মগরাহাট: বাড়ির সামনের গলিতে হাতের শিরা, পায়ের শিরা কেটে কুপিয়ে খুন। মগরাহাটের তৃণমূলের জয়ী প্রার্থীকে খুনের এসডিপিও প্রাথমিক তদন্তের পর জানিয়েছিলেন, এর পিছনে কোনও রাজনৈতিক কারণ নেই। চুরি, গাঁজার প্রতিবাদ করাতেই খুন। কিন্তু স্ত্রীর বয়ানে উঠে আসছে বিস্ফোরক তথ্য। নিহত তৃণমূল নেতা মইমুর ঘরামির স্ত্রীর বক্তব্য, তাঁর স্বামী প্রধান হতেন। তাঁকে খুনের নেপথ্যে রয়েছে সিপিএম। বেশ কয়েকজনের নামও উল্লেখ করেছেন তিনি। যাঁরা পঞ্চায়েত নির্বাচনে সিপিএমের হয়ে কাজ করেছে।
দক্ষিণ ২৪ পরগনার মগরাহাটে অর্জুনপুরে শুক্রবার রাতে ভয়ঙ্কর ঘটনা ঘটে যায়। মইমুর ঘরামি ওরফে ময়না নামে বছর চল্লিশের তৃণমূল নেতাকে কুপিয়ে খুনের অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় বাসিন্দা ও পরিবারের অভিযোগ, প্রথমে গুলি করা হয়। গুলি লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়ে লাগে ময়নার সঙ্গীর গায়ে। পালিয়ে বাঁচার চেষ্টা করেছিলেন ময়না। দুষ্কৃতীরা তাঁকে ঘিরে ধরে ধারাল অস্ত্র নিয়ে কোপায়। তাঁর হাতের শিরা, পায়ের শিরা কেটে দেওয়া হয়, নখও উপড়ে যায়। রাতে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে মৃত্যু হয় তৃণমূল নেতার।
মগরাহাট পূর্ব গ্রাম পঞ্চায়েতের তিন বারের জয়ী পঞ্চায়েত সদস্য মইমুর। এবারের পঞ্চায়েত নির্বাচনেও তৃণমূল থেকে জয়ী হয়েছিলেন। ৮ তারিখ তাঁরই প্রধান হওয়ার কথা ছিল বলে দাবি স্ত্রীর। তৃণমূল নেতার স্ত্রীর বক্তব্য, “সামিরুল, আসাদুল, কুচো-সহ ৮-১০ জন ছিলেন। বাইরে থেকে পাঁচ জন এসেছিল। পুরোটাই পূর্ব পরিকল্পিত। রেজাউলের দোকানে বসে মিটিং হয়েছে। ওরা সব সিপিএম করে। আমার স্বামী তৃণমূল করত। এবার ও জিতেছে। প্রধানও হত। তাতেই এই সর্বনাশ করেছে।” স্ত্রীই জানান, ময়না আগে সিপিএম করতেন। পরে ২০০৮ সাল থেকে তিনি তৃণমূল করা শুরু করেন।
যদিও খুনের ঘটনায় দলের জড়িত থাকার বিষয়টি অস্বীকার করেছে সিপিএম নেতৃত্ব। সিপিএম মগরাহাট এরিয়া কমিটির সদস্য চন্দন সাহা বলেন, “সিপিএম গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে। সেভাবেই লড়াই হয়েছে। সিপিএম খুন করবে, এটা হতে পারে না। একটা ঘটনা ঘটেছে। তার সঠিক তদন্ত প্রয়োজন।” তাঁর আরও বক্তব্য, “ময়নার সঙ্গে আমার ব্যক্তিগত সম্পর্কও খুব ভাল। একসঙ্গে পড়েছি। এখন ও অন্য দল করে। তবুও আমাদের সম্পর্ক ভাল। আমাদের গ্রামে এই ধরনের ঘটনা আগে কখনই ঘটেনি। অপরাধীদের কোনও দল হয় না। তাদের শাস্তির দরকার।”
তাঁর আরও যুক্তি, সিপিএম ৬টা আসন পেয়েছে। আর তৃণমূল ১৫টা আসন। প্রধান হওয়ার কোনও লড়াইয়েই নেই সিপিএম। সিপিএম তো বিরোধী দলের ভূমিকা পালন করবে। এখানে তো এই প্রশ্ন উঠছেই না। এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত চার জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।