পাঞ্জিপাড়া: প্রিজন ভ্যান থেকে নেমে ফিল্মি কায়দায় দুই পুলিশকর্মীকে গুলি। গোটা রাত পেরিয়ে গেলেও এখনও অধরা খুনের আসামী সাজ্জাত। কোথা থেকে আগ্নেয়াস্ত্র পেল সাজ্জাত? কোর্ট লক আপে, নাকি প্রিজন ভ্যানে ওঠার ঠিক আগের মুহূর্তেই কেউ আগ্নেয়াস্ত্র দেয় সাজ্জাতকে? এখনও কিনারা করতে পারেনি পুলিশ। খতিয়ে দেখা হচ্ছে কোর্ট চত্বরের সিসিটিভি ফুটেজ। কোথায় পালাল সাজ্জাত? বিহার, নেপাল নাকি বাংলাদেশ? নাকা তল্লাশি চলছে। কিন্তু কোনওরকমভাবেই কোনও ‘ক্লু’ পাওয়া যায়নি।
ইতিমধ্যেই সাজ্জাতের নামে পুরস্কার ঘোষণা করেছে পুলিশ। সাজ্জাতকে যদি খুঁজে দেওয়া যায়, তাহলে ২ লক্ষ টাকা পর্যন্ত পুরস্কার দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছে পুলিশ। পুলিশ প্রথমে দাবি করেছিল, কোনও বন্দি ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেনি। আসামির কাছেই বন্দুক ছিল। পরে তদন্তে এটা জানতে পারে, আব্দুল মাজিদ নামে এক আরও ব্যক্তি সাজ্জাতকে সাহায্য করেছিল আগ্নেয়াস্ত্র দিতে। তাঁকে খুঁজে দিলেও ২ লক্ষ টাকা পুরস্কার দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছে পুলিশ। জেলা সংশোধনাগারের সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। দফায় দফায় যাচ্ছেন আধিকারিকরাও।
প্রাক্তন পুলিশ কর্তা অরিন্দম আচার্য অবশ্য় রাজ্য পুলিশ প্রশাসনের ব্যর্থতার একটি দিক তুলে ধরেছেন। তাঁর বক্তব্য, “স্কোয়াড পার্টি সম্পূর্ণ ব্যর্থ। গাড়িতে তোলার আগে নামাবার সময়ে বডি সার্চ করার কথা। সেটা করা হয়নি। রায়গঞ্জে বিচারাধীন ছিল। ইসলামপুর মহকুমা আদালতে পেশ করা হয়। গাড়িতে ওঠার পর বাথরুম পেয়েছে বলে যায়। হ্যান্ডস কাফ পরানো যাবে না বলে হিউম্যান রাইটসে বলা যাবে। কিন্তু ক’জন পুলিশ অফিসার জানেন যে কোর্ট থেকে অর্ডার নিয়ে হ্যান্ডস কাফ পরানো যায়। ”
অন্যদিকে, এই বিষয়টিকে ইস্যু করে বিজেপি নেতা জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “এ কোন রাজ্যে আমরা বাস করছি। রাজ্যের পুলিশমন্ত্রী যেখানে খোদ মুখ্যমন্ত্রী, সেখানে কীভাবে দুষ্কৃতী পুলিশকে গুলি করে পালিয়ে গেল!”
পাঞ্জিপাড়ার কালীবাড়ি এলাকায় যে জায়গায় প্রিজন ভ্যান দাঁড় করানো হয়েছিল, সেখান থেকে খুব বেশি দূরে নয় বাংলাদেশ সীমান্ত। অন্যদিকে, বিহার সীমান্ত। কিছুটা এগোলে নেপালে চলে যাওয়া যায়। ফলে বাথরুম করার নামে গাড়ি ঠিক কোন জায়গায় দাঁড় করাতে হবে, তা সব আগে থেকেই প্ল্যানিং করে রেখেছিল সাজ্জাত। তদন্তকারীরা মনে করছেন, এটা একদিন কিংবা কয়েক ঘণ্টার মধ্যে প্ল্যানিং করা নয়। দীর্ঘদিন ধরেই রেইকি করে গোটা বিষয়টি সাজানো হয়েছে।