নরেন্দ্রপুর: স্বামীর মৃত্যু হয়েছে বেশ কয়েক বছর আগে। সম্প্রতি বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছিলেন। তাঁর ঔরসেই সন্তান সম্ভবা হয়ে পড়েন। সন্তান প্রসবও করেন। তারপর লোকলজ্জার ভয়ে সেই সন্তানকে বিক্রি করে দিতে চেয়েছিলেন। আর এদিকে সন্তান সুখ লাভ হয়নি এক দম্পতির। তাঁদের কাছে নিজের সদ্যোজাত সন্তানকে ২ লক্ষ টাকার বিনিময়ে বিক্রি করেছিলেন বলে অভিযোগ। নরেন্দ্রপুর থানা এলাকার খেয়াদহ ২ গ্রাম পঞ্চায়েতের রানাভুতিয়ার ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। এই ঘটনায় জড়িত থাকায় চার জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। রানাভুতিয়ার বাসিন্দা শুক্লা দাস। বছর পাঁচেক আগে তাঁর স্বামীর মৃত্যু হয়। সম্প্রতি এক জনের সঙ্গে পরকীয়া সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন তিনি। ওই মহিলা জানান, একটা সময় গর্ভপাত করানোর কথা ভেবেছিলেন তিনি। সেই বিষয়টি জানতে পারেন প্রতিবেশী শান্তি মণ্ডল ও তাঁর স্বামী তাপস মন্ডল।
তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, শান্তি আয়ার কাজ করেন। সেই সূত্রে অনেকের সঙ্গেই তাঁর চেনাজানা। তিনিই পঞ্চাসায়র থানা এলাকার বাসিন্দা ঝুমা মালিকের পরিচয় করিয়ে দেন। নিসন্তান ঝুমা মালিক জমি বিক্রি করে ২ লক্ষ টাকার বিনিময়ে শুক্লা দাসের ১১ দিনের সন্তানকে কেনেন।
বিষয়টি জানতে পেরে শুক্লা দাসের প্রতিবেশী উত্তম হালদার নরেন্দ্রপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। ঘটনার তদন্তে নেমে শুক্লা দাস, ঘটনায় মধ্যস্থতাকারী শান্তি মণ্ডল ও তাঁর স্বামী তাপস ও ঝুমা মাঝিকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ধৃতদের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩১৭, ৩৭০, ৩৭২, ১২০বি ও ৮১ ধারায় মামলা রুজু করেছে পুলিশ। পুলিশ মনে করছে, ধৃত শান্তি মণ্ডল ও তাঁর স্বামী বাচ্চা বিক্রি চক্রের সঙ্গে জড়িত রয়েছে বলে মনে করছে পুলিশ। তাঁদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
ঠিক চার দিন আগেই উত্তর ২৪ পরগনার পানিহাটির গান্ধীনগর এলাকায় নিজের আট মাসের সন্তানকে বিক্রি করে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে মায়ের বিরুদ্ধে। নেপথ্যে কারণটা অবশ্য আলাদা ছিল। সংসারের অভাব এতটাই, যে দুবেলা দুমুঠো খাওয়ার জোগান করাই অসম্ভব। অভাব অনটনের জেরে ৮ মাসের ছেলেকে টাকার বিনিময়ে বিক্রি করে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে বাবা-মায়ের বিরুদ্ধে। পরে খড়দহ থানার পুলিশ সদ্যোজাতকে উদ্ধার করে। অভিযুক্ত বাবা-মাকে গ্রেফতার করে।
যদিও সদ্যোজাতর মায়ের বক্তব্য, তিনি সন্তান বিক্রি করেননি। তিনি সন্তানকে বড় করার জন্য পরিচিতের হাতে তুলে দিয়েছিলেন। যেহেতু তাঁর স্বামীর মৃত্যু হয়েছে। তিনি আর্থিকভাবে স্বচ্ছল নন। তাই তিনি দিয়েছিলেন। অন্যদিকে, ঝুমার মাঝিরও বক্তব্য, তিনি সাহায্যের জন্য জমি বিক্রি করে টাকা গিয়েছিলেন শান্তিকে।
আয়া শান্তার বক্তব্য, তিনি সেন্টার থেকেই আয়ার কাজ করেন। সেই সূত্রেই ঝুমার সঙ্গে তাঁর পরিচয়। ঝুমা নিঃসন্তান হওয়ায় দুঃখ করতেন। তাই তিনি মধ্যস্থতা করেছিলেন বলে দাবি করেন।