নয়া দিল্লি: করোনার ধাক্কা কাটিয়ে ধীরে ধীরে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে দেশের রিয়েল এস্টেট শিল্প (Real Estate Industry)। তবে পুরনো অবস্থান ফিরে পেতে প্রয়োজন কেন্দ্রের সাহায্যের, সেই কারণেই কেন্দ্রীয় বাজেটের (Union Budget 2022) দিকেই তাকিয়ে রয়েছে রিয়েল এস্টেট শিল্প। দেশের আর্থিক প্রবৃদ্ধি বা জিডিপি(GDP)-র একটি বড় অংশই আসে রিয়েল এস্টেট শিল্প ক্ষেত্রের সাহায্যে। অর্থনীতি থেকে শ্রম-একাধিক ক্ষেত্রও নির্ভরশীল রিয়েল এস্টেট শিল্পের উপরই। সেই কারণেই বাজেট থেকে প্রত্যাশাও রয়েছে অনেক।
২০২২ সালের বাজেট থেকে রিয়েল এস্টেট শিল্প ক্ষেত্রের অন্যতম প্রত্যাশা হল আবাসিক আবাসনের ক্ষেত্রে আয়কর আইনের সংশোধন। আয়কর আইন ১৯৬১ এর ধারা ২৪ (বি) এর অধীনে ছাড় হিসাবে প্রদত্ত সুদের হার বাড়ানো। বর্তমানে এই ছাড়ের উর্ধ্বসীমা ২ লাখ টাকা, কিন্তু রিয়েল এস্টেট শিল্প ক্ষেত্রের দাবি, এই সীমাকেই বাড়িয় ৫ লক্ষ টাকা করে দেওয়া হোক।
রিয়েল এস্টেট ব্য়বসায়ীদের কথায়, বর্তমান সময়ে বাড়ি কেবল বাড়িই নয়, করোনা সংক্রমণের কারণে তা একইসঙ্গে হাসপাতাল, স্কুল ও অফিসেও পরিণত হয়েছে। বর্তমানে মানুষ আরও বেশি করে নিজস্ব বাড়ির গুরুত্ব উপলব্ধি করছেন। সেই কারণেই বাড়ির চাহিদাও বৃদ্ধি পাওয়া স্বাভাবিক। তবে বিভিন্ন নিয়ম ও করের মারপ্য়াঁচে অনেকেই ইচ্ছা থাকলেও বাড়ি কিনতে পারেন না, সেই কারণেই কেন্দ্রের উচিত এই বিষয়গুলির দিকে নজর দেওয়া ও ছাড় ঘোষণা করা উচিত।
আরকেটি অন্যতম দাবি হল, হাউস রেন্ট অ্যালাওয়েন্স বা এইচআরএ বর্তমান হার থেকে বাড়িয়ে বেতনের ৫০ শতাংশ (যদি মেট্রো শহরে বসবাস করেন) বা ৪০ শতাংশ (অন্য কোনও শহরে বসবাস করলে) করে দেওয়া হোক। বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে বিভিন্ন সংস্থা যে হাইব্রিড কর্ম সংস্কৃতির প্রচার চালাচ্ছে, তাতে এইচআরএ বৃদ্ধি করলে, তা কর্মীদের পক্ষেই আরও সহায়ক হবে।
কম খরচে বাড়ির জনপ্রিয়তা বাড়লেও, এই শিল্প ক্ষেত্রের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন যারা, তাদের দাবি ৪৫ লাখের উর্ধ্বসীমা ও ৬০ মিটারের কার্পেট এরিয়ার সংজ্ঞা পর্যালোচনা করা উচিত। এই ক্ষেত্রে আর্থিক সীমা বাড়িয়ে ১ কোটি টাকা করার দাবি জানিয়েছেন তারা।
বাড়ির ঋণের ক্ষেত্রেও টাকা জমা দেওয়ার সময় বাড়ানোর আবেদনও জানানো হয়েছে। বর্তমানে গৃহঋণ মেটানোর মেয়াদ ২০ বছর, বিশেষ ক্ষেত্রে ৩০ বছর (ঋণের মূল্য়ের উপর নির্ভর করে) অবধি হয়। ইন্ডিয়ান ব্যাঙ্ক অ্যাসোসিয়েশনের সঙ্গে বৈঠক করেই ঋণের মেয়াদ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয় রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া। এছাড়া নির্মাণকারী সংস্থাগুলির তরফে তৈরি হওয়া বাড়ি বা অ্যাপার্টমেন্টের ক্ষেত্রে জিএসটিতে ছাড়ের দাবিও করা হয়েছে। তবে কেন্দ্রীয় বাজেটে এই বিষয়টি বিবেচনা করা হবে কিনা, সে বিষয়ে কোনও নিশ্চয়তা নেই।
বর্তমানে আয়কর আইনের ৮০সি ধারা অনুযায়ী, গৃহ ঋণের উপর করে কোনও প্রকার ছাড় বা সুযোগ সুবিধা দেওয়া হয় না। এরফলে করদাতাদের উপর অতিরিক্ত করের বোঝা চেপে যায়। তার প্রভাব বাড়ি তৈরি বা কেনার সিদ্ধান্তের উপরও পড়ে। যদি গৃহ ঋণের ক্ষেত্রে করের উপর কিছু ছাড় দেওয়া হয়, তবে ঋণ গ্রহীতাদের সিদ্ধান্তেও তার প্রভাব পড়তে পারে বলেই দাবি।
এছাড়া রিয়েল এস্টেট সেক্টরের তরফে ন্য়াশনাল আইডেনটিটি কার্ডের দাবিও জানানো হতে পারে। এই কার্ডের বৈধতা দেশজুড়েই হওয়ায় কার্ডের মালিক যদি কর্মক্ষেত্র পরিবর্তন করেন, সেক্ষেত্রে তার দক্ষতা ও কাজের অভিজ্ঞতা আপনাআপনিই নথিভুক্ত হয়ে যাবে। তবে এই কার্ড তৈরির জন্য যে বিপুল খরচ রয়েছে, তা কে বহন করবে, সেই বিষয় নিয়েও প্রশ্ন রয়েই গিয়েছে।
আরও পড়ুন: Budget 2022: ওমিক্রন কাঁটায় বাতিল হালুয়া বিতরণ, মিষ্টিমুখ করেই ‘বন্দি’ হলেন কর্মীরা