ঢাকা : ভাষা আন্দোলনের জন্য আজও ‘অমর’ ফেব্রুয়ারির একুশ। ২০০০ সাল থেকে ইউনেস্কোর স্বীকৃতিতে একুশের জন্য গোটা বিশ্ব ২১ ফেব্রুয়ারি পালন করে ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ (International Mother Language Day )। একুশের শহিদেরা হয়ে উঠেছেন বিশ্বের প্রতিটি বর্ণমালার পাহারাদার। আর তাঁদের উত্তরসূরিরা বাংলা অক্ষরের লালনকারী ও নজরদার পাঠক। পূর্ব আর পশ্চিম মিলিয়ে পাকিস্তানের বয়স তখন মাস সাতেক। জীবনের প্রথম ও শেষবারের জন্য ঢাকায় আসেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী মহম্মদ আলি জিন্নাহ। তিনি হয়তো তখন ভাবেননি সেখানে উচ্চারিত তাঁর কিছু কথা সদ্য গড়ে ওঠা দেশটার বুকে ভাঙন ডেকে আনবে। ১৯৪৮ সালের মার্চে তৎকালীন ঢাকার রেসকোর্স মাঠে তিনি স্পষ্ট করে বলেছিলেন পাকিস্তানের রাষ্ট্রীয় ভাষা হবে উর্দু। অন্য কোনও ভাষা নয়।
তাঁর মুখে শোনা গিয়েছিল, “We make it Very Clear to you that state language of pakistan is going to be urdu, no other languge.” তাঁর এই ঘোষণার পর পূর্ব পাকিস্তানে বসবাসকারী বাঙালিদের মধ্যে তীব্র জনরোষ দেখা দিয়েছিল। বাংলাভাষী মানুষ এই সিদ্ধান্তকে কোনওভাবেই মেনে নিতে পারেনি। ফলে বাংলা ভাষার সমমর্যাদার দাবিতে দেশের নানা প্রান্তে আন্দোলন দানা বাঁধতে থাকে। বছর বছর বাড়তে থাকে আন্দোলনের ঝাঁঝ। এই আন্দোলনের রূপকার রাষ্ট্র ভাষা সংগ্রাম পরিষদ।
ইতিহাস বলছে প্রাচীনকাল থেকেই নানাভাবে আক্রমণ নেমে এসেছে বাংলা ভাষার উপর। কিন্তু, তারপরেও বাংলা ভাষাকে শিকলে আটকে রাখা যায়নি। বাংলাদেশের ইতিহাসবিদ অধ্যাপক সৈয়দ আনোয়ার হোসেন বলেন, “১৯৪৭ সালে জুলাই মাসে আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সেই সময়ের উপাচার্য ড. জিয়াউদ্দিন মুসলমানি আবেগ থেকে বলেছিলেন নতুন রাষ্ট্র পাকিস্তানের রাষ্ট্রীয় ভাষা হওয়া উচিত উর্দু। এ কথার প্রতিবাদে তদানন্তীন পাকিস্তানের চালচিত্রের দিকে তাকিয়ে তরুণ মুজিবর রহমান বলেছিলেন পাকিস্তানের রাষ্ট্রীয় ভাষা হওয়া উচিত বাংলা।”