AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

Bangladesh: হাসিনার বিদায় স্থির হয়েছিল ২ অগস্টই, এই সেনাকর্তারাই ছিলেন নেপথ্য নায়ক

Bangladesh: তাঁর আচমকা পদত্যাগ, শুধু সেই দেশের মানুষকে নয়, গোটা বিশ্বের মানুষকেই বিস্মিত করেছিল। জানা যায়, তাঁকে দেশ ছাড়ার জন্য মাত্র ৪৫ মিনিট সময় দিয়েছিল বাংলাদেশ সেনা। তার আগে পর্যন্ত অবশ্য হাসিনা প্রশাসনের কথাতেই চলছিল সেনা। হঠাৎ কী ঘটেছিল? জানা গিয়েছে, ২ অগষ্টই এক কঠিন পরিস্থিতির মুখে পড়েছিলেন বাংলাদেশের সেনাপ্রধান, আর সেখানেই ঠিক হয়ে গিয়েছিল হাসিনার বিদায়।

Bangladesh: হাসিনার বিদায় স্থির হয়েছিল ২ অগস্টই, এই সেনাকর্তারাই ছিলেন নেপথ্য নায়ক
হাসিনা বিদায়ে জেনারেল জামানের থেকেও বড় ভূমিকা ছিল জুনিয়র অফিসারদেরImage Credit: TV9 Bangla
| Updated on: Aug 18, 2024 | 9:59 PM
Share

ঢাকা: জুলাই মাস থেকে চলছিল শিক্ষার্থীদের আন্দোলন। অগস্টের শুরুতে তীব্রতা বেড়েছিল সেই আন্দোলনের। ছাত্র নেতৃত্ব দেশজুড়ে অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দিয়েছিল। দাবি তুলেছিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ইস্তফার। তারপর, ৫ অগস্ট প্রধানমন্ত্রীপদে ইস্তফা দিয়ে ভারতে চলে এসেছিলেন হাসিনা। তাঁর আচমকা পদত্যাগ, শুধু সেই দেশের মানুষকে নয়, গোটা বিশ্বের মানুষকেই বিস্মিত করেছিল। জানা যায়, তাঁকে দেশ ছাড়ার জন্য মাত্র ৪৫ মিনিট সময় দিয়েছিল বাংলাদেশ সেনা। তার একদিন আগেই অবশ্য সেনা প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান জানিয়েছিলেন, সাধারণ মানুষের উপর আর গুলি চালাবে না বাংলাদেশ সেনা। তার আগে পর্যন্ত অবশ্য হাসিনা প্রশাসনের কথাতেই চলছিল সেনা। হঠাৎ কী ঘটেছিল? সাপ্তাহিক সংবাদমাধ্যম, ‘দ্য ইউক’-এর এক প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, ২ অগষ্টই এক কঠিন পরিস্থিতির মুখে পড়েছিলেন বাংলাদেশের সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান। সেনার তরুণ অফিসারদের চরম ক্ষোভ সামাল দিতে হয়েছিল তাঁকে।

সেই সময়, বাংলাদেশের পরিস্থিতির ক্রমে অবনতি ঘটছিল। এক মাসের মধ্যে সামাল দেওয়ার জন্য, হাসিনা প্রশাসন মোতায়েন করেছিল সেনাবাহিনীকে। এই অবস্থায় বাংলাদেশের চলমান পরিস্থিতি নিয়ে সেনাকর্তাদের সঙ্গে আলোচনার জন্য, ২ অগস্ট তাঁদের এক বৈঠকে ডেকেছিলেন বাংলাদেশের সেনাপ্রধান। বৈঠক সম্পর্কে অবগত এক সূত্রকে উদ্ধৃত করে দ্য উইক জানিয়েছে, সেখানেই বাংলাদেশি নাগরিকদের উপর গুলি চালানো নিয়ে ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলেন বাংলাদেশ সেনার বিভিন্ন স্তরের অফিসাররা। সেনাকর্তাদের সংযম রাখতে বলেছিলেন জেনারেল জামান। তাদের রাগ কমাতে সেনাপ্রধান বলেছিলেন, “যদি অগণতান্ত্রিক উপায়ে ক্ষমতার হস্তান্তর করা হয়, তাহলে আমাদের দেশ কেনিয়া বা আফ্রিকার অন্যান্য দেশের মতো হয়ে যেতে পারে। আমাদের দেশে ১৯৭০ সালের পর এমন গণ-বিক্ষোভ আর কখনও হয়নি। এটি একটি অনন্য ঘটনা। আমাদের সবাইকে ধৈর্য ধরতে হবে।”

বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর মনোভাবে তার আগেই অনেক বদল ঘটে গিয়েছিল। জেনারেল জামানের জন্য অবস্থাটা আরও অস্বস্তিকর ছিল। কারণ, হাসিনাই তাঁকে নিযুক্ত করেছিলেন। তাছাড়া তিনি ছিলেন হাসিনার খুড়তুতো বোনের স্বামী। শুরুতে তিনি জানিয়েছিলেন, বাংলাদেশে স্বাভাবিক অবস্থা পুনরুদ্ধারের জন্য সেনাবাহিনীর মোতায়েন করাটা ন্যায্য। বলেছিলেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ভাল কাজ করছে। ১,৭১৯ রাউন্ড গুলি চালিয়েছে। ফাঁকায় গুলি ছুড়েছে ১৪,০০০ রাউন্ড। একত্রিশটি জায়গায় হিংসা সামাল দিয়েছে। কিন্তু, সেনার কাজের বৈধতা সম্পর্কে প্রশ্ন তুলেছিলেন বাংলাদেশ সেনার জুনিয়র অফিসাররাই।

মহম্মদ আলি হায়দার ভূঁইয়া নামে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর এক তরুণ মেজর সেনা মোতায়েনের পদক্ষেপ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। পবিত্র কোরান উদ্ধৃত করেছিলেন তিনি। বৈঠকের মধ্যেই দমন-পীড়নের বিরুদ্ধে ঈশ্বরের করুণা ভিক্ষা করেন এবং এই হিংসায় জড়িত না হওয়ার কথা বলেন। একজন জুনিয়র অফিসারের এহেন আচরণ দেখে স্তম্ভিত হয়ে গিয়ছিলেন জেনারেল জামান। তাঁর মুখ দিয়ে শুধু একটাই শব্দ বেরিয়েছিল, ‘আমিন’ (তাই হোক)। শুধু মেজর মহম্মদ আলি হায়দার ভূঁইয়া একাই নন, সেনাবাহিনীর প্রতি জনসাধারণের ক্ষোভ যে ক্রমে বাড়ছে, তা জানিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন মহিলা অফিসার, মেজর হাজেরা জাহান-ও। সন্তান হারানোর শোক বেদনা এবং ন্যায়বিচারের প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দিয়েছিলেন তিনি। তাঁর সঙ্গেও সম্মত হয়েছিলেন সেনা প্রধান। এয়ার ডিফেন্স রেজিমেন্টের কমান্ডিং অফিসার, লেফটেন্যান্ট কর্নেল মাহবুব জানান, সেনার প্রতি জনসমর্থন কমছে। তাই সেনা প্রত্যাহার করা উচিত। অন্যদিকে, চট্টগ্রামের এক সেনাকর্তা পরামর্শ দেন, আহত ছাত্রদের সমর্থন করলে সেনাবাহিনীকে দ্রুত ভাবমূর্তি পুনরুদ্ধার করতে পারবে।

অধীনস্ত সেনাকর্তাদের মনোভাব বুঝতে পেরেছিলেন জেনারেল জামান। এরপরই, হাসিনা প্রশাসনের প্রতি সমর্থনের হাত সরিয়ে নিয়েছিল বাংলাদেশ সেনা। আর সেনার হাত উঠে যাওয়ার পরই, হাসিনার বিদায় স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল। ২ অগস্টের ওই বৈঠকের পরই, বাংলাদেশে দ্রুত পট পরিবর্তন ঘটে। তিনদিন পরই ঢাকা ত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছিলেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী।

আরও খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Tv9 বাংলা অ্যাপ (Android/ iOs)