Jaynagar: জয়নগরের মানুষ বলছে, ‘ফাঁসি চাই… ফাঁসি’, জনরোষ থামাতে আইসি বললেন, ‘তোমরা যা চাইছ, তাই হবে’
Jaynagar: জনরোষে পুড়ছে জয়নগর। সাধারণ মানুষ চীৎকার করে বলছে, কোথায় প্রশাসন, কী করছে পুলিশ। আরজি করের ঘটনার পর আবারও এরকম একটা ঘটনা কীভাবে ঘটছে?
জয়নগর: আরজি কর কাণ্ডের পর এবার জয়নগর। আবারও পুলিশকেই কাঠগড়ায় তুললেন সাধারণ মানুষ। বাড়ি থেকে ৫০০ মিটার দূরে উদ্ধার হয়েছে নাবালিকার ক্ষতবিক্ষত দেহ। ধর্ষণ করে খুনের অভিযোগ উঠেছে। পুলিশের নাকের ডগায় কীভাবে এরকম একটি ঘটনা ঘটল, তা নিয়ে শনিবার সকাল থেকেই উত্তপ্ত গোটা এলাকা। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বিক্ষোভের আঁচও বাড়ে। অভিযোগ, ধর্ষণ ও খুনের অভিযোগ জানাতে গেলে, পুলিশ তা গ্রহণ করতে চায়নি। পুলিশের উদাসীনতা নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন।
সকাল থেকেই এদিন লাঠি হাতে রাস্তায় নামতে দেখা যায় এলাকার মানুষকে। পুরুষ-মহিলা নির্বিশেষে তাঁরা ছুটে যান পুলিশ ক্যাম্পে। ভাঙচুর করা হয় ফাঁড়ি, আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় ক্যাম্পের বাইরে। পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ হয়ে উঠলে সামাল দিতে কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে পুলিশ।
জয়নগর থানা এলাকার চতুর্থ শ্রেণির এক ছাত্রী টিউশন থেকে বাড়ি ফেরার পথে নিখোঁজ হয়ে যায় বলে অভিযোগ। পরিবারের দাবি, পুলিশ ফাঁড়িতে সেই অভিযোগ জানাতে গেলে গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। পরে বলা হয়, জয়নগর থানায় অভিযোগ জানাতে হবে। এরপর বাড়ির কাছেই জলাজমি থেকে উদ্ধার হয় সেই ছাত্রীর দেহ। দেহে একাধিক আঘাতের চিহ্ন রয়েছে বলে অভিযোগ। ময়নাতদন্তের জন্য দেহ পাঠিয়েছে পুলিশ। সেই ঘটনার জেরেই চলছে বিক্ষোভ।
জনরোষ সামাল দিতে ঘটনাস্থলে যান খোদ জয়নগর থানার আইসি। তিনি সাধারণ মানুষের মাঝে দাঁড়িয়ে বলেন, “আপনারা যা চাইছেন তাই হবে। আমি আইসি, আমি কথা দিচ্ছি, যে এই কাজ করেছে, তার শাস্তির ব্যবস্থা আমি করে দেব।” পুলিশ ফাঁড়িতে যে অফিসার দায়িত্বে ছিলেন, তাঁর বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন তিনি। এলাকার মানুষ পুলিশকে সামনে পেয়ে বলতে থাকেন, ‘আমরা ফাঁসি চাই, ফাঁসি।’ আইসি তাঁদের বলেন, ‘তাই হবে। সেই ব্যবস্থা করে দেব।’
পুলিশের বিরুদ্ধে কেন এত রোষ? অভিযুক্ত গ্রেফতার হওয়ার পরও ক্ষোভ কমছে না। এই প্রসঙ্গে প্রাক্তন পুলিশ কর্তা অনিল জানা বলছেন, “মানুষের এত ক্ষোভ কেন! সেটা পুলিশকেই চিন্তা করতে হবে। ভাল কাজ করলেও পুলিশের ওপর আক্রমণ হচ্ছে।” তাঁর মতে, পুলিশের সঙ্গে মানুষের যোগাযোগ কমে গিয়েছে। এমএলএ, এমপি-দের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বেড়েছে। সিভিক ভলান্টিয়ারদের দিয়ে থানা চলছে, তাই যা হওয়ার তাই হচ্ছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
ঘটনায় তৃণমূলকে আক্রমণ করেন বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ। তিনি বলেন, “মহিলাদের ওপর অত্যাচারের ঘটনা প্রতিনিয়ত ঘটে চলেছে। একজনও সাজা পায় না। শাসক দলের ঝাণ্ডার নীচে থাকলে এই অপরাধ কোনওদিনই বন্ধ হবে না।”
সিপিএম নেত্রী কনীনিকা ঘোষ বলেন, “সমাজে দুষ্কৃতী তো থাকেই। তারা দেখে, সরকারের দৃষ্টিভঙ্গি ঠিক কী। একের পর এক ঘটনা ঘটছে।” এই ধরনের ঘটনায় পুলিশ দলের দাসত্ব করছে বলেই মত বাম নেত্রীর।