জয়নগর: সোমবার ভোর পর্যন্তও জীবন চলছিল স্বাভাবিক ছন্দে। অভাবের সংসারে সন্তানের মুখে অন্ন জোগানোর লড়াই চলে রোজ সকালেই। তবে একটা ঘটনা আর কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই যে সব পুড়ে ছারখার হয়ে যাবে, চলে যাবে মাথার ছাদটুকুও, তা ভাবেননি দলুয়াখাকির বাসিন্দারা। তৃণমূল নেতা সইফুদ্দিন খুনের ৩০ ঘণ্টা কেটে যাওয়ার পর একাধিক বাড়ির চেহারা দেখলে শ্মশানপুরী বলে ভুল হবে। বাড়িতে নেই একজনও পুরুষ। আতঙ্ক চোখে-মুখে।তবু বেঁচে থাকার লড়াইটা তো থামালে চলবে না। তাই সেই পোড়া ঘরেই ছড়িয়ে থাকা চাল কুড়োচ্ছেন মহিলারা।
কারও কোলে একরত্তি সন্তান, কোনও বাড়িতে শুকনো মুখে বসে আছে বছর চারেকের নাবালিকা। চাল-ডাল তো দূরের কথা, জল-বিস্কুট জোটাতেই বেগ পেতে হচ্ছে পরিবারগুলিকে। সইফুদ্দিন লস্কর খুনের পর যাঁদের বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ, তাঁরা বলছেন, পুলিশ-প্রশাসন কোনও সাহায্যই করছেন না। চোখে জল নিয়ে মায়েরা বুঝে উঠতে পারছেন না কী খেতে দেবেন সন্তানকে?
এদিন সকালে তাই তাঁরা ঢুকলেন বাড়ির ধ্বংসস্তূপে। সেখানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে আধপোড়া চাল। হাত দিয়ে টেনে সেগুলোই একটা পাত্রে তুলে নিচ্ছেন তাঁরা, এই দৃশ্য দেখা গেল মঙ্গলবার সকালে। জিজ্ঞেস করলে তাঁরা বলেন, কিছু তো খেতে হবে। কেউ তো খেতে দিচ্ছে না। তাঁরা জানাচ্ছেন, রান্নার উনুন পর্যন্ত ভেঙে দেওয়া হয়েছে। তাঁদের বাড়ির পুরুষেরা সবাই আতঙ্কে ঘরছাড়া। তাঁরা কোথায় কেউ জানেন না। মহিলারা বলছেন, “পুলিশ চলে গেলেই ওরা মারধর করবে বলেছে। মেয়েদের ওপর অত্যাচার করবে বলে হুমকি দিচ্ছে।” উপায় কী হবে এবার? কেউ জানেন না। মূলত তৃণমূল কর্মীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলছেন তাঁরা। উল্লেখ্য, খুনের ঘটনার পর সন্দেহে বশে একাধিক বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ।