ঢাকা: বাংলাদেশে ক্রমে ভয়াবহ আকার নিচ্ছে ডেঙ্গি। বুধবার (২০ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশের স্বাস্থ্য দফতরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে জানানো হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গি আক্রান্ত আরও ২১ জনের মৃত্যু হয়েছে। এই নিয়ে চলতি বছরে সেই দেশে ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ৮৬৭ জন। স্বাস্থ্য দফতরের প্রতিবেদনে আরও জানানো হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ৩,০১০ জন নতুন ডেঙ্গি রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। ফলে চলতি বছরে ডেঙ্গি নিয়ে হাসপাতালে ভর্তির সংখ্যাটা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১,৭৬,৮১০ জন।
স্বাস্থ্য দফতরে প্রতিবেদনে দেখা যাচ্ছে ডেঙ্গির দাপট রাজধানী ঢাকাতেই সবথেকে বেশি। গত ২৪ ঘণ্টায় যাঁদের ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে, তাঁদের মধ্যে ১০ জনই ঢাকার বাসিন্দা। বাকি ১১ জন অন্যান্য জেলার। একই সময়কালে যাঁরা হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন, তাঁদের মধ্যে ২,১৫৮ জন ঢাকার বাইরের বাসিন্দা। সব মিলিয়ে বর্তমানে বাংলাদেশের বিভিন্ন হাসপাতালে মোট ১০,২৬৩ জন ডেঙ্গি রোগী ভর্তি আছেন। ঢাকার বাইরের হাসপাতালগুলিতে যে সব রোগী ভর্তি হয়েছেন, তাঁদের অধিকাংশই আবার ঢাকা থেকে ফেরার পরই ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়েছেন বলে জানা গিয়েছে।
আরও উদ্বেগের বিষয় হল, সাম্প্রতিক বছরগুলিতে বাংলাদেশে ডেঙ্গি প্রায় মারণ রোগের আকার নিয়েছে। ২০২২ সালে ডেঙ্গিতে মৃতের সংখ্যা ছিল ২৮১। এতদিন পর্যন্ত এক বছরে এটাই ছিল বাংলাদেশে ডেঙ্গিতে মৃত্যুর সর্বোচ্চ রেকর্ড। তবে, চলতি বছরে ইতিমধ্যেই তার চার গুণ মৃত্যু হয়েছে। ২০২০ সালে করোনা মহামারি চলাকালীন ডেঙ্গি সংক্রমণ হার কম ছিল। ২০২১-এ সারাদেশে ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়েছিলেন ২৮,৪২৯ জন, মৃত্যু হয়েছিল ১০৫ জনের। এই পরিসংখ্যান থেকেই স্পষ্ট, কীভাবে বছর বছর ডেঙ্গির প্রকোপ বাড়ছে বাংলাদেশে।
এদিকে, চলতি বছরে ডেঙ্গি পরিস্থিতি মোকাবিলায় ২০ লক্ষ আইভি ফ্লুইড কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশের স্বাস্থ্য মন্ত্রক। এর জন্য ২৯ কোটি ১৯ লক্ষ টাকা অনুমোদন করেছে মন্ত্রক। স্বাস্থ্য মন্ত্রকের প্রকাশিত এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বর্ষায় দেশ জুড়ে মশার সংখ্যা ব্যাপকভাবে বেড়ে যাওয়াতেই ডেঙ্গি রোগীর সংখ্যা পাল্লা দিয়ে বেড়েছে। আর তাই দেশ জুড়ে আইভি ফ্লুইডের অভাব দেখা দিয়েছে। এই অবস্থায়, স্বাস্থ্য বিভাগের অধীনস্থ, ‘এসেনসিয়াল ড্রাগস কোম্পানি লিমিটেড’ বা ইডিসিএল-কে ২০ লক্ষ আইভি ফ্লুইড কেনার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।