ঢাকা: এক দিকে মসজিদে চলছে আযান, অন্যদিকে দূর্গ পুজার ঢাকের বাদ্যি, শঙ্খধ্বনি। এভাবেই চলছে বাংলাদেশের চিরন্তন ধর্মীয় উৎসবের আমেজ। অসাম্প্রদায়িক চেতনার এটিই বাংলাদেশের চিরাচরিত চিত্র। শত বছরেরও বেশি সময় ধরে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির অন্যান্য দৃষ্টান্ত বাংলাদেশের উত্তরের জেলা লালমনিরহাট শহরের পুরান বাজারে এক অঙ্গনে থাকা মসজিদ ও মন্দির। কবে এই মসজিদ-মন্দির তৈরি হয়েছিল সেই সম্পর্কে সঠিক কোনও তথ্য পাওয়া যায় না। তবে, ১৮৩৬ সালে দুর্গামন্দির প্রতিষ্ঠার আগে এখানে একটি কালীমন্দির ছিল। অন্যদিকে ১৯০০ সালে তৈরি হয়েছিল একটি নামাজ ঘর। এই নামাজ ঘরই পরে, পুরান বাজার জামে মসজিদ নামে পরিচিতি লাভ করে।
লালমনিরহাটের জেলাশাসক, মহম্মদ উল্ল্যাহ জানিয়েছেন, জানালেন একশো বছরেরও বেশি সময় ধরে একই স্থানে মন্দির-মসজিদ অবস্থিত। যে যার মতো নিজ নিজ ধর্ম পালন করেন। এটা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এক অনন্য নিদর্শন।
একই রকম ছবি দেখা যায় নড়াইল শহরের মহিষখোলায়। ৪৮ বছর ধরে একই স্থানে চলছে মসজিদে নামাজ আর মন্দিরে প্রার্থনা। যুগ যুগ ধরে চলে আসা এই অভ্যাসে কারো ধর্ম পরিচালনায় কোনও ব্যাঘাত ঘটেনি। যেন একে অন্যের পরিপূরক। জামে মসজিদের ইমাম আর মন্দির কমিটির নেতার কন্ঠে শোনা যায় সম্প্রীতির এক সুর। ধর্মীয় এই সম্প্রীতির স্বাক্ষী, পাশ দিয়ে বয়ে চলা চিত্রা নদী। নদীর বাধানো ঘাটে পূজার সরঞ্জাম ধুয়ে পবিত্র করা হয়। আবার একই জায়গায় অজু করেন মুসলমানরা। যখন নামাজ শুরু হয়, বন্ধ হয়ে যায় পুজোর ঢাকের শব্দ। নামাজ শেষে আবার শুরু হয় পুজো। এভাবেই যুগের পর যুগ ধরে অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশের চেতনাকে ধরে রাখতে চান স্থানীয় বাসিন্দারা।