বিছানায় পড়ে মা, আঁচল আঙুলে পেঁচিয়েই নিথর ৬ বছরের শিশু, পাশে আরও দুই ভাইবোন! বাকরুদ্ধ প্রতিবেশীরা

মর্মান্তিক ঘটনার সাক্ষী থাকলেন পাথরপ্রতিমার (Parthapratima) যোগেন্দ্রপুর এলাকার বাসিন্দারা।

বিছানায় পড়ে মা, আঁচল আঙুলে পেঁচিয়েই নিথর ৬ বছরের শিশু, পাশে আরও দুই ভাইবোন! বাকরুদ্ধ প্রতিবেশীরা
এই ঘরেই তিন সন্তানকে নিয়ে থাকতেন শিউলি
Follow Us:
| Updated on: Mar 17, 2021 | 5:12 PM

দক্ষিণ ২৪ পরগনা: সকাল হতেই উঠোন ঝাঁট দিতে লেগে পড়তেন যে বউটা, তাঁকে বেলা বাড়তেও দেখতে পাননি প্রতিবেশীরা। দীর্ঘক্ষণ বন্ধ ছিল এক চিলতে ঘরের দরজাটাও। স্বামী বাইরে থাকে, টাকা পাঠায় না- এই কথাটা বছর পঁচিশের শিউলির কাছে অনেকবার শুনেছিলেন পাড়ার কাকিমারা। তিন সন্তানকে নিয়ে অনাহারে দিন কাটানোয় শিউলির মনে যে অবসাদ দানা বাঁধছিল, তা জানতেন পাড়ার অনেকেই। তাই এ দিন দরজা বন্ধ থাকায় বিপদ আঁচ করতে পেরেছিলেন তাঁরা। দরজা ঠেলে ভিতরে ঢুকতেই দেখা গেল, বিছানার ওপর পড়ে রয়েছে পরপর চারটে শরীর। মা আর তাঁকে আঁকড়ে শুয়ে ছ’বছরের ছেলে। পাশে আরও দুই সন্তান। বুধবার সকালে মর্মান্তিক ঘটনার সাক্ষী থাকলেন পাথরপ্রতিমার (Parthapratima) যোগেন্দ্রপুর এলাকার বাসিন্দারা। টাকা না পাঠানোয় স্বামীর সঙ্গে ঝগড়া করে তিন সন্তানকে বিষ খাইয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করলেন গৃহবধূ। ছ’বছরের বাচ্চাটির মৃত্যু হয়েছে ইতিমধ্যেই। বাকিরা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

যোগেন্দ্রপুর এলাকার বাসিন্দা বছর বত্রিশের রাজু ভোড় হাওড়া একটা কারখানায় কাজ করেন। বছর পঁচিশের শিউলি ছোট ছোট দুই ছেলে শান্তনু ও সূর্য আর এক মেয়ে পায়েলকে নিয়ে বাড়িতে থাকতেন। কাজের ফাঁকে বাড়ি ফিরতেন রাজু। কিন্তু মাস দুয়েক ধরে রাজু বাড়িতে ফিরছেন না। টাকাও পাঠাচ্ছেন না।

চরম আর্থিক সঙ্কটের মধ্যে পড়েন শিউলি। প্রতিবেশীরা জানাচ্ছেন, টাকা চেয়ে রাজুকে একাধিকবার ফোন করেন শিউলি। তা নিয়ে দিন দুয়েক আগে স্বামীর সঙ্গে ফোনে ঝগড়াও হয় শিউলির। অভিমানে তিন সন্তানকে মঙ্গলবার রাতে কীটনাশক খাইয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন বধূ।

আরও পড়ুন: ব্যাগে ক্লাস টেনের বই, সঙ্গে সাইকেল! লাইনের ধারে কিশোর-কিশোরীকে দেখা গেল চরম অবস্থায়

বুধবার সকালে দরজা ভেঙে তাঁদের উদ্ধার করেন প্রতিবেশীরা। পাথরপ্রতিমা গুরুদাসপুর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে শান্তনুকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকেরা। পরে শিউলি ও তার বাকি দুই সন্তানের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাঁদেরকে ডায়মন্ড হারবার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। তাঁদের অবস্থাও আশঙ্কাজনক।