জলপাইগুড়ি: ফের বন্যপ্রাণী নির্যাতনের অভিযোগ উঠল ধূপগুড়ির (Dhopguri) দুরামারির উত্তর শালবাড়ির বাসিন্দাদের বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার সকালে, একটি জ্যান্ত চিতাবাঘকে (leopard) বাঁশে বেঁধে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়। পরে বন দফতর এসে বাঘটিকে উদ্ধার করে।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, মঙ্গলবার সকালে একটি ছোট চিতা বাঘকে (Leopard) এলাকায় দেখতে পেয়ে সকলে মিলে জমায়েত হয়ে বাঘটিকে দড়ি দিয়ে বাঁশে বেঁধে ঝুলিয়ে দেন। বাঁধা অবস্থায় বাঘটিকে দেখতে ভিড় জমান এলাকাবাসী। সেইসময়, আরও একটি চিতাবাঘ (leopard) ঝোপ থেকে বেরিয়ে আসে। স্থানীয়রা, দ্বিতীয় বাঘটিকে লাঠি নিয়ে তাড়া করতেই সেটি ঝোপের আড়ালে চলে যায়। খবর দেওয়া হয় বন দফতরকে।
বনদফতর সূত্রে খবর, বাঁশে বাঁধা চিতাবাঘটিকে (Leopard) উদ্ধার করা হয়েছে। বাঘটির গায়ে নির্যাতনের চিহ্ন রয়েছে। অন্য বাঘটিকে ঘুমপাড়ানি গুলি করা হয়। কয়েক ঘণ্টার ম্যারাথন প্রচেষ্টার পর দুটি বাঘকেই উদ্ধার করতে সক্ষম হয় বন দফতর। দুটি বাঘকেই উদ্ধার করে লাটাগুড়ি প্রকৃতি পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। জানা গিয়েছে, দুটি চিতাবাঘই মাঝ বয়সী। একটি পুরুষ ও অন্যটি স্ত্রী। জোড়া চিতাবাঘকে দেখতে ভিড় জমে যায় এলাকায়।
আরও পড়ুন: চিতা বাঘের গোঁফ উপড়ে নিল গ্রামবাসীরা
বন্যপ্রাণীর উপর এ হেন অত্যাচারে রীতিমতো ক্ষুব্ধ পরিবেশপ্রেমীরা। ওদলাবাড়ির পরিবেশ প্রেমী সংস্থা ন্যাসের কর্মকর্তা নফসর আলী বলেন, ‘এইভাবে বন্যপ্রাণী আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়া উচিত নয়। যেভাবে চিতাবাঘকে বাঁশে বেঁধে টেনে হিঁচড়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে, তা পুরোপুরি বেআইনি। বনদফতরের উচিত এ বিষয়ে কড়া পদক্ষেপ করা।’
বনদফতরের অভিযোগ, বারবার গ্রামবাসীদের সতর্ক করা হয়েছে। কিন্তু, তারপরেও নিজের হাতেই আইন তুলে নেন তাঁরা। সঙ্গে কাজ করে একাধিক কুসংস্কার। কিছুদিন আগেই নাগরাকাটাতে আরও একটি চিতাবাঘের গোঁফ উপড়ে নেওয়া হয়েছিল। মঙ্গলবার সকালে, স্থানীয়রা জ্যান্ত যে চিতাবাঘটিকে ধরে বেঁধে নির্যাতন চালান, তাতে বাঘটি পাল্টা আক্রমণ করতে পারত, সেই ক্ষেত্রে দায়ভার কে নিত? গ্রামাবাসীদের এ হেন আচরণে রীতিমতো ক্ষুব্ধ বন দফতর।
জলপাইগুড়ি (Jalpaiguri) অনারারি ওয়াইল্ডলাইফ ওয়ার্ডেন সীমা চৌধুরী জানান, মোরাঘাট জঙ্গল থেকে চিতা বাঘ দুটি দুরামারির উত্তর শালবাড়ি এলাকায় ঢুকে পড়ে। একটিকে গ্রাম বাসীরা উদ্ধার করে নির্যাতন চালায়। দ্বিতীয় বাঘটির পায়ে লাঠির আঘাত লেগেছে। দুটি বাঘকেই লাটাগুড়ি প্রকৃতি পর্যটন কেন্দ্রে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়েছে।