দিঘা: ইয়াসের ধাক্কা কাটিয়ে ছন্দে ফিরেছে দিঘা, শঙ্করপুর, মন্দারমণি। দিঘায় ভিড়ও বেড়েছে পর্যটকদের। দিঘাকে পর্যটকদের কাছে আরও আকর্ষণীয় করতে চান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সে জন্যই ওড়িশার পুরীর আদলে দীঘাতেও জগন্নাথ মন্দির তৈরির পরিকল্পনা করেছে রাজ্য। কিন্তু দীঘায় প্রস্তাবিত জগন্নাথ মন্দির নিয়ে কী ভাবছেন সেখানে ঘুরতে আসা পর্যটকরা। জগন্নাথ মন্দির তৈরি হলে দীঘা কী পুরীর বিকল্প হয়ে উঠবে? পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের ঐতিহ্য, ভক্তি কী দীঘায় গড়ে ওঠা সম্ভব? এ সব প্রশ্নেরই উত্তর খুঁজল টিভি৯ বাংলা।
মে মাসের প্রথম সপ্তাহেই পূর্ব মেদিনীপুর সফরে গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানেই তিনি পুরীর আদলে জগন্নাথ মন্দির তৈরির কথা বলেন তিনি। জগন্নাথ মন্দিরের টানে পুরীগামী পর্যটকদের দীঘামুখী করতেই এই উদ্যোগ রাজ্যের। সেই মতোই শুরু হয়েছে মূল মন্দির নির্মাণের কাজ। হিডকোর তরফে জানানো হয়েছে, সব কিছু ঠিক থাকলে দিঘায় প্রস্তাবিত জগন্নাথধাম তৈরির কাজ ১৮ মাসে সম্পূর্ণ করা হবে। সেই মতো কাজ চলছে তৎপরতার সঙ্গে।
নিউ দিঘা স্টেশন লাগোয়া ভগীব্রহ্মপুর মৌজার বিস্তীর্ণ উঁচু বালিয়াড়ির ওপর গড়ে উঠছে এই জগন্নাথধাম। নির্মিত হবে পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের অনুকরণে। উচ্চতাও হবে পুরীর মন্দিরের সমান। গোটা এলাকার পরিকাঠামো উন্নয়নেও জোর দেওয়া হবে। গত ফেব্রুয়ারিতে মন্দিরের নকশা চূড়ান্ত হওয়ার পর হিডকোর তদারকিতে শুরু হয়েছিল সীমানা প্রাচীর নির্মাণের কাজ। ডিসেম্বরে ১২৮ কোটি টাকার পূর্ণাঙ্গ প্রকল্প ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তা বেড়ে ২০০ কোটি হতে পারে বলেই জানা যাচ্ছে।
কিন্তু পুরীর বিকল্প দিঘা হতে পারবে কি না, তা নিয়ে পর্যটকদের একাংশের সন্দেহ রয়েছে। দিঘায় ঘুরতে আসা এক মহিলা বলেছেন, “ছোট থেকে দিঘায় ঘুরতে আসি। এখনকার দিঘাকে অনেক বেশি কমার্শিয়াল মনে হয়। এখানে জগন্নাথ মন্দির হবে শুনেছি। কিন্তু পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের ভক্তি এখানে থাকবে না। তবে মন্দির হলে ঘোরার আরও একটা জায়গা হবে। সেটা ভালই হবে।” অপর এক পর্যটক আবার দিঘায় জগন্নাথ মন্দির তৈরির কাজের বিরোধিতা করেছেন। তিনি বলেছেন, “পুরী ধামের মাহাত্য কোনও দিনই দীঘায় তৈরি হবে না। জগন্নাথ মন্দির বলে লোকে পুরী বোঝে। সেই জায়গা দিঘা নিতে পারবে না।“ অপর এক পর্যটক বলেছেন, “ঠাকুরের মন্দির অবশ্যই পূজনীয়, যেখানেই তা হোক। তবে পুরীর ও দিঘার জগন্নাথ মন্দিরের কোনও তুলনা হয়। এ বিষয়ে প্রতিযোগিতাও নেই। পুরীর সঙ্গে আবেগ অনেক বেশি।”