কালিয়াগঞ্জ: সোমবার জঙ্গী সন্দেহে ধরা পড়ে কালিগঞ্জের এক যুবক মুক্তা মাহাত। তার বিরুদ্ধে পাকিস্তান, প্যালেস্তাইন,ইরান সহ একাধিক দেশে ভারতীয় নৌবাহিনী ও দেশের অভ্যন্তরীণ তথ্য পাচারের অভিযোগ উঠেছিল। আর মুক্তা গ্রেফতার হতেই উঠে আসছে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য। কেন গ্রামের তরুণ সম্প্রদায় এই খপ্পরে পা দিচ্ছে? কেন এত সহজেই সন্ত্রাণসবাদীদের নজরে পড়ছেন তাঁরা?
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, রাতারাতি বেশি উপার্জন করার লোভেই প্রতারণায় পা দিচ্ছে গ্রাম্য যুবক যুবতীরা। আর টাকা লেনদেন করতে গিয়ে জঙ্গী সংগঠনের খপ্পরে পড়ছে তাঁরা। স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, এলাকায় অনেকেই অনলাইন গেম খেলছে। রাতারাতি বড়লোক হতেই প্রলোভনের ফাঁদে পা দিচ্ছে আর এই ঘটনায় আতঙ্কিত এলাকাবাসীরাও। রায়গঞ্জ করোনেশন উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষক শুভাশিস বসাকের দাবি, “অনলাইন গেম মাথা ব্যাথার কারণ অভিভাবকদের। কম টাকা বিনিয়োগ করে অত্যাধিক লাভ হয়। যেহেতু এখন অধিকাংশই বেকার। তাই কম সময়ে লাভ করতে এই খেলায় ঝুঁকবে এটাই স্বাভাবিক। তবে এর ভিতরে জঙ্গী যোগ কতটা স্পষ্ট সেটা তদন্ত সাপেক্ষ বিষয়।”
এ দিকে, মুক্তা ধরা পড়তেই শুরু হয়েছে শাসক বিরোধী তরজাও। শাসক দল তৃণমূলের মদতেই এসব কার্যকলাপ চলছে বলে দাবি বিরোধীদের। তাছাড়া রাজ্য পুলিশের গোয়েন্দারা কী করছে? পুলিশ ও গোয়েন্দারা ব্যর্থ বলে অভিযোগ তুলে সড়ব কংগ্রে-বিজেপি। জেলা বিজেপি সভাপতি বাসুদেব সরকার বলেন, “সারা দেশে যত নাশকতামূলক কাজ হয় তার শেকড় বাংলায়। গরুপাচার, জাল নোট সব বাংলায়। এত কিছু হচ্ছে আর রাজ্য পুলিশ নাকে তেল দিয়ে ঘুমচ্ছে?” যদিও পাল্টা দিয়েছে রাজ্যের শাসকদলও। অনলাইন গেম নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্রের হাতে। সংসদে সাংসদদের নিরাপত্তা নেই, দেশের নিরাপত্তার কী হাল তা এই ঘটনাতেই স্পষ্ট।সচিন সিংহ রায়, তৃণমূলের জেলা চেয়ারম্যান বলেন, “এটা বিরোধীদের রোগ। ওরা সবেতেই তৃণমূলকে কটাক্ষ করে। আর অনলাইন গেম কেন তুলে দিচ্ছে না কেন্দ্রীয় সরকার।”
অপরদিকে, মুক্তা মাহাতর দাদা জানিয়েছেন, তাঁর ভাই নির্দোষ। সে কয়েক মাস আগে মুম্বই গিয়েছিল কাজে। কিছুদিনের মধ্যেই ফিরে এসে অনলাইনের ব্যবসা শুরু করে। মাত্র দু হাজার টাকার লেনদেনেই তাকে এভাবে খেসারত দিতে হচ্ছে। উল্লেখ্য, মুম্বইয়ে গৌরব অর্জুন পাতিল নামে একজনকে গ্রেফতারের পরেই কালিয়াগঞ্জের মুক্তার নাম উঠে আসে গোয়েন্দাদের হাতে। এরপর মুম্বই-এর অ্যান্টি টেরোরিজম স্কোয়াডের হাতে গ্রেফতার হয় উত্তর দিনাজপুরের কালিয়াগঞ্জের মুক্তা মাহাত।