ওয়াশিংটন: আজ, সোমবার হোয়াইট হাউসে ডোনাল্ড ট্রাম্পের গৃহপ্রবেশ। তার আগে গতকাল তিনি শি জিনপিংকে ফোন করেন। পরে, ট্রাম্প নিজেই তাঁর নিজস্ব সোশ্যাল মিডিয়া ট্রুথে লেখেন দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য, বিশ্বশান্তি ও নিরাপত্তা-সহ নানা বিষয়ে আমাদের কথা হয়েছে। আমার বিশ্বাস আগামীদিনে আমেরিকা-চিন মিলে
দুনিয়ার অনেক সমস্যার সমাধান করবে। ট্রাম্প তাঁর শপথে জিনপিংকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। চিনের প্রেসিডেন্ট নিজে না গিয়ে ভাইস-প্রেসিডেন্টকে পাঠাচ্ছেন। তারপর, ট্রাম্পের এই ফোন!
কয়েকদিন আগেই তিনি আবার বলেছিলেন যে আমেরিকা ও চিন যদি একসঙ্গে কাজ করতে পারে তাহলে বিশ্বের বহু সমস্যা ঠিক হয়ে যাবে। প্রথম দফায় যে ট্রাম্পকে দেখা গিয়েছিল, তিনি একেবারে চিনের ওপর খড়্গহস্ত ছিলেন। সেই তাঁকেই দ্বিতীয় দফায় দেখে মনে হচ্ছে, চিন নিয়ে এ বার তিনি যেন বেশ নরম। কেন নরম, তা নিয়ে এখনই কিছু বলা দায়।
আগামী ১ দশকের মধ্যে আমেরিকা চালাবে চিন। বলছেন ট্রাম্প প্রশাসনে আমেরিকার নতুন বিদেশসচিব মার্কো রুবিও। দায়িত্ব নেওয়ার আগে নিয়ম মেনে তিনি মার্কিন সেনেটের ফরেন রিলেশন কমিটির মুখোমুখি হন। সেখানেই রুবিও বলেছেন, “যেভাবে চলছে তাতে দশ বছরের মধ্যে চিনের ইচ্ছেয় আমাদের চলতে হবে। রুবিওর ব্যাখ্যা, ওষুধ, খনিজ সম্পদ-সহ এন্টায়ার গ্লোবাল সাপ্লাই চেনের দখল চিনের হাতে চলে গেছে। তাই অদূর ভবিষ্যতে মার্কিন জনগণের স্বাস্থ্য থেকে জীবনযাত্রার মান – এসবই চিন ঠিক করে দেবে”।
এতদিন শোনা যেত, দুনিয়া চালাচ্ছে আমেরিকা। এখন শুনতে হচ্ছে চিন চালাবে আমেরিকা। সেটাও আবার বলছেন হবু মার্কিন বিদেশসচিব। ব্রিগেডিয়ার জেনারেল র্যাঙ্কের অফিসার ডুগ উইকার্ট, আমেরিকার এডওয়ার্ড এয়ার বেসের দায়িত্বে।
এই এডওয়ার্ড ও এগলিন আমেরিকার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দুই বায়ুসেনা ঘাঁটি। ক্যালিফোর্নিয়ার এডওয়ার্ড বেস থেকে স্যাম অ্যাঙ্কল প্যাসিফিকের ওপর নজর রাখেন। আর ফ্লোরিডার এগলিন বেস থেকে তিনি নজর রাখেন আটলান্টিকের ওপর। তো এই এডওয়ার্ড বেসের কমান্ডার উইকার্ট বলছেন, নৌ-শক্তিতে চিন আমাদের আগেই টেক্কা দিয়েছে। ২ বছরের মধ্যে চিন আকাশেও টপকে ধরাছোঁয়ার বাইরে বেরিয়ে যাবে।
বিশ্বের প্রথম দেশ হিসাবে ষষ্ঠ প্রজন্মের যুদ্ধবিমান তৈরি করে দুনিয়াকে তাক লাগিয়ে দিয়েছে চিন। মার্কিন বায়ুসেনা কর্তা বলছেন যে গতিতে লালফৌজের মর্ডানাইজেশন হচ্ছে তা “আনপ্রিসিডেন্টেড” এবং আমেরিকার তুলনায় “ফার আউটপেসিং”। উইকার্টের কথায় আমেরিকার প্রতি তিনটে যুদ্ধবিমানের জন্যে চিনের রয়েছে পাঁচটা যুদ্ধবিমান। আমেরিকার একটা সামরিক নজরদারি বিমানের জন্যে চিনের রয়েছে তিনটে। আমেরিকার একটা সাবমেরিন থাকলে চিনের ছটা সাবমেরিন। প্যাসিফিকে আমেরিকা যদি একটা যুদ্ধবিমান ওড়ায় তাহলে চিন
বারোটা যুদ্ধবিমান ওড়ানোর ক্ষমতা রাখে। বোঝাই যাচ্ছে চিন ইস্যুতে ট্রাম্পের সেই রাগের ভাব কেন মিইয়ে গিয়েছে। বায়ুসেনার মতো লালফৌজের নৌসেনাও রোজ যেভাবে শক্তি বাড়াচ্ছে তাতে সিঁদুরে মেঘ দেখছে পশ্চিমী দুনিয়া।