বর্ধমান: সরকারি হাসপাতালের বিরুদ্ধে উঠল গুরুতর অভিযোগ। জীবিত রোগীকে মৃত বলে ফিরিয়ে দিলেন চিকিৎসক? পূর্ব বর্ধমানের ভাতার হাসপাতালের বিরুদ্ধে উঠেছে এমনই অভিযোগ। পরিবারের দাবি, ৩৫ বছরের ওই যুবকের শরীরে তখনও প্রাণ ছিল। অথচ হাসপাতাল তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করে দিয়েছিল। পরিবারের দাবি, ‘মৃতদেহ’ বাড়ি ফেরানোর পর দেখা যায় নড়ে ওঠেন ওই যুবক। একটু জলও খান তিনি। পরে ফের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার সময় মৃত্যু হয় তাঁর। কীভাবে চিকিৎসক ওই যুবককে মৃত বলে উল্লেখ করলেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন পরিবারের বাসিন্দারা।
সোমবার হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন ওই যুবক। তড়িঘড়ি তাঁকে ভাতার হাসপাতালে নিয়ে যান পরিবারের লোকজন। হাসপাতালের চিকিৎসকেরা ওই যুবককে ওষুধ ও ইঞ্জেকশন দিয়ে ছেড়ে দেন বলে অভিযোগ । কিন্তু বাড়ি ফেরার পথে ফের অসুস্থ হয়ে পড়েন ওই যুবক। ফের তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। এই ঘটনায় ভাতার স্টেট জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসা পরিষেবা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, ভাতার হাসপাতালে চিকিৎসার গাফিলতির জন্যই বেঘোরে প্রাণ হারাতে হয়েছে ওই যুবককে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। মৃত যুবকের নাম ছোটন সর্দার। তাঁর বাড়ি ভাতার থানার ভাতার গ্রামের বাউড়িপাড়ায়। ভাতার বাজারে নাসিগ্রাম মোড়ে একটি চায়ের দোকান চালাতেন তিনি। ভোর তিনটে নাগাদ হঠাৎ তাঁর বুকে ব্যাথা শুরু হলে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
মৃতের আত্মীয়রা জানিয়েছেন, হাসপাতালে যাওয়ার পর চিকিৎসকরা ছোটনকে দু’টি ট্যাবলেট খেতে দেন, দু’টো ইনজেকশন দেন। তারপর চিকিৎসকের কথামতো ছোটনকে বাড়ি ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। বাড়িতে আনতেই ফের অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। ফের তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু হাসপাতালের চিকিৎসক জানান যে ছোটনের মৃত্যু হয়েছে।
এরপর ছোটনের দেহ বাড়ি নিয়ে যাওয়া হয়। এর কিছুক্ষণ পরেই ছোটন নড়াচড়া করেন ও জল খান বলে দাবি পরিবারের। এরপর তাঁকে বাঁচানোর জন্য বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল, রাস্তাতেই তাঁর মৃত্যু হয়।
পূর্ব বর্ধমানের ডেপুটি সিএমওএইচ সুবর্ণ গোস্বামী এই অভিযোগ প্রসঙ্গে বলেন, অনেক সময় এটা আত্মীয়দের মনের ভুলে হতে পারে। তাঁরা মেনে নিতে পারেন না রোগীর মৃত্যু। তখন তাঁদের মনে হয় রোগী নড়াচড়া করছেন। এক্ষেত্রেও তেমনটা হয়েছে বলে মনে করছেন তিনি।