পুরুলিয়া: জনকল্যাণমূলক কাজের জন্য সম্মানিত পেলেন পুলিশ কর্মীর স্ত্রী। আগুন থেকে জীবন বাঁচানোর জন্য স্মারক ও শংসাপত্র তুলে দেওয়া হল তাঁর হাতে। পুরুলিয়ার ডিএসপি (ডি এন টি) আশীষ কুমার রায় এই সম্মান প্রদান করেন। সেখানে উপস্থিত ছিলেন থানার আই সি মানস সরকার প্রবেশনে থাকা ডিএসপি তমাল কান্তি বিশ্বাস সহ উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা।
কী ঘটেছিল?
গত ফেব্রুয়ারি মাসের একেবারে শেষ দিন। আর পাঁচ দিনের মতই ভোর বেলায় উঠে হাঁটতে বেরিয়েছিলেন বন্দনা দেবী। পুরুলিয়া শহরের ওল্ড পুলিশ লাইনের পুলিশ কোয়ার্টারসের বাসিন্দা বন্দনা মানের এটাই নিত্যদিনের অভ্যাস। তবে সেই ভোরটাই অন্য রকম হয়ে গেল তাঁর কাছে।
নিজের বাসস্থান থেকে সাহেব বাঁধের দিকে যাওয়ার সময় রাস্তার ধারে থাকা ডিআইবি-র দফতরের একটি অংশ থেকে হালকা ধোঁয়া বেরতে দেখেন তিনি। পুলিশ আধিকারিকের স্ত্রী বন্দনা দেবী বিলক্ষণ জানেন এই দফতরটির গুরুত্ব। এতটুকুও সময় নষ্ট না করে তত্ক্ষণাৎ দফতরের সেন্ট্রিকে সজাগ করেন তিনি। নিজের মোবাইল থেকে সটান ফোন করেন পুরুলিয়া সদর থানার সেকেন্ড অফিসার গোপাল মানকে। তিনিই বন্দনাদেবীর স্বামী।
এখানেই শেষ নয় প্রায় ছুটতে ছুটতে এক কিলোমিটার দূরে থাকা দমকলের দফতরেও পৌঁছে যান তিনি। সোজা দায়িত্ব প্রাপ্ত আধিকারিকের কাছে গিয়ে আগুন নিয়ে প্রাথমিক তথ্য দেন। সঙ্গে সঙ্গে দমকলের একটি ছোট গাড়ি রওনা হয়ে যায়। ততক্ষণে আগুন অনেক বাড়লেও দফতরের ভেতরে থাকা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের কর্মীরা নিরাপদ স্থানে যেতে সক্ষম হয়েছেন। এরপর দমকলের আরওকটি ইঞ্জিন এসে প্রায় চল্লিশ মিনিটের চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসে।
এই সময় রুদ্ধশ্বাস হয়ে অপেক্ষা করতে থাকেন দুই পুত্র সন্তানের জননী বন্দনা দেবী। সেদিন আর প্রাতঃভ্রমণ হয়নি তাঁর। একজন সুনাগরীকের দায়িত্ব পালন করার জন্য সোমবার পুরুলিয়া সদর থানায় তাঁর হাতে স্মারক ও শংসাপত্র তুলে দেন পুরুলিয়ার ডিএসপি। বন্দনা দেবী বলেন, “আগুন দেখেই প্রচণ্ড চিন্তা হয়ে গিয়েছিল সেখানে থাকা কর্মীদের জন্য। সেজন্যই ছুটে গেছিলাম দমকলে। এজন্য এজন্য এমন সম্মান পাব ভাবতে পারিনি।”