ঝাড়গ্রাম: বঙ্গ নির্বাচনের মহারণে, দলীয় প্রচারের জন্য মিছিলের অনুমতি নেওয়াই ছিল। মিলেছিল প্রশাসনিক সম্মতিও। তা সত্ত্বেও, তৃণমূলকে (TMC) মিছিল করতে না দেওয়া এবং অনুমতি ছাড়া বিজেপির সভা করার প্রতিবাদে অবস্থান বিক্ষোভকে বেছে নিলেন ঘাসফুলের তারকা প্রার্থী বীরবাহা হাঁসদা (Birbaha Hansda)। তাঁর বিক্ষোভের জেরে একরকম বাধ্য হয়েই ‘রণে ভঙ্গ’ দিলেন বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী (suvendu adhikari)।
তৃণমূলের (TMC) অভিযোগ, মঙ্গলবার দুপুর তিনটে থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত মিছিল করার কথা ছিল। ওই সময়েই রামগড়ে বিজেপির তরফে শুভেন্দুর সভা করার কথা। তৃণমূলের (TMC) অভিযোগ, বিজেপি সভার জন্য কোনও অনুমতি নেয়নি। কিন্তু, ঘাসফুলের মিছিলের সময়েই তারা সভার প্রস্তুতি শুরু করে। ফলে ভেস্তে যায় শাসক শিবিরের মিছিল।
প্রশাসনিক পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ তুলে রামগড়ের রাস্তায় বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন বীরবাহা ও তাঁর সমর্থকেরা। এমনকী, নির্বাচন কমিশনের জেলা অফিসেও অভিযোগ জমা দেয় তৃণমূল। পরিস্থিতি ক্রমশ উত্তপ্ত হয়ে উঠলে লালগড় থানার সামনে থেকেই শুভেন্দু অধিকারীকে (Suvendu Adhikari) ফিরিয়ে দেয় পুলিশ। মুলতুবি রাখা হয় সভা।
এই ঘটনায় রীতিমতো জয়ের মুখ দেখছেন বীরবাহা। তিনি বলেন, ‘আমরা নিয়ম মেনেই মিছিল করতে চেয়েছিলাম। সেখানে অনুমতি ছাড়া সভা করতে এসেছিল শুভেন্দু অধিকারী। পারেনি, রণে ভঙ্গ দিয়েছে। এই জয় নিঃসন্দেহে তৃণমূলের।’ যদিও এই ঘটনায় জঙ্গলমহলের স্বঘোষিত ‘কুটুম’ শুভেন্দুর কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশের দাবি, শুভেন্দু শুধু ঝা়ড়গ্রাম নয়, গোটা মেদেনীপুরেই বড় ফ্যাক্টর। নন্দীগ্রাম আন্দোলনের সময় থেকেই সংখ্যালঘু ভোটারদের মধ্যে বিশেষ প্রভাব তৈরিতে সক্ষম হন শুভেন্দু। পশ্চিম মেদিনীপুর এবং ঝাড়গ্রামের জঙ্গলমহলে ২০১১-র পর শান্তি প্রক্রিয়ার সময় শুভেন্দু অধিকারীই হয়ে ওঠেন তৃণমূল কংগ্রেসের মুখ। ফলে, ঝাড়গ্রাম জুড়ে শুভেন্দুর এই নিজস্ব ‘ক্যারিশমা’-ই বিজেপি ভোটব্যাঙ্কের পক্ষে আনতে বিভিন্ন সময়ে ও সভায় নিজেকে জঙ্গলমহলের ‘কুটুম’, ‘ঘরের ছেলে’, ‘ভূমিপুত্র’ বলতে কসুর করেন না এই বিজেপি নেতা। তবে মঙ্গলবার রামগড়ের এই ঘটনায়, ‘শুভেন্দু-ফ্যাক্টর’ কতটা জোরালো তা নিয়ে সংশয়ী রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। এই ঘটনায়, স্থানীয় বিজেপি (BJP) নেতৃত্বের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।