বর্তমান যুগে কোনও মানুষই পুরোপুরি সুস্থ নয়। ওষুধের ওপর ভর করে বেঁচে থাকতে হয়। ৬০ বছর পেরিয়ে গিয়েছে অথচ ব্লাড সুগার বা প্রেসারের মধ্যে একটারও ওষুধ খান না, এরকম ব্যক্তি হয়ত খুব কমই দেখা যায়। মাসিক খরচের মধ্যে নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ এই ওষুধ কেনার জন্য সরিয়ে রাখতে হয়। এর সঙ্গে উপরি কোনও হঠাৎ অসুখ তো রয়েছেই। করোনার এর প্রবণতা আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে নামি-দামি ব্র্যান্ডের ওষুধের যা দাম তাতে সেই খরচ যোগাতে হিমশিম খেতে হয় সাধারণ মানুষকে। এবার সেই সব সাধারণ নাগরিকের জন্য সুরাহা নিয়ে আসল সরকার। কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে একটি অ্য়াপের সূচনা করা হয়েছে। এই অ্য়াপের নাম ‘ফার্মা সাহি দাম’। এই অ্যাপের ফলে ক্রেতাদের উপর থেকে ওষুধের দামের বোঝা কমতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
অ্যানড্রয়েড বা আইওএস- যেকোনও ফোনের প্লে স্টোর থেকেই কেন্দ্রীয় সরকারের এই অ্য়াপটি ডাউনলোড করা যাবে। ন্যাশনাল ফার্মাসিউটিক্যাল প্রাইসিং অথরিটি এই অ্যাপটি তৈরি করেছে। কোনও রোগ নিয়ে ডাক্তারের শরণাপন্ন হলে তাঁরা অনেকসময়ই বেশি দামের ব্র্যান্ডেড ওষুধের পরামর্শ দেন। যা কিনতে মধ্যবিত্তের পকেট একেবারে ফাঁকা হয়ে যায় তা বলা যেতেই পারে। এই অ্যাপ সেখানেই সমাধান সূত্র নিয়ে আসবে ক্রেতাদের কাছে। ডাক্তার যে ওষুধ লিখে দেবেন সেই একই কমপাউন্ডের কী কী জেনেরিক ওষুধ বাজারে রয়েছে তা এই অ্যাপ বলে দেবে। ফলে ব্র্যান্ডেড ওষুধের দামি হাতছানি থেকে মুক্তি পেয়ে একই কাজের জেনেরিক ওষুধেই সুস্থ হতে পারেন রোগীরা। সঙ্গে পকেটেরও কিছুটা স্বস্তি মেলে।
বিষয়টি আরেকটু বিস্তারিত বুঝে নেওয়া যাক। আপনার রোগের জন্য ডাক্তার কোনও একটি ব্র্যান্ডেড ওষুধ লিখলেন। আপনি এই অ্যাপে গিয়ে ওষুধের নাম টাইপ করতে পারেন। তারপর এই অ্যাপটি আপনাকে ব্র্যান্ডের ওষুধের সাশ্রয়ী মূল্যের বিকল্পগুলি দেখাবে। সেগুলি আপনি প্রেসক্রাইব করা ওষুধের পরিবর্তে নিতে পারেন। তাদের নাম ভিন্ন হতে পারে কবে ওষধি গুণ প্রেসিক্রিপশনে লেখা ওষুধের সমানই হবে। বিষয়টি উদাহরণ দিয়ে বোঝানো যাক। অ্যান্টিবায়োটিকের মধ্যে দেশে সবথেকে বেশি বিক্রি রয়েছে অগমেন্টিনের (Augmentin)। এই ব্র্যান্ডেড ওষুধের ১০ টি ট্যাবলেটের দাম ২০০ টাকা। তবে এর থেকে সস্তায় একই গুণসম্পন্ন ওষুধ আপনি এই অ্যাপে পেয়ে যাবেন। সেই বিকল্প ওষুধের ৬ টি ট্যাবলেটের দাম হয়ত ৫০ টাকা। দাম কম হলেও ওষধি গুণ কিন্তু একই। ফলে কেন্দ্রীয় সরকার এই অ্যাপ চালু করে মধ্যবিত্তদের রোগের চিকিৎসায় কিছুটা স্বস্তি নিয়ে এল। অন্তত এবার থেকে ওষুধের বিলে কিছুটা খরচ বাঁচানো যাবে।