Earthen Water Bottle: ফিরছে পুরনো সময়, একটু অন্য ঢঙে; দাবদাহের বাংলায় দেদার বিকোচ্ছে মাটির বোতল
Katwa: কোনও কোনও মাটির বোতলের গায়ে রঙের কারুকাজ। একেবারে চিরন্তন বাঙালিয়ানার ছোঁয়া।
পূর্ব বর্ধমান: একটা সময় গরমকাল মানেই মাটির কলসে জল ভরে রাখত মা-ঠাকুমারা। চরম দাবদাহে মাটির পাত্রে রাখা জল মেটাত সমস্ত তৃষা। তবে সময়ের সঙ্গে বদল এসেছে সে ছবিতে। একেবারে প্রান্তিক এলাকা বাদ দিলে এখন ঘরে ঘরে রেফ্রিজারেটর। তাতে জল ভর্তি বোতল রাখা। তবে ইদানিং আবার মাটি পাত্র ফিরছে। উল্লেখযোগ্যভাবে, সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে জল রাখার মাটির পাত্রের আকার, বহরেও বদল এনেছেন মৃৎশিল্পীরা। এখন একেবারে প্লাস্টিকের বোতলের আদলে তৈরি হচ্ছে মাটির বোতল। ব্যবহার করাও অনেক সহজ। পরিবেশবান্ধবও বটে। পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়া শহরে দেদার বিকোচ্ছে এই জলের বোতল। কোনও কোনও মাটির বোতলের গায়ে রঙের কারুকাজ। একেবারে চিরন্তন বাঙালিয়ানার ছোঁয়া। আর এমনভাবে বানানো হয়েছে, সহজেই ব্যাগে বা হাতে করে এদিক ওদিক নিয়ে যাওয়া যাবে। কাটোয়া শহরে বিভিন্ন মৃৎশিল্পীর দোকানে এই জলের বোতল বিক্রি হচ্ছে। মানুষও কিনছেন। আকার অনুযায়ী দাম। ১ লিটারের জলের বোতলের দাম ১০০ টাকা। অনেকেই দূষণকে পাশ কাটাতে প্লাস্টিক এড়িয়ে মাটির বোতলে ঝুঁকছেন। বোতলগুলি দেখতেও ভারী মনোলোভা।
কাটোয়া শহরে দশকর্মার দোকান বিষ্ণুপদ সাহার। এ বছরই প্রথম মাটির বোতল বিক্রি করছেন তিনি। জানালেন, ব্যাপক চাহিদা এই বোতলের। লোকে এত চাইছেন জোগান দিয়ে কুলিয়ে উঠতে পারছেন না। দোকানির কথায়, “প্লাস্টিকের বোতলে জল রাখলে জল গরম হয়ে যায়। প্লাস্টিকের বোতলে জল খাওয়াটাও ঠিক নয়। যার জন্য মাটির জিনিসে নজর পড়ছে। বোতল তো খুবই বিক্রি হচ্ছে। সব থেকে বড় কথা হল জলের যে স্বাদ মাটির বোতল হওয়ায় তাতে কোনও বদল আসে না। সঙ্গে জল ঠান্ডাও থাকে।”
ক্রেতা গৌতম নাগের কথায়, “প্লাস্টিক তো এমনিই শরীরের জন্য ক্ষতিকর। আর মাটির বোতলে জল রাখলে ঠান্ডাও থাকবে অনেকক্ষণ। একটা সময় মা, ঠাকুমাকে দেখতাম মাটির কলসি, কুজো বা জালায় জল ভরে রাখত। বাড়ির সকলে গোটা গরমকাল সেই জল খেতাম। এখন তো সে সব খুব একটা হয় না। বাড়িতেই কম থাকা হয়। সেখানে মাটির বোতল ব্যাগে নিয়ে বেরোনো যাবে। তাছাড়া সকলেই যদি এই বোতল কেনেন তা হলে মাটির যে শিল্পীরা রয়েছেন তাঁদেরও একটু উপকার হয়। অর্থের বিনিময়ে একটা ভাল জিনিস পেলে এর থেকে ভাল আর কী হতে পারে।”