সিডনি: ‘নিউক্লিয়ার’ পরিবার যতই ব্যপ্তি বাড়াক না কেন, দাদু-ঠাকুমার সঙ্গে সম্পর্কের স্মৃতি সবার কাছেই সুখকর। পড়ায় ফাঁকি-আদর-আবদার-গল্প শোনার সে যেন এক স্বর্গ! আর নাতি-নাতনির সঙ্গে শৈশবে পাড়ি দেওয়ার আনন্দ তরতাজা করে তোলে বয়স্ক মানুষদেরও। কিন্তু কেমন হবে যদি একটা আস্ত শহরে কোনও নাতি-নাতনি না থাকে? ধরুন সেখানে শুধুই বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের বাস। ছেলে-মেয়েই খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না, নাতি-নাতনি তো দূরের কথা। না, এ কোনও কল্পবিজ্ঞানের গল্প নয়, যে পৃথিবীতে আমাদের বাস, সেখানেই এমন পরিস্থিতির সাক্ষী হতে চলেছে সাধারণ মানুষ।
সম্প্রতি এক ‘প্রোডাক্টিভিটি কমিশন’ এমনই রিপোর্ট প্রকাশ করেছে। যে শহর নিয়ে এমন চাঞ্চল্যকর রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়েছে সেটি হল অস্ট্রেলিয়ার সিডনি। সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, ২০১৬ থেকে ২০২১ সালের মধ্যে ওই শহরে ৩০ থেকে ৪০ বছর বয়সীদের যা সংখ্যা ছিল, তার দ্বিগুণ শহর ছেড়েছে ইতিমধ্যেই। সুতরাং বোঝাই যাচ্ছে, ওই শহরে যুবক-যুবতীর সংখ্যা কীভাবে কমছে। সংখ্যাটা এতটাই কমে যেতে পারে যে একটা প্রজন্মই হয়ত আর খুঁজে পাওয়া যাবে না সেখানে।
নিউ সাউথ ওয়েলস প্রোডাক্টিভিটি কমিশনের গবেষণায় উঠে এসেছে এই তথ্য। প্রোডাক্টিভিটি কমিশনার পিটার অ্যাকটিস্ট্র্যাট জানিয়েছেন, যদি এখনই কোনও পদক্ষেপ না করা হয়, তাহলে সিডনি এক পৌত্র-বিহীন শহরে পর্যবসিত হবে।
এমন পরিস্থিতি কারণ কী? আসলে দিনে দিনে সিডনি শহরে খরচের বহর বাড়ছে। থাকা-খাওয়ার খরচ জোগাতে হিমশিম খাচ্ছেন যুবক-যুবতীরা। বাড়ি কেনা বা ভাড়া নেওয়ার ক্ষমতাই হচ্ছে না অনেকের। বসবাস করতে হচ্ছে শহর থেকে অনেক দূরে। যাঁদের উপার্জন তুলনামূলকভাবে কম, করের বোঝা নিয়ে সংসার চালানো দায় হয়ে উঠছে তাঁদের পক্ষে। জানা যাচ্ছে, ওই শহরে বাড়ির সংখ্যাও এতটাই কম যে দাম ক্রমশ বেড়ে যাচ্ছে। অবিলম্বে নতুন বাড়ি তৈরি না হলে বাড়বে এই সমস্যা। তাই সহজ উপায় হিসেবে শহর ছেড়ে চলে যাচ্ছেন অনেকেই।
পিটার অ্যাকটিস্ট্র্যাট মনে করছেন, নতুন বাড়ি বা ফ্ল্যাট তৈরি হলে একসঙ্গে বসবাস করতে পারবেন পরিবারের সবাই। সন্তান-সন্ততি নিয়ে থাকবেন নাগরিকেরা।