Portugal: যমজ দুই পুত্রের দুই আলাদা বাবা, এমনও হয়! কী করেছিলেন তাদের মা?
একই মায়ের গর্ভে জন্ম নিল যমজ দুই পুত্র। অথচ ডিএনএ পরীক্ষায় দেখা গেল তাদের বাবা দুই ভিন্ন পুরুষ!
লিসবন: যমজ সন্তানের জন্ম দিয়েছেন মা। কিন্তু, দুই সন্তান দুই ভিন্ন বাবার ঔরসজাত, অর্থাৎ, দুই সন্তানের বাবা দুই ভিন্ন পুরুষ! এমনটাও কি হয়? হ্যাঁ শুনে বিস্মিত হওয়াটাই স্বাভাবিক। কিন্তু, কোনও গল্পকথা নয়। বাস্তবেই এমন ঘটনা ঘটেছে। এক ১৯ বছর বয়সী মহিলা একই দিনে দুই ভিন্ন পুরুষের সঙ্গে যৌন মিলনের পরে এই দুই যমজ সন্তানের জন্ম দিয়েছেন। তাদের পিতা ওই দুই ভিন্ন পুরুষ।
১৯ বছরের ওই মহিলা পর্তুগালের গোইয়াস রাজ্যের ছোট্ট শহর মিনিরোসের বাসিন্দা। গর্ভধারণের আট মাস পর, যে দুই পুরুষের সঙ্গে তিনি যৌন মিলন করেছিলেন, তাঁদের একজনের ডিএনএ পরীক্ষা করান তিনি। তাঁর দৃঢ় বিশ্বাস ছিল, ওই ব্যক্তিই তাঁর দুই পুত্রসন্তানের জৈবিক বাবা। কিন্তু ফলাফল এসেছিল অবিশ্বাস্য। দেখা যায়, দুই পুত্র সন্তানের মধ্যে একজনের সঙ্গে তাঁর ডিএনএ মিলছে, অপরজনের সঙ্গে নয়।
ওই মহিলা বলেছেন, টি প্রকাশ করেছে: “ডিএনএ পরীক্ষার ফল দেখে আমি খুবই অবাক হয়েছিলাম। এরকম যে ঘটতে পারে, সেই সম্পর্কে আমার কোনও ধারণাই ছিল না। বাচ্চারাও দেখতে একেবারে একই রকম। এরপর আমার মনে পড়ে, ওই দিন আমি অন্য এক পুরুষের সঙ্গেও যৌন সম্পর্ক করেছিলাম। এরপর, তাঁকে ডিএনএ পরীক্ষা করার জন্য ডেকেছিলাম আমি। তাঁর ডিএনএ-র সঙ্গে, আমার অপর সন্তানের ডিএনএ মিলে গিয়েছিল।”
তবে শে।ষ পর্যন্ত ওই যমজ পুত্র সন্তানের জন্মের শংসাপত্রে মায়ের সঙ্গে উভয় সন্তানের বাবা হিসেবে প্রথম পুরুষটির নামই নিবন্ধিত করা হয়েছে। ওই মহিলা বলেছেন, “তিনি (প্রথম পুরুষটি) তাদের দুজনেরই (দুই সন্তানের) অত্যন্ত যত্ন নেন। তাদের লালন পালনে আমায় খুবই সাহায্য করেন। ওদের প্রয়োজনীয় সমস্ত সহায়তা দেন।”
অস্বাভাবিক গর্ভাবস্থা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে অধ্যয়ন করেন পর্তুগিজ গবেষক ডাক্তার টুলিও জর্জ ফ্রাঙ্কো। তিনি বলেছেন, ওই মহিলার ক্ষেত্রে যেটা ঘটেছে, তা অত্যন্ত বিরল এক গর্ভাবস্থা। বৈজ্ঞানিক পরিভাষায় একে বলে ‘হেটেরোপ্যারেন্টাল সুপারফেকুন্ডেশন’। পর্তুগিজ সংবাদমাধ্যমকে তিনি বলেছেন, “একই মায়ের দুটি ডিম্বানু, ভিন্ন দুই পুরুষের শুক্রাণু দ্বারা নিষিক্ত হলে এই ধরনের গর্ভাবস্থা ঘটে। শিশুরা মায়ের জেনেটিক উপাদান ভাগ করে নেয়, কিন্তু তারা ভিন্ন প্লাসেন্টায় বেড়ে ওঠে। এই ক্ষেত্রে ওই মহিলার গর্ভাবস্থা খুবই মসৃণ ছিল, কোনো জটিলতা ছিল না। দুই পুত্রসন্তানই সুস্থভাবে জন্মগ্রহণ করেছে এবং তাদের কোনও স্বাস্থ্যগত সমস্যাও ছিল না।” এই ঘটনাটি এখনও পর্যন্ত মানুষের ইতিহাসে নথিভুক্ত হওয়া ২০তম ‘হেটেরোপ্যারেন্টাল সুপারফেকুন্ডেশনের’ ঘটনা বলে জানিয়েছেন তিনি।