করোনোয় প্রয়াত বিদায়ী বিধায়ক নির্মলচন্দ্র মণ্ডল, প্রশাসনিক সাহায্য না মেলার অভিযোগ

পরপর দু'বারের বিধায়ক নির্মলবাবু (Nirmal Chandra Mandal) কে এবার বয়সজনিত কারণে প্রার্থী করেননি তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)।

করোনোয় প্রয়াত বিদায়ী বিধায়ক নির্মলচন্দ্র মণ্ডল, প্রশাসনিক সাহায্য না মেলার অভিযোগ
ছবি: ফেসবুক
Follow Us:
| Updated on: Apr 30, 2021 | 5:58 PM

দক্ষিণ ২৪ পরগনা: করোনাভাইরাস (Corona) প্রাণ কাড়ল আরও এক বিদায়ী বিধায়কের। শুক্রবার প্রয়াত হলেন বারুইপুর পূর্ব বিধানসভার বিদায়ী বিধায়ক নির্মলচন্দ্র মণ্ডল (Nirmal Chandra Mandal)। পরপর দু’বারের বিধায়ক নির্মলবাবুকে এবার বয়সজনিত কারণে প্রার্থী করেননি তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)।

বেশ কয়েকদিন ধরে অসুস্থ ছিলেন নির্মলবাবু। সূত্রের খবর, কলকাতার হাসপাতালগুলিতে ভর্তি হতে না পেরে বারুইপুরের একটি হাতুড়ে চিকিৎসকের চিকিৎসাধীন ছিলেন। তবে বৃহস্পতিবার তাঁকে সঙ্কটজনক অবস্থায় ভর্তি করা হয় এম আর বাঙুর হাসপাতালে। শুক্রবারই তাঁর মৃত্যু হল।

এদিকে প্রাক্তন বিধায়কের মৃত্যু নিয়ে তাঁর পরিবারের অভিযোগ, প্রশাসনিক ভাবে তাঁরা কোনও সাহায্য পাননি। তাঁদের দাবি, মুখ্যমন্ত্রীর আপ্ত সহায়ক জানান, কোভিড টেস্টের রিপোর্টে না পেলে কোনও কোভিড হাসপাতালে ভর্তি করা যাবে না। এদিকে সেই রিপোর্ট আসতে অনেক দেরি হয় বলে অভিযোগ। ২৩ এপ্রিল থেকে জ্বর, সর্দি-সহ কোভিডের উপসর্গ দেখা দেয় নির্মলবাবুর। ২৬ তারিখ সোনারপুর সুভাষগ্রাম হাসপাতালে গিয়ে তিনি কোভিডের জন্য সোয়াব দেন।

নির্মলবাবুর পুত্রবধূ চন্দনা দেবীর অভিযোগ, ‘তিন দিন ধরে কোন রিপোর্ট হাতে পাইনি।শ্বশুরের শ্বাসকষ্ট বেড়ে যাওয়ায় ওনাকে নিয়ে বারুইপুর সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল, আর এন টেগোর হাসাপাতল, ইস্পাত কো অভারেটিভ হাসাপাতাল- বহু জায়াগায় ঘুরি।কিন্তু কোথাও ভর্তি করাতে পারিনি।’

দক্ষিণ ২৪ পরগনার সোনারপুরের প্রতাপনগরের বাসিন্দা নির্মলবাবু এলাকায় বেশ জনপ্রিয়। ভীষণ সহজ-সরল জীবন-যাপন করতেন বারুইপুরের বিদায়ী বিধায়ক। ২০১১ এবং ২০১৬ বিধানসভা ভোটে পরপর দু’বার বিধায়ক নির্বাচিত হন তিনি। তার আগে ২০০১ সালে অবিভক্ত সোনারপুর বিধানসভায় তৃণমূলের টিকিটে লড়ে প্রথম বিধায়ক হন নির্মল। এলাকায় শিক্ষক বলে পরিচিত নির্মল বাবু চাষবাসের সঙ্গে যুক্ত।তিনই বোধহয় একমাত্র তৃণমূল বিধায়ক যিনি লোকাল ট্রেন, বাস, অটো চেপে নিয়মিত বিধানসভায় যেতেন। চাষবাসের পাশাপাশি একসময় শিক্ষকতা করেছেন। আবার সমাজসেবার কাজও সমানতালে চালিয়ে গিয়েছেন। কংগ্রেস দল করতেন। সেখানেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়র সঙ্গে পরিচয়।

আরও পড়ুন: করোনা রিপোর্ট নেগেটিভ হলেও ফেরাতে পারবে না হাসপাতাল, নয়া নির্দেশিকা রাজ্যে

তার পর তাঁর হাত ধরেই আসেন তৃণমূলে। তৃণমূল নেতারা তো বটেই বিরোধী দলের রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বরাও নির্মলবাবুর বৈভ্যবহীন জীবনযাপনের প্রশংসা করে থাকেন। এহেন নির্মলবাবুর মৃত্যুতে শোকের ছায়া রাজনৈতিক মহলে।

কিছুদিন আগেই নদিয়া জেলা তৃণমূলের প্রাক্তন সভাপতি তথা তেহট্টের প্রবীণ বিধায়ক গৌরীশঙ্কর দত্তের মৃত্যু হয়েছে করোনায়। একুশের বিধানসভা ভোটের একাধিক প্রার্থীরও প্রাণ কেড়েছে করোনা।