ইরান মডেলের অনুকরণে মন্ত্রিসভা, শীর্ষে থাকবেন ‘সুপ্রিম লিডার’, তৈরি তালিব সরকারের ব্লু-প্রিন্ট

তালিবানের সাংস্কৃতিক কমিশনের সদস্য আনামুল্লাহ সামানগানি জানিয়েছেন, হিবাতুল্লাহ আখুনজাদাই সরকারের শীর্ষপদে থাকবেন। এছাড়াও ৩৩ টি প্রদেশে গভর্নর, পুলিশ প্রধান নিয়োগ করা হয়েছে।

ইরান মডেলের অনুকরণে মন্ত্রিসভা, শীর্ষে থাকবেন 'সুপ্রিম লিডার', তৈরি তালিব সরকারের ব্লু-প্রিন্ট
ফাইল চিত্র।
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Sep 02, 2021 | 1:53 PM

কাবুল: দু’সপ্তাহের অপেক্ষা। অবশেষে সরকার গঠন নিয়ে মুখ খুলল তালিবান। জানানো হল, আফগানিস্তানে তালিবানের নতুন সরকারের নেতৃত্ব দেবেন হিবাতুল্লাহ আখুনজাদা (Hibatullah Akhundzada)। এতদিন লোকচক্ষুর আড়ালে থাকলেও এ বার তিনি সকলের সামনে আসবেন, এমনটাই জল্পনা। তালিবান সূত্রে জানা গিয়েছে, হিবাতুল্লাহের অধীনে প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রী থাকবেন। সামনে থেকে তারাই দেশ পরিচালন করবে।

গত ১৫ অগস্ট কাবুল দখল করার পরই গোটা আফগানিস্তানে নিজেদের আধিপত্য ঘোষণা করে তালিবান। প্রেসিডেন্ট আসরাফ ঘানি পদত্য়াগ করে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান। শুরু হয় শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রক্রিয়া। সরকার গঠনের আলোচনা শুরু হওয়ার পর থেকেই গোটা বিশ্বের নজর ছিল তালিবানের সিদ্ধান্তের দিকে।

সম্প্রতি আল জাজিরাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তালিবানের তরফে জানানো হয়েছিল, ইসলামিক এমিরেটস অব আফগানিস্তানের দায়িত্বভার পালনের জন্য অন্তর্বর্তী সরকারে একজন “আমির-উল-মোমিনিন” নিোগ করা হবে।  শীর্ষনেতার বিশ্বাসভাজন কোনও তালিবান কম্যান্ডারই এই দায়িত্ব পাবেন। আগামিদিনের তালিব সরকার ও তার মন্ত্রী কারা হবেন, তা নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া শুরু করেছেন তালিব নেতারা। কাবুলে এসে পৌঁছেছেন তালিবানের সহ প্রতিষ্ঠাতা মোল্লা বরাদর। অন্যদিকে, তালিবানের প্রতিষ্ঠাতা মোল্লাহ ওমারের ছেলে মোল্লাহ মোহাম্মদ ইয়াকুবও কাুন্দাহার  থেকে রাজধানীতে উপস্থিত হয়েছেন।

গত সপ্তাহেই তালিবান সূত্রে জানানো হয়, নয়া সরকারের বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হবে আইন ব্যবস্থা, অন্তর্বর্তী সুরক্ষা, প্রতিরক্ষা, বিদেশমন্ত্রক, অর্থ, তথ্যমন্ত্রকে। এছাড়াও কাবুলকে ঘিরে একটি বিশেষ মন্ত্রক গঠনের পরিকল্পনা চলছে। এদিন, স্থানীয় সংবাদ মাধ্যম টোলো নিউজ সূত্রে জানানো হয়, আফগানিস্তান শাসন করার জন্য সরকারের শীর্ষ পদে কারা থাকবেন, তাদের নাম স্থির করা হয়েছে। শীঘ্রই সরকারের ঘোষণা করা হবে।

তালিবানের সাংস্কৃতিক কমিশনের সদস্য আনামুল্লাহ সামানগানি জানিয়েছেন, হিবাতুল্লাহ আখুনজাদাই সরকারের শীর্ষপদে থাকবেন। এছাড়াও ৩৩ টি প্রদেশে গভর্নর, পুলিশ প্রধান নিয়োগ করা হয়েছে। অন্যদিকে, দোহায় তালিবানের রাজনৈতিক অফিসের প্রধান মহম্মদ আব্বাস স্তানিকজাইও জানিয়েছেন, সরকার গঠন নিয়ে আলোচনা প্রায় শেষ পর্বে। আগামী দিন দুয়েকেই মধ্যেই তৈরি হয়ে যাবে নতুন ক্যাবিনেট।

সূত্রের খবর তালিবান সরকারের প্রধান হতে চলেছেন মোল্লা আবদুল গনি বরাদর। আফগানিস্তান দখলের পর থেকেই তাঁর নাম শীর্ষ নেতা হিসাবে উঠে এসেছিল। তবে ইরান মডেল অনুসরণ করেই দেশের সুপ্রিম লিডার হিসেবে থাকবেন তালিবান প্রধান হাবিতুল্লাহ আখুন্দজাদা। সূত্রের দাবি, বর্তমানে কান্দাহারেই রয়েছেন আখুন্দজাদা। সরকার গঠন নিয়ে সব পক্ষের সঙ্গে সেখানেই আলোচনা করছেন তিনি। খুব তাড়াতাড়িই আসবেন জনসমক্ষে। পঞ্জশিরের প্রতিরোধ বাহিনীর নেতা আহমেদ মাসুদের সঙ্গেও আলোচনায় বসার কথা ছিল তাঁর।

তালিবান মুখপাত্র জানিয়েছেন, মোট ২৬ জনের মন্ত্রিসভা তৈরি হতে চলেছে। নতুন সরকারে হাক্কানি নেটওয়ার্কের প্রধান সিরাজুদ্দিন হাক্কানি ও মোল্লা ওমরের ছেলে মহম্মদ ইয়াকুব বড় কোনও ভূমিকায় থাকতে পারেন। তালিব যোদ্ধাদেরও সরকারি সেনায় অন্তর্ভুক্ত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে দাবি। ক্যাবিনেট গঠনের পরই সদস্যরা মিলে সংবিধান ও জাতীয় পতাকা চূড়ান্ত করবেন। আরও পড়ুন: কাশ্মীরে হামলা চালাতে সলতে পাকাচ্ছে আল কায়দা, তাল কাটছে তালিবান