আস্ত গ্রিনল্যান্ডটাই কিনে নিতে চাইছেন ট্রাম্প! কত খরচ পড়বে?

ঈপ্সা চ্যাটার্জী |

Jan 20, 2025 | 2:38 PM

Donald Trump: ১৮০৩ সালে ফ্রান্সের কাছ থেকে লুইজিয়ানা কিনেছিল আমেরিকা। ১৮৬৭ সালে রাশিয়ার কাছ থেকে আলাস্কা কেনে তারা। ১৯১৭ সালে ডেনমার্কের থেকে ভার্জিন দ্বীপপুঞ্জ কিনেছিল ওয়াশিংটন। গ্রিনল্যান্ডের আয়তন এগুলোর চেয়ে অনেক অনেক বেশি।

আস্ত গ্রিনল্যান্ডটাই কিনে নিতে চাইছেন ট্রাম্প! কত খরচ পড়বে?
গ্রিনল্যান্ড কিনে নেবেন ডোনাল্ড ট্রাম্প?
Image Credit source: PTI

Follow Us

ওয়াশিংটন: ডোনাল্ড ট্রাম্প আস্ত গ্রিনল্যান্ড দ্বীপটাকেই কিনে ফেলতে চাইছেন। এক দেশের প্রেসিডেন্ট অন্য দেশ কিনে ফেলতে চাইছেন, এমনটা তো সচরাচর শোনা যায় না। তারপর ট্রাম্প আবার ঠারেঠোরে এও বলেছেন যে সোজা আঙুলে ঘি না উঠলে আঙুল বাঁকাতে তিনি জানেন।

ট্রাম্প হোয়াইট হাউসে পা রাখার আগেই মার্কিন কংগ্রেসে চলে এলো বিল। বিলের নামটাও বেশ ইন্টারেস্টিং। রিপাবলিকানদের নির্বাচনী স্লোগানের সঙ্গে মিল রেখেই গ্রিনল্যান্ড বিলের নাম দেওয়া হয়েছে “মেক গ্রিনল্যান্ড গ্রেট এগেন অ্যাক্ট”। হাউসে এক রিপাবলিকান ল’মেকার এই বিল পেশ করেছেন। আরও ১০ জন হাউস মেম্বার বিল সমর্থন করেছেন। যাতে বলা আছে, প্রেসিডেন্টকে গ্রিনল্যান্ড কেনার জন্য কিংডম অফ ডেনমার্কের সঙ্গে কথা বলার অনুমতি দিচ্ছে কংগ্রেস।

গ্রিনল্যান্ড ডিলের জন্য যে ছাড়পত্রটা ট্রাম্পের কাছে জরুরি। কারণ, মার্কিন আইন অনুযায়ী কংগ্রেসের ছাড়পত্র পেলে তবেই প্রেসিডেন্ট এ বিষয়ে অফিসিয়ালি এগোতে পারেন। মার্কিন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে এই মুহূর্তে হাউস ও সেনেটের যা পরিস্থিতি তাতে রিপাবলিকানদের গ্রিনল্যান্ড বিল পাস করিয়ে নিতে সমস্যা হবে না। এবার প্রশ্ন হল গ্রিনল্যান্ড কিনতে ট্রাম্পের কত খরচ হতে পারে। গ্রিনল্যান্ড চাইলে কি ডেনমার্কের সায় ছাড়াই আমেরিকার সঙ্গে জুড়ে যেতে পারে?

দ্বিতীয় প্রশ্নের উত্তর হল, হ্যাঁ পারে। কারণ, গ্রিনল্যান্ড ডেনমার্কের অধীনে থাকলেও স্বশাসিত এলাকা। তাদের আলাদা প্রধানমন্ত্রীও আছেন। গ্রিনল্যান্ড চাইলে নিজেদের দেশে একটা রেফারেন্ডাম করিয়ে আমেরিকার নয়া প্রদেশ হয়ে যেতে পারে। ডেনমার্ক আটকাতে পারবে না। তবে, এজন্য ডেনমার্ককে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। সেই ক্ষতিপূরণ কত, এইনিয়েও এখন আমেরিকায় তুমুল চর্চা চলছে।

এর আগে ১৮০৩ সালে ফ্রান্সের কাছ থেকে লুইজিয়ানা কিনেছিল আমেরিকা। ১৮৬৭ সালে রাশিয়ার কাছ থেকে আলাস্কা কেনে তারা। ১৯১৭ সালে ডেনমার্কের থেকে ভার্জিন দ্বীপপুঞ্জ কিনেছিল ওয়াশিংটন। গ্রিনল্যান্ডের আয়তন এগুলোর চেয়ে অনেক অনেক বেশি।

সবকিছু হিসাব করে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, গ্রিনল্যান্ড কিনতে ট্রাম্পের প্রায় ২৫ কোটি ডলার খরচ হতে পারে। আবার এই জল্পনাও তৈরি হয়েছে যে ট্রাম্প হয়ত এত খরচ করে এইসব কেনাকাটার মধ্যে যাবেন না। সেনা পাঠিয়ে গ্রিনল্যান্ড দখল করে নেবেন। কারণ, গত সপ্তাহেই তিনি সংবাদমাধ্যমের প্রশ্নের উত্তরে বলেন, আমেরিকা কীভাবে গ্রিনল্যান্ডের দখল পাবে, সেটা আমি এখনই বলতে পারছি না। তবে, এই গ্যারান্টিও দিতে পারছি না যে এই কাজে মার্কিন সেনাকে ব্যবহার করা হবে না।

গ্রিনল্যান্ড আমেরিকায় চলে যাওয়া মানে সরাসরি ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের জমি বেদখল হয়ে যাওয়া। ফলে, জার্মানি-ফ্রান্স ইতিমধ্যেই ট্রাম্পকে একহাত নিয়েছে। তারা দরকারে প্রতিরোধের কথাও বলেছে। ফলে হঠাত্‍ করে কোনও যুদ্ধ তৈরি হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। সেক্ষেত্রে আবার ন্যাটোর সঙ্গে ন্যাটোর লড়াই লেগে যাবে।

আরেকটা চিন্তার কথা হল, সকলের কাছে এটা পরিষ্কার যে খনিজের অফুরান উত্‍‍সের জন্যই গ্রিনল্যান্ডে চোখ পড়েছে ট্রাম্পের। গ্রিনল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী মুট এগেডে বলেছেন যে তিনি আমেরিকার সঙ্গে মাইনিং নিয়ে কথা বলতে রাজি। আমেরিকার প্রদেশ বনে যাওয়া নিয়ে তিনি কিছু বলেননি। একেবারে আর্কটিক অঞ্চলে যদি একবার বড় আকারে খনি খোঁড়া শুরু হয় তাহলে পরিবেশের বারোটা বেজে যাবে। বিশেষ করে দক্ষিণ মেরুতে যেখানে এমনিতেই হুহু করে বরফ গলছে। এবার উত্তরেও সেটা শুরু হলে পৃথিবী হয়ত আর সামাল দিতে পারবে না।

Next Article