Burdwan Snake In Mid Day Meal: প্রথম গ্রাসটা সন্তানকে খাওয়ান, পরেরটা মুখে তুলতে গিয়েই দেখেন খিচুড়িতে আস্ত সাপ! পরের ঘটনা মারাত্মক
Burdwan Snake In Mid Day Meal: জামালপুর ব্লকের পাড়াতল ২ গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার প্রত্যন্ত গ্রাম বাগকালাপাহাড়। ১৩৬ নম্বর অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র থেকে পুষ্টিদায়ক খাবার পাওয়ার জন্য ৫৪ জনের নাম নথিভুক্ত রয়েছে ।
বর্ধমান: সবেমাত্র থালায় খিচুড়ি ঢেলেছিলেন। গ্রাসটা মুখে তোলার আগেই চোখ কপালে মহিলার। একটু আগেই প্রথম গ্রাসটা সন্তানের মুখেই তুলে দিয়েছেন। অথচ থালার মধ্যে খিচুড়ির সঙ্গে মিশে মরা সাপের বাচ্চা। রীতিমতো গা গুলিয়ে ওঠে মহিলার। ততক্ষণে চিৎকার চেঁচামেচিতে খবর চাউর হয়েছে এলাকাতেও। আশপাশের বাড়ির মহিলারাও, যাঁরা অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র থেকে খিচুড়ি এনে খেয়েছিলেন, তাঁরাও অসুস্থ হতে শুরু করেছেন একে একে। শিশুদের অবস্থা তো তথৈবচ। সাপ-সহ খিচুড়ি রান্না করার অভিযোগ উঠল অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে। তা খেয়ে ফেলায় শিশুদের নিয়ে হাসপাতালে ছুটতে হল মায়েদের। পূর্ব বর্ধমানের জামালপুর ব্লকের বাগকালাপাহাড় গ্রামের অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের এই ঘটনায় রীতিমতো চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। প্রশ্নের মুখে প্রশাসনের ভূমিকাও।
শিশু ও গর্ভবতী মহিলাদের পুষ্টির জন্য অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র থেকে দেওয়া হয় রান্না করা খাবার। সেই খাবারের মেনুতেই ‘সাপ’। তাজ্জব ঘটনা। বুধবার খিচুড়ি রান্না হল আর তার মধ্যে পাওয়া গেল মরা সাপের বাচ্চা।
সেই খিচুড়ি খেয়ে অসুস্থ একাধিক শিশু। চিকিৎসার জন্য দুপুরে ছয় শিশুকে নিয়ে যাওয়া হয় জামালপুর ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে। এই ঘটনা জানাজানি হতেই এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়েই ব্লকের বিডিও জামালপুর ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে গিয়ে শিশুদের শারীরিক অবস্থার বিষয়ে খোঁজ খবর নেন। এমন ঘটনা কীভাবে ঘটল, তার তদন্ত ব্লক প্রশাসন শুরু করেছে ।
জামালপুর ব্লকের পাড়াতল ২ গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার প্রত্যন্ত গ্রাম বাগকালাপাহাড়। ১৩৬ নম্বর অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র থেকে পুষ্টিদায়ক খাবার পাওয়ার জন্য ৫৪ জনের নাম নথিভুক্ত রয়েছে । তাঁরা মূলত খোরদোপলাশি ,কাঠালডাঙা ও বাগকালাপাহাড় গ্রামের বাসিন্দা। অন্যান্য দিনের মতো বুধবারও ওই অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে শিশু ও গর্ভবতী মহিলাদের জন্য খিচুড়ি রান্না হয় ।
বেলা ১০টার মধ্যে রান্না শেষ হয়। শিশু ও গর্ভবতীরা সেই খিচুড়ি নিয়ে বাড়িতে চলে যান। ঘরে বসে খিচুড়ি খেতে গিয়ে এক শিশুর অভিভাবকদের চোখ কপালে ওঠে। তাঁর বয়ান অনুযায়ী, তিনি দেখেন, অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র থেকে দেওয়া গরম খিচুড়ির মধ্যে একটি মরা সাপের বাচ্চা রয়েছে।
এমনটা দেখেই ওই শিশু ও তাঁর পরিবারের লোকজন আঁতকে ওঠেন। তাঁরাই ছুটে গিয়ে গ্রামের অন্য শিশুর পরিবার ও গর্ভবতীদের বিষয়টি জানান। ততক্ষণে যে যে শিশুরা খিচুড়ি খেয়ে ফেলেছিল, তাদের জামালপুর ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। চিকিৎসকরা তাদের পর্যবেক্ষণে রেখেছেন।
অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক জ্যোৎস্না ঘোষ বলেন, “কেন্দ্রের খিচুড়ি রান্না করার সময়ে তাতে আস্ত একটা সাপের বাচ্চা কখন পড়ে যায়, তা কারোর নজরে আসেনি । সাপ-সহ খিচুড়ি রান্না হয়ে যাওয়ার পর সেন্টারের শিশু ও প্রসূতিদের তা বিতরণও করে দেওয়া হয়। এক শিশু ও তার পরিবার থালা সমেত ওই খিচুড়ি সেন্টারে নিয়ে এসে দেখায়।” দায়ভার স্বীকার করে নিয়েছেন তিনি।
ঘটনায় বিএমওএইচ চিকিৎসক হৃত্বিক ঘোষ বলেন, “খিচুড়িতে সাপ দেখেছিলেন বলে জানাচ্ছেন। আমরা তো স্পটে নেই। বাচ্চারা এগুলো খেয়েছে বলে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন। বাচ্চারা সুস্থই রয়েছে। আমরা পর্যবেক্ষণে রেখেছি। সবাই এমনিতে সুস্থই রয়েছে।”