কাটোয়া: বাড়ি আছে, তারপরও নাম আবাস যোজনায়, আবার যার চালচুলো নেই, তার নামও নেই! এমন অভিযোগ উঠেছে একাধিক। বিভিন্ন জেলা থেকে সামনে আসছে এমনই অভিযোগ। এবার অভিনব অভিযোগ উঠেছে বর্ধমানের কাটোয়ায়। আবাস যোজনার তালিকায় একটি নাম রয়েছে পাঁচ বার। স্বামী ও বাবার নাম ভিন্ন হলেও উপভোক্তার নাম একটাই। কিন্তু কে সেই মহিলা? কোথায় থাকেন? আদৌ গ্রামে ওই নামে কেউ আছেন? বুঝে উঠতে পারছেন গ্রামের লোক, খবর নেই প্রশাসনের কাছেও।
পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়ার জগদানন্দপুর গ্রামপঞ্চায়েতের ঘটনা। অভিযোগ, সুদেষ্ণা রায় নামে এক উপভোক্তার নাম পাঁচবার তালিকায় উঠেছে। তবে উপভোক্তার নাম সুদেষ্ণা রায় হলেও হলেও তাঁর স্বামী বা বাবার নাম বদল হয়েছে। এই ভূতুড়ে নামের ঠেলায় প্রকৃত উপভোক্তারা আবাস যোজনার ঘর পাওয়া থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন বলে অভিযোগ। এই ঘটনায় দুর্নীতির গন্ধ পাচ্ছে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলিও।
সুদেষ্ণা রায় বলে আদৌ ওই গ্রামে কেউ আছেন কি না, তা এখনও জানা যায়নি। তালিকার কোথাও সুদেষ্ণা রায়ের স্বামীর নাম গুরুপদ মাজি, কোথাও মানিক দাস। আবার কখনও বাবার নাম হয়েছে শক্তিপদ খাঁ, কখনও বিশ্বনাথ দাস। ভূতুড়ে কাণ্ডে সবথেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন প্রকৃত উপভোক্তারা।
গ্রামবাসীরা বলছেন, এটা আসলে ভূতুড়ে নাম। কাটোয়া ২ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির নেতার অভিযোগ সরকারি কর্মীদের উদাসীনতায় উপভোক্তারা বিপাকে পড়েছেন। অন্যদিকে, জেলার বিজেপি নেত্রী সীমা ভট্টাচার্য বলেন, “এখন ঝোলা থেকে সব ভূত বেরিয়ে পড়বে। তাঁর কথায়, তৃণমূল ভূতের নাম করে এতদিন ধরে টাকা আত্মসাৎ করেছে, আমরা ভূত খুঁজে বের করতে কেন্দ্রীয় সরকারের দ্বারস্থ হব। সরকারি কর্মীদের ঘাড়ে দোষ দিলে হবে না।” এদিকে, কাটোয়া ২ নম্বর ব্লকের বিডিও জানান, তাঁরাও সুদেষ্ণা রায় নামে কাউকে পাননি। ভূতুড়ে নামের অভিযোগ পেয়ে তল্লাশি শুরু করা হয়েছে। উপভোক্তাদের অভিযোগ, সুদেষ্ণা রায় নামে কোন ব্যক্তি এই তল্লাটে নেই।
তৃণমূল কংগ্রেসের পঞ্চায়েত সমিতির নেতা গৌতম ঘোষালের দাবি সুদেষ্ণা রায় নামে কেউ নেই। দলের বদনাম করতে সরকারি কর্মীরা তালিকায় ভূতুড়ে নাম ঢুকিয়ে এই কাজ করেছে। ঘটনার তদন্ত করা হোক। কাটোয়া ২ নম্বর ব্লকের বিডিও আসিফ আনসারি ক্যামেরার সামনে কিছু বলতে চাননি। তবে তিনি জানিয়েছেন সুদেষ্ণা রায় নামে কোন ব্যক্তির সন্ধান পাওয়া যায়নি।