AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

কাশ্মীরে হামলা চালাতে সলতে পাকাচ্ছে আল কায়দা, তাল কাটছে তালিবান

Taliban : যাবতীয় মতপার্থক্য দূরে সরিয়ে রেখে ভারতের সঙ্গে বন্ধুত্ব গড়তে চায় তালিবান । কাশ্মীর ইস্যুতেও নাক না গলানোর আশ্বাস ।

কাশ্মীরে হামলা চালাতে সলতে পাকাচ্ছে আল কায়দা, তাল কাটছে তালিবান
ফাইল ছবি
| Edited By: | Updated on: Sep 02, 2021 | 12:29 PM
Share

কাবুল : ফের একবার কাশ্মীর প্রসঙ্গে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করল তালিবান । কাশ্মীর আফগানিস্তানের অংশ নয়, তাই সেই বিষয়ে নাক গলানো তালিবানের নীতি বিরুদ্ধ । জানিয়ে দিলেন তালিবান নেতা আনাস হাক্কানি । কাবুল দখলের পরেই তালিবান জানিয়ে দিয়েছিল, কাশ্মীর ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয় । সেই বিষয়ে তারা হস্তক্ষেপ করবে না । সম্প্রতি আল কায়েদা এক বিবৃতিতে কাশ্মীরকে মুক্ত করার ডাক দিয়েছে । তবে সেই পথে আপাতত আল কায়েদার সঙ্গে থাকছে না তালিবান ।

কাবুলিওয়ালার দেশের দিকে নজর এখন গোটা বিশ্বের। নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যেই আফগান মুলুক ছেড়েছে মার্কিন সেনা। আফগানিস্তানে এখন তালিবান রাজ। তালিবদের সঙ্গে হাতে হাত মিলিয়ে কাজ করার বার্তা দিয়েছে বেজিং, ইসলামাবাদ। আর এতেই সিঁদুরে মেঘ দেখছে দিল্লি। তালিবান – চিন – পাকিস্তানের ত্রিশক্তি জোট একবার তৈরি হয়ে গেলে, কাশ্মীর নিয়ে ভারতের চিন্তা আরও বাড়বে। তবে তালিবান নেতা আনাস হাক্কানি ভারতের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখার বার্তা দিয়েছেন। আর এই বার্তা কিছুটা হলেও স্বস্তিতে রাখছে দিল্লিকে।

শুধু বেজিং বা ইসলামাবাদই নয়, বুধবার আল-কায়দা জঙ্গিগোষ্ঠীও তালিবানকে আফগানিস্তান দখলের অভিনন্দন জানিয়েছে। মার্কিন সেনা কাবুল বিমানবন্দর ছেড়ে যাওয়ার চব্বিশ ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই আল কায়দা এক বিবৃতি জারি করেছে। সেখানে তালিবানকে আফগানিস্তান দখলের অভিবাদন জানানো পাশাপাশি বেশ কিছু মুসলিম অধ্যুষিত এলাকাকে ‘শত্রুদের’ থেকে মুক্ত করার ডাক দিয়েছে আল কায়েদা। তালিকায় প্যালেস্টাইন, লেভান্ত, সোমালিয়া, ইয়েমেনের পাশাপাশি কাশ্মীরেরও নাম রয়েছে।

কাশ্মীর ইস্যুতে পাকিস্তান বরাবর নাক গলিয়ে আসছে। কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতে, চিনেরও পরোক্ষ মদত রয়েছে পাকিস্তানের প্রতি। আর এই পরিস্থিতিতে তালিবানও যদি কাশ্মীর প্রসঙ্গে ইসলামাবাদের দেখানো পথে হাঁটতে শুরু করে, তাহলে ভারতের জন্য চাপ আরও বাড়বে। আল কায়েদা এবং পাক অধ্যুষিত কাশ্মীরে সক্রিয় জঙ্গি গোষ্ঠীগুলির জন্য কাজ আরও সহজ হবে।

যদিও তালিবানের তরফে এখনও পর্যন্ত ভারত সম্পর্ক নেতিবাচক কোনও বার্তা আসেনি। বরং ভারতের সঙ্গে আগের মতো সুসম্পর্ক বজায় রেখেই এগোতে চাইছে তালিবান। তালিবান নেতা আনাস হাক্কানি জানিয়েছেন, “কাশ্মীর আমাদের অংশ নয়। আর অন্যের বিষয়ে নাক গলানো আমাদের নীতি বিরুদ্ধ। আমরা তো আমাদের নীতির বিরুদ্ধে যেতে পারি না। সুতরাং আমরা কোনওভাবে নাক গলাবো না।”

২০০১ সাল থেকে প্রথমে হামিদ কারজ়াই এবং তারপর আশরাফ গনি, উভয়ের আমলেই কাবুলের সঙ্গে বেশ ভালো কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিল দিল্লির। সেখানকার বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজে অর্থ বিনিয়োগ করেছে ভারত। কিন্তু সাম্প্রতিক ঘটনা প্রবাহের পর এখন ভারত – আফগানিস্তান সম্পর্ক কোন দিকে মোড় নেবে, তা এখনও দোলাচলে। তবে আনাস হাক্কানি বলছেন, “দিল্লি দুই দশক ধরে তালিবান বিরোধী গোষ্ঠীকে সমর্থন করে আসলেও, তালিবান ভারতের সঙ্গে সুসম্পর্ক চায়। যাবতীয় মতপার্থক্য দূরে সরিয়ে রেখে ভারতের সঙ্গে বন্ধুত্ব গড়তে চায় তালিবান।”

এদিকে রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে বর্তমানে সভাপতিত্ব করছে ভারত। সোমবার আফগানিস্তান পরিস্থিতি নিয়ে নিরাপত্তা পরিষদে প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে। সেখানে স্পষ্ট করে বলা হয়েছে, আফগানিস্তানের মাটিকে জঙ্গিদের আশ্রয় দেওয়ার জন্য অথবা অন্য দেশকে ভয় দেখানোর জন্য ব্যবহার করা যাবে না।

তবে তালিবানের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক আগামী দিনে কোন দিকে মোড় নেবে না এখনও স্পষ্ট নয়। বিশেষ করে দিল্লি এখনও বিষয়টি নিয়ে ধীরে চলো নীতিতেই রয়েছে। ১৯৯৬ সাল থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত তালিবান দেখিয়ে দিয়েছে, তারা কতটা ভয়ঙ্কর হতে পারে। এখন তালিবান নেতাদের মুখে এই মিষ্টি সুর, আদৌ কতটা কার্যকর হবে তা নিয়েও ধন্দে রয়েছে কূটনৈতিক মহল। আরও পড়ুন : কাতার থেকে এসেছেন বিশেষজ্ঞরা, বিমানবন্দর সচল করতে উদ্যোগী তালিবান, জারি বিজয় উৎসবও!