কোচবিহার: খাতায়-কলমে সাপে নেউলে সম্পর্ক কিন্তু আন্দোলনের রাস্তায় ‘ভাই-ভাই’। আচ্ছা একবার ভাবুন তো তৃণমূল-বিজেপি (Trinamool-BJP) কর্মীরা একযোগে স্লোগান দিচ্ছেন? আন্দোলনের মাঝেই মিলেমিশে একাকার হয়ে গিয়েছে লাল-গেরুয়া ঝান্ডা! শুনতে অবাক লাগলেও এই ছবিই দেকা গিয়েছে উত্তরবঙ্গে। রাজ্যে যখন একাধিক ইস্যুতে শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের (Trinamool Congress) বিরুদ্ধে লড়াইতে নেমেছে বিজেপি ও সিপিআইএম ঠিক সেই সময় উল্টো ছবি দেখা গেল কোচবিহারের (Coochbehar) মাথাভাঙ্গা মহকুমার ঘোষকাডাঙ্গাতে। নিজের নিজের দলীয় পতাকা নিয়ে চা শ্রমিকের বেতন বৃদ্ধির দাবি সহ একাধিক দাবিতে মিছিল ও বিক্ষোভ প্রদর্শন করল চা বাগানের তৃণমূল, বিজেপি ও সিপিআইএমের তিন শ্রমিক সংগঠন। যা নিয়ে শোরগোল পড়ে গিয়েছে রাজনৈতিক মহলে।
বাম-ডানের এই মিশ্রিত আন্দোলনের ছবি রাজ্যের রাজনৈতিক ময়দানে বিরল হলেও আন্দোলনকারীদের বক্তব্য পরিস্থিতি তাদের বাধ্য করেছে একযোগে আন্দোলনের রাস্তায় নামতে। রবিবার মাথাভাঙ্গা ২ নং ব্লকের বড় শৌলমারী গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত দোলং চা বাগানে ৩ সংগঠনের তরফে বিক্ষোভ দেখানো হয়। এই বিক্ষোভ মিছিল শেষে তৃণমূল কংগ্রেসের INTTUC , বিজেপি’র BTWU ও সিপিএম’র CITU র শ্রমিক সংগঠন পক্ষ থেকে দলং চা বাগান কর্তৃপক্ষকে স্মারকলিপিও দেওয়া হয় ।
শ্রমিক সংগঠনগুলির দাবি দাবি, গোটা রাজ্যের পাশাপাশি গোটা দেশে যেভাবে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি পাচ্ছে তাতে বর্তমান বেতন কাঠামো জীবনধারণ করা কঠিন হয়ে পড়ছে। অবিলম্বে বাড়াতে হবে দৈনিক মজুরি। শ্রমিকদের সব রকমের সুযোগ সুবিধা দিতে হবে। তাদের দাবি না মানলে পুনরায় আরও বৃহত্তর আন্দোলনে নামতে বাধ্য হবেন তাঁরা।
এই দিনের এই বিক্ষোভ কর্মসূচিতে INTTUC-র পক্ষে উপস্থিত ছিলেন চা-বাগানের ট্রেড ইউনিয়নের সম্পাদক দীনেশ বর্মন, সি আই টি ইউ এর পক্ষে রমেন বর্মন এবং বিজেপি র BTWU-র পক্ষে বিজেপি নেতা হেমচন্দ্র বর্মন। তাঁদের সকলেরই একই দাবি। সমস্ত শ্রমিকদেরই বেতন বাড়াতে হবে। তবে এই তৃণমূল স্তরের আন্দোলনের এই ছবি দেখে নাগরিক মহলে শুরু হয়েছে বিস্তর চর্চা। অনেকেই বলছেন, ভাতের লড়াই যেখানে মূল কথা, সেখানে রঙের লড়াই আদপে গৌন। এমনকী অনেকেই শ্রমিক শ্রেণির এই মানুষগুলির সমস্ত রাজনৈতিক ভেদাভেদ ভুলে একযোগে অত্মপ্রত্যয়ী লড়াইকে কুর্নিশও জানিয়েছেন।