‘ধৈর্যের পরীক্ষা দিচ্ছি’, সরাসরি বার্তা রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের
তাঁকে যদি কাজ না করতে দেওয়া হয়, তবে তিনি পিছন ফিরে তাকাবেন না। একই সঙ্গে জানিয়ে দিলেন, "আমি ধৈর্য ধরে আছি। আমার ধৈর্যচ্যুতি ঘটেনি। ধৈর্যের পরীক্ষা দিচ্ছি আপনাদের জন্য।"
লাইভে এসে তিনি যা বললেন তার সারমর্ম একটাই, তাঁকে যদি কাজ না করতে দেওয়া হয়, তবে তিনি পিছন ফিরে তাকাবেন না। একই সঙ্গে জানিয়ে দিলেন, “আমি ধৈর্য ধরে আছি। আমার ধৈর্যচ্যুতি ঘটেনি। ধৈর্যের পরীক্ষা দিচ্ছি আপনাদের জন্য।” অর্থাৎ বেসুরো রাজীব যে এখনই দল ছাড়ার মতো কোনও পদক্ষেপ করছেন না, তা এককথায় নিজেই সাফ করে দিয়েছেন।
লাইভে এসে নতুন বছরের শুভেচ্ছা জানিয়ে রাজীব বলেন,” আপনারা আমার আত্মার আত্মীয়, আপনারা ভাল থাকলেই আমি ভাল থাকব। এই দিনটা গুরুত্বপূর্ণ। আজকের দিন থেকে দেশজুড়ে টিকাকরণ শুরু হল। আমি আশাবাদী, এর মাধ্যমে কোভিডকে আমরা জয় করব।”
বনমন্ত্রীর ক্ষোভের কারণ ঠিক কোথায়, তা বস্তুত এদিন নিজেই স্পষ্ট করে দিয়েছেন তিনি। রাজীব বলেন, “যখনই আমি ভাল কাজ করতে গিয়েও পারিনি। তখনই দুঃখ পেয়েছি। সেই থেকেই কিছু ক্ষোভ জমেছে। সেটা কার সঙ্গে ভাগ করব? মানুষের সঙ্গেই তো ভাগ করে নেব। আমি যদি কাজ করতে গিয়ে বাধা পাই সেটা বলা কি অন্যায়? নিশ্চয়ই অন্যায় না। দুর্নীতি বিরুদ্ধে সুর তোলাও অন্যায় না। কিছু মানুষ ক্রমাগত ভুল বোঝাচ্ছেন। সেটা খারাপ লাগে। আমায় দলের শীর্ষ নেতৃত্ব ডাকলে অনেকে বেঁকা ভাবে কথা বলছেন। তখন তাঁদের কেউ কিছু বলে না। গণতন্ত্রে মানুষ শেষ কথা। আমার কি কথা বলার থাকতে পারে না? বলতে পারি না!”
তিনি আরও বলেছেন, “কর্মীদের সঙ্গে এক একসময় ভুল আচরণ করা হয়েছে। কর্মীরা কেবল সম্মানটুকু চায়। আর কিছুই না। তারাই দলের আসল সম্পদ। আমার দলনেত্রীও একই কথা বলেন। যখন কর্মীরা দলে অসম্মানিত হন, সেটা বলা কি অন্যায়? মানুষের জন্য কাজ করতে গেলে যেটা আমার জন্য সুবিধাজনক মনে হবে সেটাই করব। আমি ব্যক্তি স্বার্থে কোনও কথা বলিনি। যা বলেছি দলের স্বার্থে বলেছি। কেন মানুষ সরে যাবে দলের কাছে থেকে? আমি পিছনে ফিরে তাকানোর কথা ভাবি না। সবসময় ইতিবাচক মনোভাব নিয়ে চলব।”
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এখানেই প্রচ্ছন্নভাবে রাজীব ইঙ্গিত দিয়ে রাখতে চেয়েছেন যে কাজে বাধা পেলে তিনি অন্যদিকেও হাঁটতে পারেন। তবে যে বিষয়টা নিয়ে দীর্ঘদিনের জল্পনা, তার উত্তর এদিনের লাইভে শেষের দিকে এসে অনেকটাই সাফ করে দিয়েছেন রাজীববাবু। লাইভে একাধিক প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে জানান, “আমি ধৈর্য ধরে আছি। ধৈর্যের পরীক্ষা দিচ্ছি আপনাদের জন্য।” ফলে বিগত কয়েকমাস যাবত তাঁর যে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার প্রবল গুঞ্জন তৈরি হয়েছে, তাতে সাময়িক বিরতি পড়ল বলা চলে। কিন্তু, এই নিয়ে এখনই কোনও সিদ্ধান্তে আসা ঠিক হবে না বলেই মত পর্যবেক্ষকদের। কেননা, মানুষের জন্য কাজ করতে না পারলে তিনি যে অন্য পথে হাঁটতেও দ্বিধা করবেন না, সে কথাও এদিন নিজেই জানিয়েছেন দ্ব্যর্থহীনভাবে।
আরও পড়ুন: ‘শতাব্দী আজ যাননি তো কি হয়েছে, কাল যাবেন, যেতে তো হবেই’
রাজীবের এদিনের লাইভ প্রসঙ্গে তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, “রাজীব মোটেও বলেনি দল ছেড়ে যাবে। ও বারবার বলেছে, দলের কিছু ভুল আছে। আর সত্যিই তো আছে। সেগুলো ঠিক হয়ে যাবে। সব দলেই হয়। তৃণমূলে সব থেকে বেশি কেউ যদি নেগলেকটেড হয় অপমানিত হয় তবে তা কুণাল ঘোষ। ক্ষোভ কি আমার নেই? তা বলে আমি কি দল ছেড়ে যাব! রাজীবের ক্ষেত্রেও তাই! এটাকে জটিল করে দেখা বন্ধ করুন।”
অন্যদিকে রাজ্যের মন্ত্রী তথা হাওড়া জেলার তৃণমূল নেতা অরূপ রায় বলেছেন, “পদে আছে এদিকে কাজ করতে পারছে না। এটা তো বেকার কথা! এই কথার কোনও ভিত্তি নেই। এরকম হলে কাজ করবেই বা কী করে।”
আরও পড়ুন: টিকা নিলেন রবীন্দ্রনাথ, ডাক্তার-স্বাস্থ্যকর্মী না হয়েও তিনিই ‘ফ্রন্টলাইন ওয়ার্কার’!