কিয়েভ: বর্মের নাম আইফোন! হ্যাঁ, সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম রেডডিটে পোস্ট করা একটি ভিডিয়োয় দাবি করা হয়েছে, একটি চলমান রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে একটি আইফোনের জন্যই প্রাণ বেঁচেছে এক ইউক্রেনীয় সৈন্যের। বস্তুত, যুদ্ধের সময় যদি ওই ইউক্রেনীয় সেনা সদস্য, তাঁর বুক পকেটে আইফোনটি না রাখতেন, তবে রুশ সেনার ছোড়া বুলেট এফোঁড়-ওফোঁড় করে দিত তাঁর বুক।
ভিডিয়োটির সত্যতা যাচাই করা যায়নি। বস্তুত, সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করা ভিডিয়োটিতে আইফোনের বর্ম হয়ে ওঠার অনন্য মুহূর্তটি ধরা নেই। তাহলে কী দেখা যাচ্ছে এই ভিডিয়োতে? দেখা যাচ্ছে, একজন ইউক্রেনীয় সৈন্যের পোশাক পরিহিত ব্যক্তিকে। তিনি তাঁর ব্যাগ থেকে একটি আইফোন বের করছেন। ফোনটির স্ক্রিন ভেঙে চুরমার হয়ে গিয়েছে। তার থেকেও বড় কথা হল, ফোনের পিছনের অংশে একটি গুলির আকারে তুবড়ে গিয়েছে। সেই সঙ্গে ওই তোবড়ানো অংশের পাশের কিছু অংশ পুড়েও গিয়েছে। তবে,কবে, কোথায় এই ঘটনা ঘটেছে, তা বিশদে জানানো হয়নি।
ভিডিওতে, আরও বলা হয়েছে, ওই আইফোন ১১ প্রো ফোনটিই ওই ইউক্রেনীয় সৈন্যের জন্য বুলেটপ্রুফ ভেস্ট হিসাবে কাজ করেছে। নাহলে যে গুলিটি ফোনটির পিছনে লেগে রয়েছে, সেটিই তাঁর মৃত্যুর কারণ হত। ভিডিওটির ক্যাপশনে লেখা আছে, ‘আইফোন একজন ইউক্রেনীয় সৈন্যের জীবন বাঁচালো। কে জানে, হয়তো এই ভিডিয়ো দেখার পর, রাশিয়ানরা প্লেট ক্যারিয়ারের (এক ধরণের গুলি প্রতিরোধী বর্ম) পরিবর্তে তাদের বুলেটপ্রুফ ভেস্টে ম্যাকবুক রাখবে!’
এদিকে, ইউক্রেনে ক্রমে আক্রমণের ঝাঁঝ বাড়াচ্ছে রাশিয়া। শনিবারই (১৬ জুলাই) রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রী সের্গেই শোইগু রুশ সেনাবাহিনীকে ইউক্রেন যুদ্ধের ‘সকল অপারেশনাল সেক্টরে’ আক্রমণ তীব্র করার নির্দেশ দিয়েছেন। রুশ সংবাদমাধ্যমগুলির প্রতিবেদন অনুযায়ী, তিনি বলেছেন, পূর্ব ইউক্রেনের অসামরিক এলাকাগুলিতে এবং রুশ-অধিকৃত অঞ্চলগুলিতে ইউক্রেন গোলা ছুড়ছে। এই ইউক্রেনীয় হামলা ব্যর্থ করতে তিনি সামরিক বাহিনীকে তাদের অভিযান জোরদার করার নির্দেশ দিয়েছেন। প্রসঙ্গত, পশ্চিমী দেশগুলির কাছ থেকে পাওয়া একাধিক রকেট সিস্টেম ব্যবহার করে সম্প্রতি ইউক্রেনীয় বাহিনী ৩০টিরও বেশি রুশ লজিস্টিক কেন্দ্র এবং গোলাবারুদ মজুতকেন্দ্রে সফলভাবে হামলা চালিয়েছে। তারপরই ক্রেমলিন থেকে এই নির্দেশ এল।
গত শুক্রবার, ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের এক মুখপাত্র এই হামলার দাবি করেছেন। তাঁর মতে, ইউক্রেনীয় বাহিনীর ওই অভিযানের ফলে, রুশ বাহিনীর সরবরাহ শৃঙ্খলা ভেঙে গিয়েছে। তাদের আক্রমণের শক্তি ও ক্ষমতা উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়েছে। কিয়েভের দিক থেকে পূর্ব ইউক্রেনের ডনবাস তাদের আক্রমণের লক্ষ্য সরিয়ে আনার পর থেকে রুশ বাহিনী একটানা সাফল্য পাচ্ছিল। তবে, এই ইউক্রেনীয় হামলায় তারা বড় ধাক্কা খেয়েছে। তবে, এবার ইউক্রেনের বিরুদ্ধে ভয়ঙ্কর আক্রমণ নেমে আসতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। সম্প্রতি ইউক্রেন জুড়ে রুশ ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে বহু অসামরিক নাগরিকের মৃত্যু হয়েছে। শোইগুর মন্তব্যে স্পষ্ট, যে এবার রাশিয়া দাঁত-নখও বের করতে পারে। চলতি মাসের শুরুতেই পুতিন কিন্তু বলেছিলেন, ‘সবার জানা উচিত, আমরা এখনও সিরিয়াসলি কিছু শুরুই করিনি।’