আসানসোল: আসানসোল সংশোধনাগারে টানা জিজ্ঞাসাবাদের পর অনুব্রত মণ্ডলকে (Anubrata Mondal) হেফাজতে নিল ইডি। বৃহস্পতিবার তাঁকে ‘শোন অ্যারেস্ট’ করা হয়েছে। এবার ট্রানজিট রিমান্ডের আবেদন জানাতে পারে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। তাঁকে নিয়ে যাওয়া হতে পারে দিল্লিতে। শুক্রবারই দিল্লির রাউস অ্যাভেনিউ-এর পিএমএলএ কোর্টে অনুব্রতকে গ্রেফতারের বিষয়ে জানিয়ে প্রোডাকশন ওয়ারেন্টের আবেদন জানাতে পারে ইডি। বৃহস্পতিবার ইডির তিন আধিকারিক আসানসোলে সংশোধনাগারে গিয়ে প্রায় সাড়ে ৫ ঘণ্টা অনুব্রতকে জেরা করেন। সূত্রের খবর, এখনও ইডির অ্যারেস্ট মেমোতে সই করেননি অনুব্রত মণ্ডল। যদিও এই মামলা যেহেতু পিএমএলএ, সেক্ষেত্রে তদন্তকারী সংস্থা বেশ কিছু অতিরিক্ত কিছু সুযোগ সুবিধা পায়। সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে অ্যারেস্ট মেমোতে অনুব্রত সই না করলে তাঁকে দিল্লি নিয়ে যাওয়া আটকাবে কি না তা নিয়ে আইনি বিতর্ক রয়েছে।
তবে ইডি শুক্রবার রাউস অ্যাভিনিউ আদালতে ইডি প্রোডাকশন ওয়ারেন্টের পিটিশন জমা দেবেন। সেই প্রস্তুতিও চলছে বলে সূত্রের খবর। অন্যদিকে মনে করা হচ্ছে অনুব্রত মণ্ডলের আইনজীবীরা হয়ত শুক্রবার আসানসোল আদালতে বা হাইকোর্টে যেতে পারেন দিল্লি যাওয়া রুখতে।
এ প্রসঙ্গে আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য বলেন, “আইনগতভাবে যে কোনও আদালতে যেতেই পারেন। তবে তাঁকে তদন্তের স্বার্থে গ্রেফতার করা হয়েছে। সেই গ্রেফতারির বিরুদ্ধে জামিনের আবেদন করতে পারেন তিনি। এছাড়া অন্য রাস্তা নেই। এই তদন্ত ইডি যত দ্রুত শেষ করবে, তত তথ্য বেরোবে।”
গরু পাচার মামলায় ইতিমধ্যেই সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতার হয়ে জেলেই আছেন অনুব্রত। এরইমধ্যে আবার ইডির গ্রেফতারি। এ প্রসঙ্গে বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্যের বক্তব্য, “এটা হতেই পারে। কারণ, সিবিআইয়ের তদন্তক্ষেত্র ভিন্ন, ইডির তদন্তক্ষেত্র ভিন্ন। ইডি মানি লনডারিং অ্যাক্টে তদন্ত করছে। সিবিআই বা অন্য কোনও এজেন্সি এ বিষয়ে তদন্ত করতে পারে না। এটা একেবারেই আইনসঙ্গত।” এ প্রসঙ্গে তিনি তুলে ধরেন মানিক ভট্টাচার্যের কথা। যিনি সুপ্রিম কোর্ট থেকে সিবিআই তদন্তের ক্ষেত্রে রক্ষাকবচ নিয়ে এলেও ইডির হাতে গ্রেফতার হন। সেই গ্রেফতারে সুপ্রিম কোর্ট সহমত জানিয়েছেন।
ইডির গ্রেফতারি প্রসঙ্গে বিজেপির সর্বভারতীয় সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, “পশ্চিমবাংলায় যতরকমের আর্থিক কেলেঙ্কারি আছে, হিংসা হয়েছে, সব জায়গায় কোনও না কোনওভাবে অনুব্রত মণ্ডলের যোগ রয়েছে। সেগুলো ধীরে ধীরে প্রমাণ হচ্ছে। সে জন্য যে যে এজেন্সি যেসব বিষয় নিয়ে তদন্ত করছে তথ্য়ও সামনে আনছে।”
অন্যদিকে তৃণমূল বিধায়ক তাপস রায় বলেন, “বিচারাধীন বিষয় এটা। সিবিআই থেকে হয়ত ইডি নিয়েছে। সে তো আমাদের দলের কিছু নেতা মন্ত্রীকে বিজেপি বা কেন্দ্রের সরকার টার্গেট করেছেই। এজেন্সি দিয়ে তাঁদের হেনস্থা করছে। দেখা যাক! তদন্তসাপেক্ষ বিষয়। ইদানিং তথাকথিত বিজেপির ছোট মাঝারি নেতারা যা যা বলছেন, সেগুলিই ঘটছে। এটাই আশ্চর্যের। তাঁরা আগেই জানতে পেরে যাচ্ছেন? নাকি তাঁদের অঙ্গুলিহেলনেই এজেন্সি কাজ করছে?”