নয়া দিল্লি: রাতে মোবাইল ঘাটতে ঘাটতে ঘুমিয়ে পড়েছিলেন, সকালে অফিস গিয়ে দেখলেন মোবাইলে চার্জ শেষ। এবার অফিস তোলপাড় করছেন চার্জারের খোঁজে। ঘুরতে গিয়েও হামেশাই এমন হয় যে মোবাইলে চার্জ শেষ হয়ে যাওয়ায় নতুন জায়গায় গিয়ে ছবি তুলতে পারছেন না বা পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছেন না। বর্তমানে মোবাইলে ৫ হাজার, ৮ হাজার এমএএইচের ব্যাটারি থাকলেও, তার ব্যাকআপ মেরেকেটে ওই দেড় থেকে দুই দিন। তারপর চার্জ দিতেই হবে। তবে শীঘ্রই এমন দিন আসতে চলেছে, যখন একবার মোবাইলে চার্জ দিলে অন্তত ৫০ বছর আর চার্জ দেওয়ার কথা ভাবতে হবে না।
ভুল লেখা হয়েছে ভাবছেন? একদমই না। ঠিকই বলা হচ্ছে। ৫০ বছর। এক চার্জেই মোবাইল চলবে ৫০ বছর পর্যন্ত। কীভাবে? এর জন্য তৈরি করা হচ্ছে এক বিশেষ ধরনের ব্যাটারি, যা সাধারণ লিথিয়াম আয়ন ব্যাটারির থেকে সম্পূর্ণ আলাদা। তেজস্ক্রিয় যৌগ নিকেল-৬৩ দিয়ে তৈরি এই ব্যাটারি এতটাই শক্তিধর হবে যে একবার চার্জ দিলেই আর কখনও প্রয়োজন পড়বে না চার্জ দেওয়ার।
এই ব্যাটারি তৈরি করছে চিনের একটি স্টার্টআপ সংস্থা, বেটাভোল্ট। লিথিয়াম ব্যাটারির বদলে তারা পারমাণবিক ব্যাটারি তৈরি করেছে, যার শক্তিতেই এত বছর ধরে ব্য়াটারি চলবে। জানা গিয়েছে, শক্তি রূপান্তরের জন্য ব্যবহার হয়েছে হিরের সেমিকন্ডাক্টর।
সংস্থার দাবি, বর্তমানে তাদের তৈরি ব্যাটারি ১০০ মাইক্রোওয়াট শক্তি উৎপন্ন করে ৩ ভোল্টে। আগামী বছরের মধ্যেই এই শক্তি বাড়িয়ে ১ ওয়াট করা হবে।
আকারেও লিথিয়াম ব্যাটারির তুলনায় অনেকটাই ছোট হবে এই ব্যাটারি। সর্বাধিক ১৫ মিলিমিটার পর্যন্ত দৈর্ঘ্য হতে পারে। এর সবথেকে বড় বিশেষত্ব হল, এই ব্যাটারি কখনও ফাটবে না বা আগুন ধরবে না। মাইনাস ৬০ ডিগ্রি থেকে ১২০ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত তাপ সহ্য করতে পারে এই ব্যাটারি।
কবে থেকে মোবাইলে এই ব্যাটারি ব্যবহার করা হবে, সে বিষয়ে কিছু না জানালেও, আগামী কয়েক বছরের মধ্যেই সমস্ত ধাপ পেরিয়ে বাজারে এই ব্যাটারি আনার পরিকল্পনা রয়েছে সংস্থার। আপাতত স্মার্টফোন ও ড্রোনেই এই ব্যাটারি ব্যবহার করার পরিকল্পনা রয়েছে সংস্থার। পরবর্তী সময়ে পেসমেকারেও এই ব্যাটারি ব্যবহার করা হতে পারে।