Begum Khaleda Zia: বেগম খালেদা জিয়াই বাংলাদেশের প্রথম মহিলা প্রধানমন্ত্রী, রইল উত্থানপর্ব

Aug 06, 2024 | 6:40 PM

Bangladesh: ১৯৪৫ সালের ১৫ অগস্ট খালেদা জিয়ার জন্ম। জন্মস্থান দিনাজপুর। বাবা নাম রেখেছিলেন খালেদা খানম পুতুল। সেই খালেদাই জিয়াউর রহমানকে বিয়ে করে হলেন বেগম খালেদা জিয়া। জিয়াউর পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন ছিলেন। বেশ কয়েক বছর স্বামীর সঙ্গে করাচিতে ছিলেন খালেদা জিয়া। এরপর ঢাকায় চলে যান।

Begum Khaleda Zia: বেগম খালেদা জিয়াই বাংলাদেশের প্রথম মহিলা প্রধানমন্ত্রী, রইল উত্থানপর্ব
বন্দিদশা কাটিয়ে ফিরলেন বেগম খালেদা জিয়া।
Image Credit source: TV9 Bangla

Follow Us

১৯৮১ সালের ৩০ মে। বাংলাদেশের তৎকালীন রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের মৃত্যুর পর বাংলাদেশ ন্যাশনাল পার্টি বা বিএনপির হাল কে ধরবে তা নিয়ে দেশজুড়ে জোর চর্চা। প্রয়াত রাষ্ট্রপতির স্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া তখন দুই শিশুসন্তানকে নিয়ে সেনার আশ্রয়ে। বিএনপি যেন দিশাহারা। বেশ কয়েক মাস বিএনপির এমন টালমাটাল পরিস্থিতি চলার পর প্রস্তাব যায় খালেদা জিয়ার কাছে। ‘ফার্স্ট লেডি’ হলেও আদতে খালেদা তখন আদ্যোপান্ত একজন গৃহবধূ। ১৯৮২ সাল। বিএনপির হাল নিজের হাতে ধরলেন খালেদা জিয়া। একজন সাধারণ গৃহবধূ থেকে রাজনীতির আঙিনায় প্রথম পা রাখলেন তিনি। তিনিই বাংলাদেশের প্রথম মহিলা প্রধানমন্ত্রী। মুসলিম সংখ্যালঘু দেশগুলির মধ্যে বেনজির ভুট্টোর (পাকিস্তান) পর খালেদা জিয়াই হন দ্বিতীয় মহিলা প্রধানমন্ত্রী।

১৯৪৫ সালের ১৫ অগস্ট খালেদা জিয়ার জন্ম। জন্মস্থান দিনাজপুর। বাবা নাম রেখেছিলেন খালেদা খানম পুতুল। সেই খালেদাই জিয়াউর রহমানকে বিয়ে করে হলেন বেগম খালেদা জিয়া। জিয়াউর পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন ছিলেন। বেশ কয়েক বছর স্বামীর সঙ্গে করাচিতে ছিলেন খালেদা জিয়া। এরপর ঢাকায় চলে যান।

স্বামীর মৃত্যুর পর খালেদা জিয়া একজন প্রাথমিক বিএনপি সদস্য হিসাবে নিজের নাম নথিভুক্ত করেছিলেন। ১৯৮২ সালের ৩ জানুয়ারি বিএনপির প্রাথমিক সদস্য হন খালেদা। সে বছর নভেম্বরে প্রথমবার প্রকাশ্যে বক্তব্য রেখেছিলেন। যদিও তা একেবারেই দলীয় রাজনীতির মঞ্চ ছিল না। ১৯৮৩ সালে মার্চ মাস, খালেদা জিয়া দলের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান হন। এপ্রিল মাসে প্রথমবার দলীয় সভায় বক্তব্য রাখেন।

খুব কম সময়ের মধ্যেই খালেদা জিয়া হন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান। ১৯৮৪ সালেই বিএনপির চেয়ারপার্সন পদ পান খালেদা জিয়া। যদিও শোনা যায়, এই পদে খালেদা বসুন, তা চায়নি দলেরই একাংশ। তবে বিএনপির হাল ধরতে দলের আরেক অংশ মনে করেছিলেন, বেগম খালেদা জিয়াই সঠিক নির্বাচন।

তৎকালীন সেনাপ্রধান জেনারেল এরশাদের সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে যখন বাংলাদেশে আন্দোলন চলছে, খালেদা জিয়া তখন দেশজুড়ে জনপ্রিয়তার শীর্ষে ওঠেন। এরশাদবিরোধী আন্দোলনে একটা সময় শেখ হাসিনা-খালেদা জিয়া একইসঙ্গে ছিলেন। যদিও পরে পথ আলাদা হয়।

১৯৯১ সালে প্রথমবার প্রধানমন্ত্রী হন বেগম খালেদা জিয়া। ১৯৯৬ সালে আবারও নির্বাচন। আবারও প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া। আওয়ামী লিগ-সহ বাকি বিরোধীরা এই নির্বাচনে সহমত ছিল না। ১৫ দিন স্থায়ী হয় নতুন সংসদ। প্রবল গণআন্দোলন, চাপের মুখে ইস্তফা দিতে হয় খালেদা জিয়াকে। আবারও ভোট। এবার আওয়ামী লিগ সরকার গড়ে। সেই সরকারের আমলে খালেদা জিয়া ছিলেন বিরোধী দলনেত্রী।

২০০১ সালের ভোটে আবার প্রধানমন্ত্রী হিসাবে ফেরেন খালেদা জিয়া। তবে ২০০৮ সালের ভোটে ভরাডুবি হয় খালেদা জিয়ার দলের। সেই মুখ থুবড়ে পড়া থেকে আর ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি বিএনপি। এরপর খালেদা জিয়ার নামে দুর্নীতির মামলা হয়। জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের নামে প্রায় ২ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ ওঠে। দুর্নীতি দমন কমিশন এই অভিযোগ তুলেছিল। এই ট্রাস্ট ১৯৯৩ সালে গঠিত হয়। খালেদা জিয়ার বাড়ির ঠিকানাই ছিল এই ট্রাস্টেরও ঠিকানা। কুয়েত থেকে আসা এই বিরাট অঙ্কের অনুদান মূলত অনাথদের জন্য খরচ করার কথা ছিল। কিন্তু তা প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী আত্মসাৎ করেন বলেই অভিযোগ ওঠে।

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের মামলাতেই ২০১৮ সালের ৮ জানুয়ারি কারাদণ্ডে দণ্ডিত হন খালেদা জিয়া। দু’বছর জেলেই ছিলেন বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী। এরপর গৃহবন্দি। রাজনীতিতে অংশ না নিতে পারা, বিদেশে না যেতে পারার মতো শর্তেই গৃহবন্দি থাকার অনুমতি পান।

২০২৪ সালের ৫ অগস্ট। সংরক্ষণ আন্দোলন ও তৎপরবর্তী অশান্ত বাংলাদেশ ছাড়েন শেখ হাসিনা। সরকার পড়ে যায় আওয়ামী লিগের। তোলপাড় পদ্মাপারের দেশে। এদিনই বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি জানান, খালেদা জিয়াকে মুক্ত করা হচ্ছে। সেইমতোই ৬ অগস্ট দীর্ঘ ‘বন্দি’দশা কাটিয়ে মুক্ত হন খালেদা জিয়া।

Next Article