বর্ধমান: লাশেও ‘দুর্নীতির দুর্গন্ধ’। দানের দেহও পাচারের অভিযোগ। TV9 বাংলা বুধবারই এই প্রতিবেদনটি প্রকাশ করেছে। তার এক দিনের মধ্যেই বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভয়ঙ্কর কাণ্ড। অ্যানাটমি বিভাগের মৃতদেহ রাখার ঘর থেকে তিনটি দেহ পাচারের চেষ্টার অভিযোগ। কিন্তু পাচারের আগেই পর্দাফাঁস। বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ থেকে মৃতদেহ পাচার করতে গিয়ে হাতেনাতে পাকড়াও হলেন মৃতদেহ বহনকারী গাড়ির চালক-সহ ৭ জন। ঘটনায় জড়িত সন্দেহে আটক করা হয়েছে মেডিক্যাল কলেজের চার কর্মীকেও।
বুধবার সাতসকালে মেডিক্যাল কলেজের ব্যস্ততা তখনও বাড়েনি। হাসপাতালের এক কর্মী দেখেন, অ্যানাটমি বিভাগের মৃতদেহ রাখার ঘর থেকে তিনটি দেহ সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। তা দেখে তাঁর সন্দেহ হয়। উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানান। তৎপর হয়ে হাসপাতালের কর্মীরা। ততক্ষণে তিনটি দেহ মৃতদেহ বহনকারী গাড়িতে তোলাও হয়ে যায়। নিরাপত্তা কর্মীদের তৎপরতায় তিনটি গাড়িটি হাতেনাতে ধরা পড়ে যায়।
হাসপাতালের তরফ থেকে বর্ধমান থানায় খবর দেওয়া হয়। পুলিশের উচ্চ পদস্থ কর্তারা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে যান। ঘটনায় জড়িত সন্দেহে মেডিক্যাল কলেজের চার কর্মী-সহ মৃতদেহ বহনকারী ৩ জনকে আটক করা হয়েছে।
বর্ধমান মেডিকেল কলেজের প্রিন্সিপাল কৌস্তুভ নায়েকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, “মৃতদেহ চুরি হচ্ছিল। আমরা পুলিশকে জানিয়েছি।” এই বিষয়ে ডিএসপি ট্রাফিক(২) রাকেশ চৌধুরীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, “এখনি কিছু বলা সম্ভব নয়। জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।”
স্বাস্থ্য় ভবনের অক্টোবরের একটি নির্দেশিকা ঘিরে চরম বিতর্ক তৈরি হয়। এসএসকেএম, এনআরএস, কলকাতা মেডিক্যাল কলেজকে মণিপুরের একটি মেডিক্যাল কলেজকে ২০টি দেহ দানের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তাতেই সন্ধিহান অ্যানাটমি বিভাগের বিশেষজ্ঞরা। কারণ তাঁদের মতে একটি শিক্ষাবর্ষে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর বর্ষের চিকিৎসক পড়ুয়াদের শেখানোর জন্য কোনও মেডিক্যাল কলেজে ৬টি দেহই যথেষ্ট। আর সেখানেই একটি মেডিক্যাল কলেজকেই ২০টি দেহ দেওয়ার নির্দেশ কেন? তার মধ্যেই বর্ধমানের এই খবর প্রকাশ্যে আসতে শোরগোল পড়ে গিয়েছে।