নয়া দিল্লি: দিনদিন সাইবার প্রতারণা বেড়েই চলেছে। সাইবার অপরাধীরা ওয়ান টাইম পাসওয়ার্ড বা ওটিপি দিয়ে সাধারণ মানুষকে প্রতারিত করছে। নানা অছিলায় ফোন করে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে ওটিপি হাতিয়ে নিয়ে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ফাঁকা করে দিচ্ছে। তবে প্রশ্নটা হল, এই ধরনের সাইবার প্রতারণায় কি পুরো দায়টাই গ্রাহকের? ব্যাঙ্কের কোনও দায়িত্বই নেই? সাধারণ মানুষের মনে জাগা এই সমস্ত প্রশ্নেরই উত্তর দিলেন সাইবার ক্রাইম বিশেষজ্ঞ অমিত দুবে।
টিভি৯ ডিজিটালের পডকাস্টে বিখ্যাত সাইবার ক্রাইম বিশেষজ্ঞ অমিত দুবে জানান, সাইবার অপরাধীরা যখন ওটিপির মাধ্যমে জালিয়াতি করে, তখন ব্যাঙ্ক থেকেই প্রথম ডেটা ব্রিচ হয়, গ্রাহকের তথ্য চুরি করে নেয়। সেই তথ্য অপরাধীদের হাতে থাকায়, জালিয়াতি বা প্রতারণা করা অনেক সহজ হয়ে যায় তাদের পক্ষে।
তবে এই ধরনের প্রতারণায় কি সব দায়ই গ্রাহকের? সাইবার বিশেষজ্ঞ অমিত দুবে জানিয়েছেন, এমনটা মোটেও নয়। রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার নির্দেশিকা অনুসারে, যদি ব্যাঙ্কের অবহেলার কারণে এমন ঘটনা ঘটে, তবে ব্যাঙ্ককে দায়ী করা হবে এবং ব্যাঙ্ক গ্রাহককে টাকা ফেরত দেবে।
বিগত কয়েক বছরে সাইবার অপরাধের ঘটনা ব্যাপক হারে বেড়েছে। এনসিআরবি তথ্য অনুযায়ী, কোভিডের আগে যেখানে প্রতিদিন ৫০০ থেকে ৭০০টি সাইবার অপরাধের মামলা দায়ের হত, তা এখন ৩০ থেকে ৪০ হাজারে পৌঁছেছে। অর্থাৎ সাইবার অপরাধীদের নেটওয়ার্ক দ্রুত বিস্তৃত হচ্ছে এবং সাধারণ মানুষ এর শিকার হচ্ছেন।
আপনি যদি সাইবার প্রতারণার শিকার হন, তবে প্রথমেই অভিযোগ দায়ের করা উচিত। সাইবার ক্রাইম পোর্টালে অভিযোগ করার পরও ৯৯ শতাংশ ক্ষেত্রে টাকা ফেরত পাওয়া যায় না।
আপনি যদি প্রতারিত হওয়ার আধ ঘন্টা বা ১ ঘন্টার মধ্যে অভিযোগ করেন, তবে আপনার টাকা ফেরত পাওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। এর জন্য ১৯৩০ নম্বর, যা সাইবার ক্রাইম হেল্পলাইন, সেখানে ফোন করে অভিযোগ জানাতে পারেন বা cybercrime.gov.in পোর্টালে অভিযোগ জানাতে পারেন।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের সাইবার ক্রাইম হেল্পলাইন যেকোনও সন্দেহজনক ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ৪৮ ঘন্টার জন্য ফ্রিজ করতে পারে। এতে প্রতারকদের চুরি করা অর্থ ব্লক করা যেতে পারে, যার ফলে অর্থ ফেরত পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।