কাবুল নয়, কান্দাহারই হতে পারে আফগানিস্তানের রাজধানী
Taliban : আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুল থেকে সরিয়ে কান্দাহারে নিয়ে যাওয়া হলে, আখুন্দজ়াদার জন্য ঘরে বসে নজরদারি করার কাজটা আরও সহজ হবে।
কাবুল : আর বেশি দেরি করতে চাইছে না তালিবান। দ্রুত সরকার গঠনের প্রক্রিয়া শুরু করা হতে পারে। সূত্রের খবর, ইরানের মডেলে তৈরি করা হতে পারে তালিবান সরকার। সুপ্রিম লিডার হতে পারেন তালিব নেতা হাইবাতুল্লাহ আখুন্দজ়াদা। এখনও পর্যন্ত যা খবর, তাতে সরকারের প্রধান হতে পারেন আব্দুল গনি বরাদর। মোট ২৬ জন সদস্যকে নিয়ে তৈরি হবে নতুন মন্ত্রিসভা। শুধু তাই নয়, রাজধানীও কাবুল থেকে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। সূত্রের খবর, কাবুলের বদলে কান্দাহারে হতে চলেছে নতুন রাজধানী । বদলে ফেলা হতে পারে জাতীয় পতাকা, সংবিধানও । নতুন সরকারের সেনাবাহিনীতে সামিল হবে তালিব যোদ্ধাদের ।
কান্দাহার বরাবরই তালিবানের পছন্দের জায়গা। তালিবদের শক্ত ঘাঁটি কান্দাহার। এর আগে যখন আফগানিস্তানে তালিবানি শাসন ছিল, সেই সময়ও ইসলামিক এমিরেটস অব আফগানিস্তানের রাজধানী ছিল কান্দাহার। আর আফগানিস্তান যখন আবারও তালিবানের দখলে, তখন আবার তাদের রাজধানী কাবুল থেকে সরিয়ে কান্দাহারে নিয়ে যাওয়ার প্রবল সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।
তালিবানের সুপ্রিম লিডার হাইবাতুল্লাহ আখুন্দজ়াদাকে এখনও পর্যন্ত প্রকাশ্যে সেভাবে দেখা যায়নি। তবে কানাঘুষো শোনা যায়, তিনি নাকি কান্দাহারেই রয়েছেন। কান্দাহারে বসে থেকেই তালিব যোদ্ধাদের প্রতিটি গতিবিধির উপর নজর রাখছেন তিনি। মোল্লা ওমরের মতো আখুন্দজ়াদাও আড়ালে থেকেই গোটা বিষয়টি পরিচালনা করছেন বলে মনে করছেন অনেকে। আর যদি তাই হয়, তাহলে রাজধানী কাবুল থেকে সরিয়ে কান্দাহারে নিয়ে যাওয়া হলে, আখুন্দজ়াদার জন্য ঘরে বসে নজরদারি করার কাজটা আরও সহজ হবে।
তালিবান আফগানিস্তানের দখল নেওয়ার পর, যে শীর্ষস্তরের বৈঠকগুলি হয়েছে, তার বেশিরভাগই হয়েছে কান্দাহারে বসে। শনিবার থেকে সোমবার পর্যন্ত টানা তিন দিন ধরে তালিবান নেতারা কান্দাহারে বৈঠক করেছেন সরকার গঠনের প্রক্রিয়া নিয়ে। তালিব মুখপাত্র জ়াবিহুল্লাহ মুজাহিদিন এক টুইটে জানিয়েছেন, শেখ আল-হাদিত হিবাউল্লাহকে নেতৃত্বে সেই বৈঠক হয়েছে। বৈঠকে আফগানিস্তানের বর্তমান রাজনৈতিক, প্রতিরক্ষা ও সামাজিক ইস্যুগুলি নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
টোলো নিউজ়ের এক প্রতিবেদনে প্রকাশিত তালিবান কালচারাল কমিশনের সদস্য আনামুল্লা সামানগনির বক্তব্য অনুযায়ী, আখুন্দজ়াদা নতুন সরকারের সর্বাধিপতি হতে চলেছেন। তিনি জানিয়েছেন, “এই বিষয়ে কোনও সন্দেহের অবকাশ নেই । আখুন্দজ়াদা অবশ্যই সরকারে থাকবেন । তিনিই নতুন সরকারকে পরিচালনা করবেন। এই বিষয়ে কোনও দ্বিমত থাকতে পারে না।”
আর এখানে প্রতিটি ক্ষেত্রে দুইয়ে দুইয়ে চার করলে দেখা যাচ্ছে, কাবুল থেকে কান্দাহারে রাজধানী সরিয়ে নিয়ে গেলে প্রতিটি ক্ষেত্রেই লাভবান হতে চলেছে তালিবানরা। প্রথমত তালিবদের চেনা ঘাঁটি, দ্বিতীয়ত আখুন্দজ়াদা নিজে রয়েছেন কান্দাহারে। চার দেওয়ালের আড়ালে বসেই যদি আখুন্দজ়াদাকে সরকার পরিচালনা করতে হয়, তাহলে কান্দাহারের থেকে ভাল আর কি হতে পারে! আরও পড়ুন : ইরান মডেলের অনুকরণে মন্ত্রিসভা, শীর্ষে থাকবেন ‘সুপ্রিম লিডার’, তৈরি তালিব সরকারের ব্লু-প্রিন্ট