Khaleda Zia: দেশ ছেড়েছেন হাসিনা, জেল-মুক্তি হতে চলেছে খালেদা জিয়ার; মঙ্গলেই খুলছে অফিস-স্কুল
Khaleda Zia: দুর্নীতিতে অভিযুক্ত খালেদা জিয়াকে ২০১৮ সালে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়। জেলে থাকাকালীনই খালেদা জিয়া গুরুতর অসুস্থ হন। ২০২১ সালে করোনা আক্রান্ত হয়েছিলেন তিনি। তারপর থেকেই তাঁর শারীরিক অবস্থা গুরুতর হয়। আর্থ্রাইটিস, মধুমেহ, কিডনি, লিভার ও হার্টের সমস্য়ায় ভুগছেন খালেদা জিয়া। চিকিৎসার জন্য কয়েকবার প্যারলে মুক্তি পেলেও জামিন মেলেনি। জেল আর হাসপাতালেই দিন কাটতে থাকে বিএনপি নেত্রীর।
ঢাকা: কারও পৌষমাস তো কারও সর্বনাশ! পতন হয়েছে হাসিনা সরকারের। প্রধানমন্ত্রী পদে ইস্তফা দিয়ে দেশ ছেড়েছেন শেখ হাসিনা। আর তারপরই সূর্যোদয় দেখতে চলেছেন হাসিনার প্রাক্তন তথা বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া। টানা ৬ বছর জেলবন্দি থাকার পর অবশেষে মুক্তি পেতে চলেছেন ৭৮ বছর বয়সি খালেদা জিয়া। সোমবার রাতেই বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়াকে অবিলম্বে জেলমুক্তি করার নির্দেশ দিলেন বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি মহম্মদ শাহাবুদ্দিন।
এদিন রাতে রাষ্ট্রপতির তরফে সাংবাদিক সম্মেলন করে জানানো হয়, বাংলাদেশ ন্যাশনাল পার্টি (BNP)-র চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়াকে অবিলম্বে নিঃশর্তে মুক্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
শেখ হাসিনার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন খালেদা জিয়া। ১৯৯১ সালে তিনিই বাংলাদেশের প্রথম মহিলা প্রধানমন্ত্রী হন। তাঁর স্বামী জিয়াউর রহমান ছিলেন বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি। ১৯৭৭ থেকে ১৯৮১ পর্যন্ত রাষ্ট্রপতি ছিলেন তিনি। রাজনৈতিক কারণেই খুন হন তিনি। তারপরই রাজনীতির ময়দানে নামেন বেগম খালেদা জিয়া।
দ্বিতীয় দফায় ২০০১ সালে প্রধানমন্ত্রী হন খালেদা জিয়া। এই সময়কালেই তিনি দুর্নীতির অভিযোগে অভিযুক্ত হন। শুধু তিনি নন, খালেদা জিয়ার ২ ছেলেও দুর্নীতিতে অভিযুক্ত হন। এমনকি বিশ্বে সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত দেশের তকমা পায় বাংলাদেশ। তারপর অশান্তির মেঘ সৃষ্টি হয় বাংলাদেশের আকাশে-বাতাসে। ২০০৬ সালে খালেদা জিয়ার সরকারের মেয়াদ শেষ হওয়ার পরই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে বাংলাদেশ। যার জেরে ২০০৭-এর জানুয়ারিতে সাধারণ নির্বাচন স্থগিত করে দেওয়া হয়। পরিস্থিতি এতটাই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে যে, কেয়ারটেকার সরকার হিসাবে দায়িত্ব নেয় সেনাবাহিনী। পরবর্তীতে শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী হলে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে থাকা সমস্ত অভিযোগের বিচার শুরু হয়। দীর্ঘ বিচারের পর ২০১৮ সালে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয় খালেদা জিয়াকে। জেলে থাকাকালীনই খালেদা জিয়া গুরুতর অসুস্থ হন। ২০২১ সালে করোনা আক্রান্ত হয়েছিলেন তিনি। তারপর থেকেই তাঁর শারীরিক অবস্থা গুরুতর হয়। আর্থ্রাইটিস, মধুমেহ, কিডনি, লিভার ও হার্টের সমস্য়ায় ভুগছেন খালেদা জিয়া। চিকিৎসার জন্য কয়েকবার প্যারলে মুক্তি পেলেও জামিন মেলেনি। জেল আর হাসপাতালেই দিন কাটতে থাকে বিএনপি নেত্রীর। একাধিকবার তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করাতে হয়। লিভার ট্রান্সপ্ল্যান্টের (প্রতিস্থাপন) জন্য খালেদা জিয়াকে বিদেশে চিকিৎসা করানোর জন্য তাঁর পরিবার ও বিএনপি-র তরফে সরকারের কাছে একাধিকবার অনুমতি চাইলেও মেলেনি। অবশেষে শেখ হাসিনার ইস্তফা দেওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই খালেদা জিয়ার জেলমুক্তির নির্দেশ এল। স্বাভাবিকভাবেই হাসি ফুটেছে খালেদা জিয়ার পরিবার থেকে বিএনপি-র দলে। হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে এই আন্দোলনের নেপথ্যে বিএনপি-র বিশেষ ভূমিকা ছিল বলে মনে করা হচ্ছে।
কেবল খালেদা জিয়া নন, ছাত্র আন্দোলনে গ্রেফতার হওয়া সকল ছাত্র, নেতাকে মুক্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে সেনাপ্রধানের বৈঠকে। অন্যদিকে, ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হতে চলেছে বলে জানিয়েছেন সেনাপ্রধান ওয়াকার-উজ-জামান। মঙ্গলবার থেকে সমস্ত স্কুল, কলেজ খুলবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।