হেলসিঙ্কি: ঘরদোর ঝাড়পোঁছ করে আর কত টাকা রোজগার করা যায়? কিন্তু, যদি বলি সারা বিশ্ব জুড়ে বিনামূল্যে নোংরা ঘরদোর পরিষ্কার করেই ভাগ্য বদলে গিয়েছে এক মহিলার। মাত্র ৩০ বছর বয়সে কোটিপতি হয়ে গিয়েছেন। বিশ্বাস হচ্ছে না তো? এটাই ফিনল্যান্ডের ট্যাম্পেরের বাসিন্দা অরি কানানেনের কাহিনি। ব্রিটেন, সুইজারল্যান্ড, সুইডেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন জায়গায় গিয়ে, সম্পূর্ণ বিনামূল্যে নোংরা বাড়িঘর পরিষ্কার করে বেড়ান তিনি। আর এভাবেই মাত্র তিন বছরের মধ্যে এসেছে অপ্রত্যাশিত সাফল্য।
২০২০ সালে এই বাড়িঘর পরিষ্কার করার কাজ শুরু করেছিলেন অরি। সেই সময় কোভিড-১৯ মহামারি চলছে। অনেকেই বাড়িঘর পরিষ্কার রাখতে হিমশিম খেতেন। তাঁদের কাছে দেবদূতের মতো আবির্ভূত হয়েছিলেন অরি। সপ্তাহের প্রথম ছুটির দিনে বাড়ি বাড়ি গিয়ে, পরিষ্কার করা শুরু করেছিলেন তিনি। এমনিতে তিনি কাজ করতেন ক্লিনিং সুপারভাইজার হিসেবে। তার বাইরে, সাফাইয়ের নেশায় ছুটির দিনে বিনামূল্যে অন্যের ঘর পরিষ্কার করা শুরু করেছিলেন অরি। সেই বছরই তিনি নিয়মিত কাজ ছেড়ে নিজের ব্যবসা চালু করেছিলেন। তারপর থেকে আর তাঁকে পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি।
কিন্তু, বিনামূল্যে ঘরদোর পরিষ্কার করে, তাঁর আয় হয় কীভাবে? অরির আয়ের আসল উৎস হল সোশ্যাল মিডিয়া। তস্য নোংরা ঘরবাড়িতে গিয়ে তিনি তাঁর পরিচ্ছন্নতা বোধকে কাজে লাগিয়ে, সেগুলির চেহারা আমূল বদলে দেন। আর এই রূপান্তরের ভিডিয়ো তুলে আপলোড করেন বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে। ২০২০ সালেই তিনি প্রথম এই ধরনের ভিডিয়ো শেয়ার করা শুরু করেছিলেন। ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছিল সেগুলি। তারপর থেকে প্রচুর বিজ্ঞাপন, স্পনসর এসেছে। অরি জানিয়েছেন, বিজ্ঞাপন এবং স্পনসরশিপের দৌলতে, শুধুমাত্র তাঁর ইউটিউব চ্যানেল থেকেই ২০২২ সালে তাঁর আয় হয়েছে ৫ লক্ষ ইউরো, অর্থাৎ সাড়ে চার কোটি টাকারও বেশি! এছাড়া, টিকটকেও তাঁর ১ কোটির বেশি ফলোয়ার রয়েছে, ইনস্টাগ্রামে সাড়ে তিন কোটি।
অরি জানিয়েছেন, পরিষ্কার করাটা তার কাছে সবথেকে মজাদার বিষয়। তিনি এই কাজ শুধু পছন্দ করেন না, এর থেকে তিনি এক অদ্ভুত সুখ অনুভব করেন। যেন জীবনের উদ্দেশ্য পূরণ হচ্ছে। এখন তিনি নিজের একটি ক্লিনিং ক্রু-ও তৈরি করেছেন। বিপুল অর্থ উপার্জনের পরও, তাঁর পা কিন্তু রয়েছে মাটিতেই। তিনি বলেছেন,”ধুলোর একটা পুরু স্তর মুছে ফেলা অত্যন্ত সন্তোষজনক। আমার কাছে সবচেয়ে ভাল অনুভূতি। আমি এই অনুভূতির পিছনেই ছুটছি। তাই আমি সবসময় খুঁজি নোংরা ঘরবাড়ি।”