নয়া দিল্লি: বাজেট (Union Budget 2022) আসছে, বাড়ছে সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রের সাধারণ মানুষদের প্রত্যাশাও। আগামী ১ ফেব্রুয়ারিই ২০২২-২৩ অর্থবর্ষের জন্য কেন্দ্রীয় বাজেট পেশ করতে চলেছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন (Nirmala Sitharaman)। এবারের বাজেট ঘিরে কার কী প্রত্যাশ্যা রয়েছে, তা নিয়ে ইতিমধ্যেই আলোচনা শুরু হয়ে গিয়েছে। দেশের করদাতারা (Tax Payers) কী আশা করছেন এই নতুন বাজেট থেকে?
করোনা অতিমারির কারণে দেশ তথা বিশ্বজুড়ে যে টালমাটাল আর্থিক অবস্থা তৈরি হয়েছে, তা সামাল দেওয়াই সরকারের প্রধান লক্ষ্য। বিভিন্ন ক্ষেত্রে যথাসম্ভব ছাড় দিয়ে, সাধারণের ক্রয় ক্ষমতাকে বাড়িয়ে দেশের অর্থনীতিকে চাঙ্গা করে তোলাই লক্ষ্য। আর এই লক্ষ্যপূরণে দেশের আয়করদাতারা সরকারের কাছ থেকে বিশেষ ছাড়ের আশাই করছেন। গত বাজেটে আয়করের ক্ষেত্রে বিশেষ ছাড় দেওয়া হয়নি, তাই এবারের বাজেটে আয়করদাতাদের আশা বিশেষ কিছু ক্ষেত্রে ছাড়, যাতে তাদের হাতে অতিরিক্ত কিছু টাকা থাকে খরচ করার জন্য।
করোনা সংক্রমণের জেরে আমাদের ব্যক্তিগত ও কর্মজীবনে ব্যপক পরিবর্তন এসেছে। একদিকে যেমন চিকিৎসা ক্ষেত্রে খরচ বেড়েছে, অন্যদিকে, বাড়ি থেকে কাজ বা ওয়ার্ক ফ্রম হোমের ঠেলায় সাধারণ কর্মীদের পকেটেও অতিরিক্ত চাপ পড়েছে কিছু ক্ষেত্রে। খরচ বাড়ছে ইন্টারনেট, টেলিফোন ও বিদ্যুৎ ব্যবহারে, যা এতদিন সংস্থাকেই বহন করতে হত। এছাড়া উচ্চ পদস্থ কর্মচারীরা অনেকেই বাধ্য হয়ে বাড়িতেই ছোট অফিস বানিয়ে ফেলতে বাধ্য হয়েছেন, সেক্ষেত্রেও তাদের আসবাব থেকে নানা ইলেকট্রনিক পণ্য কিনতে গিয়ে ব্যপক খরচ হয়েছে। এই সমস্ত কারণেই আয়করদাতাদের আশা, কেন্দ্রের তরফে ওয়ার্ক ফ্রম হোমের ক্ষেত্রে বিশে, কোনও ভাতা ঘোষণা করা হবে, যা এই সমস্ত খরচকে বহন করবে। একইসঙ্গে করে ছাড়ের আশাও রাখছেন কর্মীরা।
করোনা সংক্রমণের জেরে চিকিৎসাক্ষেত্রে খরচ যেহেতু বেড়েই চলেছে, সেই কারণে স্ট্যান্ডার্ড ডিডাকশন, যা এককালীন বেতন থেকে কাটা হয় বিভিন্ন খরচ বহনের জন্য, তা ৫০ হাজার থেকে বাড়িয়ে বার্ষিক ১ লক্ষ টাকা করে দেওয়া হতে পারে। তবে এই অর্থ সংস্থা কর্মীদের চিকিৎসার জন্যই ব্য়বহার করবে।
প্রাক বাজেট সমীক্ষাতে দেখা গিয়েছে, বহু আয়করদাতারাই চান, সর্বোচ্চ আয়কর সীমা ৩০ শতাংশ থেকে কমিয়ে যেন ২৫ শতাংশ করে দেওয়া হয়। এছাড়াও সর্বোচ্চ করের হার ১০ লক্ষ টাকা থেকে বাড়িয়ে ২০ লক্ষ টাকা করার অনুরোধও করেছেন অনেক করদাতারা।
প্রাক বাজেট সমীক্ষায় আরও জানা গিয়েছে, আয়করের ক্ষেত্রে যে ছাড় দেওয়া হয়, তা আরও বৃদ্ধির আশাই করছেন করদাতারা। এতদিন অবধি সর্বোচ্চ ২.৫ লাখ টাকা আয়ের ক্ষেত্রে করে ছাড় মিলত। করোনাকালে তা ৫ লক্ষ টাকা করে দেওয়ার অনুরোধ জানানো হয়েছে। যদি করের ছাড়ের সীমা বাড়ানো হয়, তবেই অতিরিক্ত ছাড় থেকে একক ব্যক্তি উপকৃত হবে।
করোনা সংক্রমণের ভয়ঙ্কর রূপ সকলের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে, সঙ্কটের মুহুর্তে নগদ অর্থই বিশেষ সহায়তা করে। বহু ক্ষেত্রেই পরিবারের মেডিকেল ইনস্যুরেন্স বা বীমা অপর্যাপ্ত হওয়ায়, আয়করদাতাদের দাবি, মেডিক্লেম কভারেজের জন্য যেন বেতন থেকে অর্থ কাটার হার কমিয়ে দেওয়া হয়।
বর্তমানে এমন কোনও ক্ষেত্র নেই, যেখানে মেডিক্লেম বা বীমাহীন ব্যক্তিদের করোনা চিকিৎসার খরচ বহন করে। আয়কর থেকে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ যাতে করোনা চিকিৎসার জন্য বরাদ্দ হয়, এই আশাও করা হচ্ছে।