ঢাকা: পদ্মা সেতুতে (Padma bridge) ট্রেন চলাচলের কাজ প্রায় সম্পূর্ণ। আগামী মাসেই এই রেলপথের উদ্বোধন হবে। তার আগে মন্ত্রী, সাংসদ ও বিশিষ্ট অতিথি ও সাংবাদিকদের বিশাল বহর নিয়ে ট্রেন চলল স্বপ্নের পদ্মা সেতুর উপর দিয়ে। আজ, বৃহস্পতিবার সকালে ঢাকার (Dhaka) কমলাপুর স্টেশন থেকে ফরিদপুরের ভাঙ্গা স্টেশন পর্যন্ত পদ্মা সেতুর উপর দিয়ে পরীক্ষামূলক এই ট্রেন চলল। মাত্র ৮ মিনিটেই পদ্মা নদী পেরোল ট্রেনটি। যা হাসিনা সরকারের উন্নয়নমূলক কাজের মুকুটে আরেকটি পালক যোগ করল।
এদিন বাংলাদেশ সময়, সকাল ১০টা ৭ মিনিটে রাজধানীর কমলাপুর স্টেশন থেকে মন্ত্রী, সাংসদ ও সাংবাদিকদের নিয়ে পরীক্ষামূলকভাবে পদ্মা সেতুর উপর ট্রেন পরিষেবা শুরু হয়। এই ট্রেনে যাত্রী ছিলেন রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন, চিফ হুইপ লিটন চৌধুরী, প্রাক্তন মন্ত্রী শাহজাহান খান, জলসম্মদ উপমন্ত্রী এনামুল হক শামিম-সহ সাংসদ ও বাংলাদেশ রেলওয়ের ঊর্ধ্বতন কর্তা-সহ সাংবাদিকেরাও। ট্রেনটি ঢাকা থেকে পদ্মা সেতু হয়ে ভাঙ্গা পর্যন্ত ৮২ কিলোমিটার পথ পাড়ি দেয়। আর পদ্মা সেতু পেরোয় মাত্র ৮ মিনিটে। ট্রেনটির ইঞ্জিনটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে আনা।
ঢাকা থেকে পদ্মা সেতুর উপর দিয়ে যশোর পর্যন্ত ১৭২ কিলোমিটার রেলপথ বিস্তৃত হয়েছে। এর মধ্যে প্রথম ধাপে ঢাকা থেকে ফরিদপুরের ভাঙ্গা পর্যন্ত ৮২ কিলোমিটার রেলপথে ট্রেন পরিষেবা চালু হচ্ছে। পর্যায়ক্রমে এটি যশোর পর্যন্ত চালু হবে। তারপর রেলপথের বিস্তার করা হবে এবং যশোর-বেনাপোল হয়ে বনগাঁর পেট্রাপোল দিয়ে ভারতে প্রবেশ করবে ট্রেন। এই ট্রেন সার্ভিসটি পুরোপুরি চালু হলে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে যোগাযোগের ক্ষেত্রে আরও এক নতুন দিগন্তের সূচনা হবে। আগামী বছরই এই পথ চালুর লক্ষমাত্রা নিয়েছে হাসিনা সরকার।
বর্তমানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ব্যস্ত ও টানা বিদেশ সফর রয়েছে। আগামিকাল থেকে তাঁর ভারত, যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটেন সফর শুরু হবে। এই সব সফর শেষ করে আগামী ১০ অক্টোবরে তিনি এই পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন। এর প্রস্তুতি হিসাবেই মূলত এদিন মন্ত্রী, সাংসদদের নিয়ে কমলাপুর স্টেশন থেকে পদ্মা সেতু হয়ে ভাঙ্গা স্টেশন পর্যন্ত পরীক্ষামূলক ট্রেন চালানো হল।
প্রসঙ্গত, ২০২২ সালের ২৫ জুন পদ্মা সেতুতে যান চলাচল শুরু হয়। তার থেকে প্রতিদিন এই সেতুতে গড়ে আয় হয় ২ কোটি ১৮ লক্ষ টাকা। প্রথম বছরে আয় ৮০০ কোটি টাকা ছাড়ায়। পদ্মা সেতু দিয়ে দৈনিক গড়ে সাড়ে ১৫ হাজার গাড়ি চলে। অর্থাৎ পদ্মা সেতু দিয়ে যান চলাচল শুরু হওয়ায় সাধারণ মানুষ যে ভীষণ উপকৃত হয়েছে, তা এই পরিসংখ্যান থেকেই স্পষ্ট। এবার পদ্মা সেতুতে রেল পরিষেবা শুরু হলে পদ্মার এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে যাতায়াতের সময় কমবে এবং সাধারণ মানুষ যে আরও সুবিধা পাবে, তা বলা বাহুল্য।