার জনসভা থেকে মালদহবাসীর এমনই আবেদন করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। একুশের ভোটে সব নেতাকর্মিকে এককাট্টা হয়ে লড়তে বলেছিলেন। কিন্তু এর মধ্যেই গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে জর্জরিত মালদহ তৃণমূল। খোদ তৃণমূল বিধায়ক নীহাররঞ্জন ঘোষের (Nihar Ranjan Ghosh) বিরুদ্ধে খুনের চেষ্টা ও ষড়যন্ত্রের অভিযোগে থানায় অভিযোগ দায়ের করলেন জেলা যুব তৃণমূল সভাপতি প্রসেনজিৎ দাস (Prasenjit Das)। অভিযোগ, বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী ও মুকুল রায়ের সঙ্গে তলায় তলায় যোগাযোগ রয়েছে ইংরেজবাজার তৃণমূল বিধায়কের।

সোমবার রাতে ইংরেজবাজারের তৃণমূল বিধায়কের বাড়ি ভাঙচুর করা হয়। এই ঘটনায় তিনি তৃণমূলের চেয়ারম্যান তথা প্রাক্তন মন্ত্রী কৃষ্ণেন্দু নারায়ণ চৌধুরি ও জেলা যুব তৃণমূল সভাপতি প্রসেনজিৎ দাসের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছিলেন তিনি। এবার নীহারের বিরুদ্ধে পাল্টা প্রাণে মারার চেষ্টা, ষড়যন্ত্র করার অভিযোগে ইংরেজবাজার থানায় এফআইআর দায়ের করলেন প্রসেনজিৎ। শুধু তাই নয়, প্রসেনজিতের দাবি, যেহেতু তিনি জেলা যুব তৃণমূল সভাপতি এবং বিভিন্ন জায়গায় সভা করতে যান, সেখানেও তাঁর উপর হামলা হতে পারে। তাই মালদহের সব থানায় নীহাররঞ্জনের বিরুদ্ধে এফআইআর করবেন বলে জানান তিনি।

সোমবার সিসিটিভি ফুটেজ সামনে এনে ইংরেজবাজার থানায় কৃষ্ণেন্দু নারায়ণ এবং প্রসেনজিৎ দাসের বিরুদ্ধে দুষ্কৃতীদের দিয়ে হামলা চালানোর অভিযোগ করেন নীহার। এদিন তাঁর বিরুদ্ধে পাল্টা খুনের চক্রান্ত করার অভিযোগ নিয়ে একটি সিসিটিভি ফুটেজ প্রকাশ্যে আনেন প্রসেনজিৎ। সেই ভিডিও ফুটেজ সামনে এনে তাঁর দাবি, পুলিশের সামনেই বাড়িতে ঢুকে হামলা চালিয়ে খুন করার হুমকি দিচ্ছেন নীহাররঞ্জন ঘোষ!

একইসঙ্গে কৃষ্ণেন্দু নারায়ণ চৌধুরীরও দাবি, নীহাররঞ্জন আদতে বিজেপির সঙ্গে যোগসাজশ করে এইসব ষড়যন্ত্র করছেন। তিনি নিয়মিত ভাবে বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী ও মুকুল রায়ের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন। তাঁর আরও দাবি, তিনি জেলা তৃণমূলের চেয়ারম্যান হিসেবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জনসভায় যে ভূমিকা পালন করেছিলেন, যেভাবে মানুষের ঢল নামিয়েছিলেন তা দেখে ঈর্ষান্বিত নীহার। তাই দলের কাছে তাঁদেরকে অপদস্ত করতে এই হামলার ঘটনা সাজিয়েছেন নীহাররঞ্জন নিজেই। কৃষ্ণেন্দুর আরও দাবি, নীহাররঞ্জন ঘোষ তৃণমূলের ‘পোষ্যপুত্র’ আর তিনি ‘নিজের ছেলে’। তাই নীহার নিজের স্বার্থে দলকে ব্যবহার করতে পারেন কিন্তু তিনি পারবেন না।

আরও পড়ুন: ধর্মীয় শোভাযাত্রায় তৃণমূল নেতা, উঠল জয় শ্রীরাম ধ্বনি

জেলায় প্রকট হচ্ছে শাসকদলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। আর মালদহ জেলা বরাবরই অধরা তৃণমূলের কাছে। ২০১৬ সালে বিধানসভা ভোটে তৃণমূলের ঝুলি শূন্য ছিল এই জেলায়। পরে সিপিএমের দীপালি বিশ্বাস, কংগ্রেসের সাবিনা ইয়াসমিন ও নির্দল নীহার ঘোষরা তৃণমূলে শামিল হন। কিন্তু গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের রোগ সারেনি মালদহে। ওয়াকিবহাল মহল বলেন, আগে কৃষ্ণেন্দু নারায়ণ বনাম সাবিত্রী মিত্রর ঝামেলায় উত্তপ্ত থাকত মালদহ, এখন কয়েকটি চরিত্র বদল হলেও চিত্র সেই একই আছে।