TMC : তৃণমূলের পার্টি অফিস এখন ফাঁকা বাড়ি, ভোট বয়কটের হুঁশিয়ারি দিচ্ছেন শাসকদলের নেতাও

TMC : সূত্রের খবর, মেমারি ১ ব্লকের দেবীপুর পঞ্চায়েতের নলসাড়া গ্রামে তৃণমূল কংগ্রেসের একটি পার্টি অফিস চলছিল দীর্ঘদিন থেকে। সেখানেই বসতেন এলাকার দলীয় কর্মীরা। সেখানেই ঘটেছে এই ঘটনা।

TMC : তৃণমূলের পার্টি অফিস এখন ফাঁকা বাড়ি, ভোট বয়কটের হুঁশিয়ারি দিচ্ছেন শাসকদলের নেতাও
খুলে ফেলা হচ্ছে দলের পোস্টার-ব্যানার
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Mar 29, 2023 | 12:01 AM

পূর্ব বর্ধমান : ছিল শাসকদলের পার্টি অফিস, হয়ে গেল ফাঁকা বাড়ি। মুখ্যমন্ত্রীর সিঙ্গুরে (Singur) পথশ্রী প্রকল্পের উদ্বোধনের দিনই রাস্তার দাবিতে সরব হলেন পূর্ব বর্ধমানের (Purba Bardhaman) মেমারির নলসাড়া গ্রামের তৃণমূল কংগ্রেসের (Trinamool Congress) কর্মীদের। তুলে দিলেন পার্টি অফিস। খুলে ফেললেন দলীয় পতাকা। দীর্ঘদিনের দাবির পরেও রাস্তা না হাওয়ার কারণেই তাঁদের এই প্রতিবাদ বলে জানাচ্ছেন।

সূত্রের খবর, মেমারি ১ ব্লকের দেবীপুর পঞ্চায়েতের নলসাড়া গ্রামে তৃণমূল কংগ্রেসের একটি পার্টি অফিস চলছিল দীর্ঘদিন থেকে। সেখানেই বসতেন এলাকার দলীয় কর্মীরা। দলের নানা বিষয়ে আলোচনা চলত। এই এলাকায় রীতিমতো প্রভাব রয়েছে মেমারি বিধানসভার বিধায়ক ও জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের চেয়ারম্যান মধুসূদন ভট্টাচার্যের। সূত্রের খবর, এই হেভিওয়েট নেতার এলাকাতেই শাসকদলের কর্মীদের ক্ষোভ নানা কারণেই দীর্ঘদিন থেকে ধিকিধিকি জ্বলতে শুরু করেছিল। এদিন তা ফেটে পড়ল বারুদের মত। দলের অফিস থেকে খুলে ফেলা হল পতাকা। পার্টি অফিস থেকে দলের সব কিছু চিহ্ন হাপিস করে দিলেন কর্মীরাই। এমনকি দিলেন ভোট বয়কটের হুমকিও।

কিন্তু কী চেয়েছিলেন গ্রামবাসীরা? তাদের দাবি, পাশের গ্রামে রাস্তা হলেও তাদের গ্রামে আজও পাকা রাস্তা হয়নি। দেবীপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের আশেপাশের সব গ্রাম রাস্তা পেলেও তারা হাপিত্যেশ করেই বসে আছেন। এদিকে দেবীপুর রেলস্টেশনে বা স্কুলে যাতায়াতের সময় দারুণ সমস্যায় পড়তে হয় তাদের। 

এদিকে যে পার্টি অফিসের কথা হচ্ছে তা আজ থেকে পাঁচবছর আগে তৈরি হয়েছিল। তাই এখন ফাঁকা বাড়ি। এমনকি সরিয়ে ফেলা হয়েছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের ছবিও। গ্রামের বাসিন্দারা  জানাচ্ছেন, ‘অনেক দিন থেকে শুনে আসছি রাস্তা হবে। আমাদের রাস্তার ভীষণ প্রয়োজন। স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য গনেশ ক্ষেত্রপাল বলেন, “আমি বিষয়টি নিয়ে দীর্ঘদিন বিভিন্ন স্তরে জানিয়েছি। সকলেই বলেছিল রাস্তা হবে। গ্রামের রাস্তাঘাট চলাচলের অযোগ্য, গ্রামের মানুষের কাছে ভোট চাইতে পারছি না। বিধায়ক কথা দিয়েছিলেন কিন্তু রাস্তা-ব্রিজ কিছুই হল না।”

তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি অনুপ কুমার ঘোষ বলেন, “আমরা গ্রামবাসীদের কাছে মুখ দেখাতে পারছি না। বিধায়ক, পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি, ব্লক সভাপতি সকলকেই জানিয়েছি। কিন্তু রাস্তা হবে বলেও হল না। তাই আমরা ভোট বয়কট করব বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছি।”

এই নিয়ে সরব বিজেপিও। দলের বর্ধমান সদর জেলার সাধারণ সম্পাদক মৃত্যুঞ্জয় চন্দ্র বলেন; “মানুষকে ভুল বুঝিয়ে ক্ষমতায় আছে তৃণমূল কংগ্রেসের নেতারা।ওই গ্রামে রাস্তা নেই। জল নেই। অথচ কেন্দ্রের নানা প্রকল্পের টাকা আসছে। সে টাকা হয়তো কাটমানি খেয়ে নিচ্ছে নেতারা।” তাঁর দাবি, তৃণমূলের পথশ্রী নয়, আদপে এসব বিশ্রী ব্যাপার।

অন্যদিকে তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য মুখপাত্র প্রসেনজিৎ দাসের প্রতিশ্রুতি রাস্তা হবেই। তিনি বলেন, অন্য সব জায়গায় হচ্ছে। হয়তো কোনো টেকনিক্যাল কারণে বাতিল হয়েছে। অনেকদিন থেকেই রাস্তা হবার কথা। অনেকে কথা দিয়েছেন। অভিমান হতেই পারে। সেটা স্বাভাবিক। একইসঙ্গে তাঁর আবেদন, “যারা দল করেন তারা দলই করবেন। ছাড়বেন না।”