Purulia: অ্যাম্বুল্যান্স করে যন্ত্রণার কথা বলতে গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রীকে, নিরাপত্তার গেঁড়োয় ফিরতে হল খালি হাতে

Anirban Banerjee | Edited By: সায়নী জোয়ারদার

Feb 17, 2023 | 12:44 PM

Purulia: ২০১০ সালের ২০ মে। বনদফতরের হুলাপার্টিতে অস্থায়ী কর্মী হিসাবে কাজ করছিলেন মহেন্দ্র। সেই সময় দলছুট এক দাঁতাল তাণ্ডব চালাচ্ছিল গ্রামে।

Purulia: অ্যাম্বুল্যান্স করে যন্ত্রণার কথা বলতে গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রীকে, নিরাপত্তার গেঁড়োয় ফিরতে হল খালি হাতে
আহত মহেন্দ্র মাহাতো।

Follow Us

পুরুলিয়া: হুলা পার্টিতে কাজ করার সময় হাতির (Elephant Attack) সামনে পড়েছিলেন। মারাত্মক জখম হয়ে তারপর থেকেই শয্যাশায়ী বাঘমুণ্ডি থানার সুইসা তুন্তুরি অঞ্চলের পীড়রগড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা মহেন্দ্র মাহাতো। বৃহস্পতিবার জেলা সফরে ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সেদিন একটি অ্যাম্বুল্যান্স ভাড়া করে মহেন্দ্র মাহাতো যান মুখ্যমন্ত্রীর সভাস্থলে। তাঁকে নিজের যন্ত্রণার কথা জানানোই ছিল মহেন্দ্রর উদ্দেশ্য। তবে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে তাঁর আর দেখা হয়নি। মহেন্দ্র জানান, পুলিশ তাঁকে সরিয়ে নিয়ে যায় বহু দূরে। হুলাপার্টিতে কাজ করার সময় হাতির আক্রমণে ভেঙে গিয়েছিল শিরদাঁড়া। ২০১০ থেকে ২০২৩। ১২ বছর পার করেও এই যন্ত্রণা কাটেনি। মহেন্দ্রর পরিবার সূত্রে খবর, এই দুর্ঘটনার পর ১ লক্ষ টাকা সহযোগিতা পান সরকারের তরফে। কিন্তু এরপর খোঁজও নেয়নি বনদফতর, অভিযোগ পরিবারের। বৃহস্পতিবার ভেবেছিলেন, মুখ্যমন্ত্রীকে সবটা বলবেন। কিন্তু বিধি বাম!

২০১০ সালের ২০ মে। বনদফতরের হুলাপার্টিতে অস্থায়ী কর্মী হিসাবে কাজ করছিলেন মহেন্দ্র। সেই সময় দলছুট এক দাঁতাল তাণ্ডব চালাচ্ছিল গ্রামে। গ্রামবাসীদের ওই দাঁতালের হাত থেকে রক্ষা করতে নিজের প্রাণ বিপন্ন করে সেদিন হাতি তাড়াতে এগিয়ে গিয়েছিলেন মহেন্দ্র। সঙ্গে ছিলেন বনদফতরের কর্মীরা। কিন্তু ওই হাতি তাড়াতে গিয়েই যে এমন ঘটনা ঘটবে তা স্বপ্নেও ভাবেননি ৪১ বছরের মহেন্দ্র মাহাতো।

গ্রামের কাছেই ওই দাঁতাল হাতির মুখোমুখি পড়ে যান তিনি। শুঁড়ে পেঁচিয়ে আছাড় দেয় দাঁতাল হাতি। ভেঙে যায় মহেন্দ্রর শিড়দাঁড়া। তড়িঘড়ি স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় চিকিৎসার জন্য। এরপর কোমরের নীচ থেকে সম্পূর্ণভাবে অসার হয়ে যায়। রাঁচির রাজেন্দ্র মেডিক্যাল কলেজে শুরু হয় চিকিৎসা।

সেখানে ২৬ দিনের লড়াইয়ের পর জীবন বাঁচলেও আর উঠে দাঁড়াতে পারেননি মহেন্দ্র। অভিযোগ, এত বড় বিপর্যয় তাঁর জীবনে ঘটলেও সে সময় বনদফতরকে তিনি পাশে পাননি। এরইমধ্যে দক্ষিণ ভারতে যান চিকিৎসার জন্য। দু’মাস চিকিৎসা চলে। তবে উঠে দাঁড়াতে পারেননি আজও। বাড়ি-ঘর, জমি, গরু, ছাগল একে একে বিক্রি করতে হয়েছে সবকিছু। সর্বস্বান্ত হয়ে যায় পরিবার।

মা, বাবা নেই। দুই দাদা-বৌদির সংসারে মহেন্দ্র বড়ই অসহায়। তাই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে একটি বার দেখা করার চেষ্টা করেছিলেন তিনি। পুরুলিয়ার হুটমুড়ার প্রশাসনিক জনসভায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করে নিজের দুর্দশার কথা জানাতে বাড়ি থেকে রওনাও হন। কিন্তু পুলিশি নিরাপত্তার কারণে তা হয়নি। মাঝ পথে তাঁকে আটকে দেয় পুলিশ। মহেন্দ্র জানান, বাড়ি ফিরে যেতে বলা হয়।

এই ঘটনা নিয়ে ইতিমধ্যেই রাজনৈতিক তরজা শুরু হয়ে গিয়েছে। পুরুলিয়ার বিজেপি সাংসদ জ্যোতির্ময় সিং মাহাতো বলেন, বর্তমান রাজ্য সরকার এ নিয়ে কোনও ব্যবস্থাই নেয়নি। অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানোর কোনও উদ্যোগই নেওয়া হয়নি। যদিও মহেন্দ্র মাহাতোর চিকিৎসার যাবতীয় উদ্যোগ নেওয়া হবে বলে জানান জেলা তৃণমূল সভাপতি সৌমেন বেলথরিয়া। তাঁর বক্তব্য, মুখ্যমন্ত্রীর সভায় এত মানুষের ভিড়। তাই হয়ত তিনি ঢুকতে পারেননি। বিষয়টি গুরুত্ব দিয়েই দেখা হচ্ছে।

Next Article