AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

‘কাজ না করে টাকা নিচ্ছি’, করোনায় কর্মহীন পরিবারকে বেতন দান শিক্ষকের

‘বসে বসেই তো বেতন নিচ্ছি। তাই যতদিন না সরকার আমাকে কোনও কাজে লাগাচ্ছে, ততদিন আমার বেতনের একটা অংশ বিভিন্ন সামাজিক কাজে দান করব।' বললেন রায়গঞ্জের স্কুল শিক্ষক (Teacher) মৃণালকান্তি সিংহ।

'কাজ না করে টাকা নিচ্ছি', করোনায় কর্মহীন পরিবারকে বেতন দান শিক্ষকের
করোনা আক্রান্ত পরিবারে খাবার ও ওষুধ পৌঁছে দিচ্ছেন শিক্ষক
| Updated on: May 08, 2021 | 7:44 PM
Share

রায়গঞ্জ: করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে সংক্রমণ এড়াতে ফের রাজ্যের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ। এদিকে আংশিক লকডাউনে আবারও কর্মহীন হয়ে পড়েছে বহু পরিবার। তাঁদের পাশে দাঁড়াতে এগিয়ে এলেন এক স্কুল শিক্ষক। লকডাউনে কর্মহীন এবং কোভিড আক্রান্ত পরিবারকে নিজের বেতনের একটা বড় অংশ দিয়ে সাহায্য করছেন তিনি।

পেশায় শিক্ষক মৃণালকান্তি সিংহ সমাজসেবার নেশা বহুদিনের। উত্তর দিনাজপুর জেলার রায়গঞ্জ শহরের মহারাজা জগদীশনাথ উচ্চ বিদ্যালয়ের ভুগোল বিষয়ের সহ-শিক্ষকের দাবি, “সরকার আমাদের বেতন দিচ্ছে। কিন্তু করোনা পরিস্থিতিতে কোনও কাজ না করে বসে বসে টাকা নিচ্ছি। এই টাকা মানুষের স্বার্থে দেওয়া প্রয়োজন বলে মনে করি।”

রায়গঞ্জের কাছেই রূপাহার থেকে একটু দূরে মৃণালবাবুর গ্রামের বাড়ি। বর্তমানে তিনি রায়গঞ্জের মহারাজা জগদীশ নাথ হাই স্কুলের সহ শিক্ষক হিসেবে কর্মরত। লকডাউন আর কোভিড পরিস্থিতিতে গত বছর থেকেই দীর্ঘদিন বন্ধ রয়েছে স্কুলের পঠন-পাঠন। তবুও মৃণাল বাবুর যেন কথা বলার সময় নেই। করোনা আক্রান্ত পরিবারগুলির কাছে খাবার-ওষুধ পৌঁছে দিচ্ছেন। খোঁজ নিয়ে দেখছেন কার কী সমস্যা। তেমনি লকডাউনে কর্মহীন পরিযায়ী শ্রমিকদেরও নিজের সামর্থ্য মতো কিছু আর্থিক সাহায্য করে চলেছেন এই শিক্ষক।

তাঁর কথায়, ‘বসে বসেই তো বেতন নিচ্ছি। তাই যতদিন না সরকার আমাকে কোনও কাজে লাগাচ্ছে, ততদিন আমার বেতনের একটা অংশ বিভিন্ন সামাজিক কাজে দান করব।’ রায়গঞ্জ শহরের করোনা আক্রান্ত পরিবারগুলোর পাশে দাঁড়ানোর আপ্রাণ চেষ্টা তাঁর। সোশ্যাল মিডিয়াতেও নিজের এই ইচ্ছের কথা জানিয়ে পোস্ট করেছেন মৃণালবাবু। তাঁর বক্তব্য, ‘শিক্ষকরা সমাজ গড়ার কারিগর। তাই সমাজ যখন ঘোর বিপদের মধ্যে দিয়ে চলছে, তখন আমাদের মত শিক্ষকদের এগিয়ে আসা উচিত।’ তাঁর দাবি, বর্তমান পরিস্থিতিতে শহরের বন্ধ স্কুল গুলিকে সেফ-হোম করে সেখানে ডাক্তার নার্সদের সাহায্য করার জন্য শিক্ষকদেরও কাজে লাগানো হোক।

আরও পড়ুন: চলল বেপরোয়া কিল-চড়-ঘুষি! সহ শিক্ষকদের ‘মারে’ স্কুলেই জ্ঞান হারালেন প্রধান শিক্ষক

স্বামীর এই কর্মকাণ্ডে তাঁর পাশে রয়েছেন স্ত্রী রুমকী মোদক। তাঁর কথায়, ” উনি বেতনের ১০০ শতাংশ সমাজের এই কঠিন পরিস্থিতির জন্য দান করলেও আমার কোনও সমস্যা নেই। আমার ছোট ব্যবসা দিয়ে সংসার চালিয়ে নেব।” তিনি আরও যোগ করেন, “ওঁর মতো সসস্ত শিক্ষক এগিয়ে এলে, একে অন্যের পাশে থাকলে এই কঠিন পরিস্থিতি সামলে উঠতে পারব।” মৃণালবাবুর এহেন উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন সমাজ কর্মীরাও।