‘আমাকে একা ঘরে ডেকে নিয়ে গিয়েই স্যার বলেছিলেন কথাটা, রাজি হইনি, জীবন এখন দুর্বিষহ’, কাঠগড়ায় প্রধান শিক্ষক

Contai: মৌসুমীর বয়ান অনুযায়ী, একদিন স্কুলে একা ঘরে ঢেকে প্রধান শিক্ষক নন্দীশ তাঁকে কুপ্রস্তাব দেন। কিন্তু তাতে রাজি হননি তিনি।

'আমাকে একা ঘরে ডেকে নিয়ে গিয়েই স্যার বলেছিলেন কথাটা, রাজি হইনি, জীবন এখন দুর্বিষহ', কাঠগড়ায় প্রধান শিক্ষক
নিজস্ব চিত্র
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Aug 13, 2021 | 2:34 PM

পূর্ব মেদিনীপুর: লাগাতার কুপ্রস্তাব, শাসানি, মানসিক চাপ! কিন্তু তাতে রাজি হননি মহিলা। আর তাতে তাঁর ওপর শারীরিক নির্যাতন। স্কুলের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ তুললেন এক মহিলা। ঘটনাকে ঘিরে শোরগোল পূর্ব মেদিনীপুরের (Purbo Medinipur) কাঁথিতে (Contai)।

জানা গিয়েছে, পূর্ব মেদিনীপুরের কাঁথির সাবাজপুর সম্বোধি শিক্ষাতীর্থ স্কুলের প্রধান শিক্ষক নন্দীশ নিয়োগি বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির কর্মী মৌসুমী দাসকে কুপ্রস্তাব দেন বলে অভিযোগ।

মৌসুমীর বয়ান অনুযায়ী, একদিন স্কুলে একা ঘরে ঢেকে প্রধান শিক্ষক নন্দীশ তাঁকে কুপ্রস্তাব দেন। কিন্তু তাতে রাজি হননি তিনি। এরপর থেকেই শুরু হয় মানসিক অত্যাচার। পরে তা শারীরিকও হয়। মৌসুমী বিভিন্ন দফতরে অভিযোগ দায়ের করেন। পরে আজ কাঁথি থানার পুলিশ স্কুলে গিয়ে প্রধান শিক্ষককে নিয়ে এসে জিজ্ঞাসাবাদও করে।

মৌসুমী দাস বলেন, “স্কুলের প্রধান শিক্ষক আমাকে কুপ্রস্তাব দিয়েছিলেন। তাতেই আমি রাজি হইনি। তারপর থেকে দীর্ঘদিন ধরে প্রধান শিক্ষক সাহেব আমাকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতে থাকেন। তারপর আমি বাধ্য হয়ে বিভিন্ন দফতরে অভিযোগ জানিয়েছিলাম। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে আজকে কাঁথি থানার পুলিশ এসে শিক্ষককে নিয়ে যায়। আমি তার শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।”

স্কুলের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে এহেন অভিযোগ ওঠায় শোরগোল পড়ে গিয়েছে এলাকায়। অপরদিকে স্থানীয় বাসিন্দা শ্রীনিবাস বলেন, “এই স্কুলের জন্মলগ্ন থেকে কোন শিক্ষক এই ধরনের কাজ করেননি। আজকে আমরা লজ্জিত। এই শিক্ষক স্কুলের এক মহিলা কর্মীকে কোন প্রস্তাব দিয়েছিলেন। তারপর ওঁর অভিযোগের ভিত্তিতে কাঁথি থানার পুলিশ গ্রেফতার করে নিয়ে যায়। আমি চাই সঠিক তদন্ত হয় পুলিশ যেন শাস্তি দেয়। ”

আরেক গ্রামবাসী শক্তিপদ দাস বলেন, “আমি এই স্কুলের প্রাক্তন ছাত্র। আজ পর্যন্ত কোনদিন আমাদের এই স্কুলে পুলিশ প্রবেশ করেনি। এমনকি কোন শিক্ষক এই জঘন্য অপরাধ করেননি। আজকে ওঁকে পুলিশ ধরে নিয়ে যায়। আমি চাই দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হয়।”

সাবাজপুর অঞ্চলের প্রধান নমিতা দাস বলেন, “আমি শুনেছি ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক তাঁর কর্মীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেছেন। তাঁরা বিভিন্ন জায়গায় অভিযোগ করেছেন। পুলিশ আজকে প্রধান শিক্ষককে ধরে নিয়ে যায়। আমি চাই প্রকৃত দোষীকে শাস্তির দাবি জানাই।” প্রধান শিক্ষকের অবশ্য এ বিষয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।

পুলিশের তরফে থেকে জানানো হয়েছে, অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত এগোচ্ছে। অভিযুক্তকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। সব থেকে খতিয়ে দেখা হবে। তবে এলাকার নামী স্কুলের প্রধান শিক্ষকের এহেন অভিযোগ প্রকাশ্যে আসায় পড়ুয়াদের মধ্যেও প্রভাব পড়েছে। এর পিছনে অন্য কোনও রহস্য রয়েছে কিনা, তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।  আরও পড়ুন: চেক গ্রাহকের কাছে, কিন্তু টাকা তুলে নিচ্ছেন অন্য কেউ! এই রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে অ্যাকাউন্ট থাকলে সাবধান, সতর্ক করল পুলিশ